Advertisement
১১ মে ২০২৪

যন্ত্র-মেধা বোঝে না হিংসা, না খেলা 

প্রশ্ন উঠেছে, ১৭ মিনিটের আগে কেন এর প্রদর্শন বন্ধ করতে পারল না ফেসবুক। কেন সতর্ক করতে পারল না পুলিশকে।

যান্ত্রিক মেধা তথা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ভিত্তিতে তৈরি করা ‘অলগারিদম’ কেন চিনতে পারল না, কোথাও একটা এমন হত্যালীলা চলছে? ছবি: এপি।

যান্ত্রিক মেধা তথা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ভিত্তিতে তৈরি করা ‘অলগারিদম’ কেন চিনতে পারল না, কোথাও একটা এমন হত্যালীলা চলছে? ছবি: এপি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
ক্রাইস্টচার্চ শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৯ ০২:১৫
Share: Save:

পাক্কা ১৭ মিনিট হত্যালীলা ‘লাইভ’ দেখল বিশ্ব! ফেসবুকে। যার মালিক মার্ক জ়াকারবার্গ বলে থাকেন, বিশ্বের মানুষকে জুড়তেই তার এই সাইবার-মঞ্চ। কিন্তু এ কেমন জোড়া! নিউজ়িল্যান্ডে দুই মসজিদে হামলা প্রশ্নটা তুলে দিল ফের। বিশ্বের কত মানুষ এই ভয়াবহ দৃশ্য লাইভ দেখলেন বা প্রতিক্রিয়া জানালেন, অন্যান্য সাইবার মাধ্যমে কতটা ছড়িয়ে পড়ল তা— এ সবের কোনও হিসেব দেয়নি ফেসবুক।

ওই ভিডিয়ো কত জন ডাউনলোড করেছেন, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল ইউটিউব, টুইটার, ইনস্টাগ্রামের কাছেও। জবাব মেলেনি। নিউজ়িল্যান্ডের পুলিশ জানে, ওই ভিডিয়ো এখনও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়াচ্ছে। এ জিনিস কাউকে শেয়ার না-করার অনুরোধ করেছে তারা। কিন্তু এক বার ইন্টারনেটে কিছু চলে এলে, কোথাও না কোথায় তা থেকেই যায়। নিশ্চিহ্ন করা যায় না।

প্রশ্ন উঠেছে, ১৭ মিনিটের আগে কেন এর প্রদর্শন বন্ধ করতে পারল না ফেসবুক। কেন সতর্ক করতে পারল না পুলিশকে। বিশ্বের নানা দেশে লাইভ-স্ট্রিম করতে করতে আত্মহত্যার ঘটনা দেখা গিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই প্রদর্শন বন্ধ করা বা অঘটন ঠেকানোর জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়া যায় না। ফেসবুক জানায়, নিউজ়িল্যান্ড পুলিশ তাদের সতর্ক করার পরেই ওই ভিডিয়ো সম্পর্কে সজাগ হয় তারা। ওই ভিডিয়ো মুছে ফেলা হয়েছে। কেউ ভাল বা মন্দ লাগার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে থাকলে বা শেয়ার করে থাকলে, মোছা হচ্ছে তা-ও। ইউটিউব জানিয়েছে, তারা হিংসার ভিডিয়ো ছড়ানো রুখতে সজাগ রয়েছে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

তবে যান্ত্রিক মেধা তথা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ভিত্তিতে তৈরি করা ‘অলগারিদম’ কেন চিনতে পারল না, কোথাও একটা এমন হত্যালীলা চলছে? ভিডিয়ো বিশ্লেষণের সংস্থা এসিআরক্লাউড-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা পেং দং বলছেন, ‘‘কোনও ভিডিয়ো আগে থেকে থাকলে, নতুন করে সেটি ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা রোখা যায়। সদ্য রেকর্ড করা কোনও হিংসার ভিডিয়ো আপলোড করা ঠেকানোটা খুবই শক্ত।’’ অর্থাৎ কৃত্রিম মেধা এখনও ততটা উন্নত হয়নি, যা দিয়ে টক্কর দেওয়া যায় হিংসা ও ঘৃণার মেধাকে। এমনকি আগের কোনও ভিডিয়ো ব্লক করে দেওয়া হলেও, তাতে খানিকটা হেরফের করে আপলোড করলেও তা ধরা শক্ত। বন্দুক যুদ্ধের কম্পিউটার গেম আর আসল হত্যালীলাকে আলাদা করতে পারে না ‘অলগারিদম’। তাই নিউজ়িল্যান্ডে হত্যালীলা এবং ‘রিটার্ন টু দ্য ক্যাসল উলফেনস্টাইন’ কিংবা ‘পাবজি’-র মতো সাইবার খেলা এক মনে হয় যন্ত্র-মেধার। শেষ ভরসা তাই মানুষই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Facebook Instagram New Zealand Attack
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE