ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘প্রণয়ী’ কিংবা ‘শয্যাসঙ্গিনী’ নিয়ে জল্পনা যেন থামতেই চাইছে না। হ্যালির ধূমকেতুর মতো এ বার আচমকা গুঞ্জনে উঠে এল রাষ্ট্রপুঞ্জে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালি র নাম। গুঞ্জনই বা কেন, এ নিয়ে মার্কিন মুলুকে এখন রীতি মতো হইহই আলোচনা। জল এত দূর গড়িয়েছে যে, স্বয়ং নিকি হ্যালিকে প্রকাশ্যে মুখ খুলে বলতে হল, ‘এ সব যাচ্ছেতাই মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়।’
ঘটনার সূত্রপাত সদ্য প্রকাশিত একটি বেস্ট সেলার বইকে ঘিরে। মার্কিন সাংবাদিক, প্রাবন্ধিক, লেখক মাইকেল উল্ফের বই ‘ফায়ার অ্যান্ড ফিউরি: ইনসাইড দ্য ট্রাম্প হোয়াইট হাউস’ প্রকাশ হয়েছে এ মাসেই। বেরিয়েই ‘হট কেক’। নিজের বই নিয়ে দেওয়া এক ইন্টারভিউতে উল্ফ বলেন, ট্রাম্পের সঙ্গে এক মহিলার ঘনিষ্ঠতা রয়েছে এবং সেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা তিনি তাঁর বইতে বিস্তারিত লিখেছেন। কে এই মহিলা? মুখে নাম করেননি তিনি। কিন্তু বইটি পড়ার পর পাঠকমহল নিশ্চিত, উল্ফ আসলে নিকির দিকেই স্পষ্ট ইঙ্গিত করেছেন।
কী লিখেছেন উল্ফ? লিখেছেন, হ্যালি শুধু ট্রাম্প প্রশাসনের সবচেয়ে হাই প্রোফাইল মহিলাই নন, এমন হাবভাব করেন যেন তিনিই প্রেসিডেন্টের উত্তরাধিকারী। ওভাল অফিস এবং প্রেসিডেন্টের বিমানে হ্যালি ব্যক্তিগত ভাবে অনেকটা সময় কাটান বলেও লিখেছেন উল্ফ।
আরও পড়ুন: মুলারের মুখোমুখি হতে চান ট্রাম্প
এই সব কথাকে অবশ্য সপাটে উড়িয়ে দিয়েছেন হ্যালি। “একেবারেই ঠিক নয়...”— বৃহস্পতিবার পলিটিকো-র উইমেন রুল পডকাস্টে এক সাক্ষাত্কারে তিনি বলেন, “সবটাই ভীষণ রকম আপত্তিকর, এবং বিরক্তিকর।”
ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বিমানে একান্তে সময় কাটানোর প্রসঙ্গে হ্যালির জবাব, “এক বারই এয়ারফোর্স ওয়ান-এ ছিলাম। একা নয়, সেখানে আরও অনেকেই ছিলেন আমার সঙ্গে।”
যিনি বা যাঁরা এ সব কথা বলছেন, তাঁদের লিঙ্গবৈষম্যবাদী (সেক্সিস্ট) বলেও পাল্টা আঙুল তুলেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, “মহিলারা কোনও ভাল করলে বা নিজের কাজ ঠিকঠাক করলে, এমন কিছু মানুষ আছেন যাঁরা তাঁদের সম্পর্কে অপপ্রচার করেন। আর মহিলাদের ছোট করাই তাঁদের কাজ।”
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বার বার খবরের শিরোনামে এসেছেন নিকি হ্যালি।
আরও পড়ুন: ১০ আসিয়ান দেশের ২৭ সংবাদপত্রে ছাপা হল মোদীর লেখা
ভারতীয় বংশোদ্ভূত নিকির জন্ম দক্ষিণ ক্যারোলিনার এক শিখ পরিবারে। ২০০৪-এ আমেরিকার হাউজ অব রিপ্রেসেন্টেটিভ-এর সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১০-এ হন দক্ষিণ ক্যারোলিনার গভর্নর। ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে যখন রিপাকলিকান প্রার্থী নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলছে, তখন কিন্তু ট্রাম্প বিরোধী শিবিরেই ছিলেন তিনি। মার্কো রুবিও-কে রিপাবলিকান প্রার্থী করার জন্য সক্রিয় ভাবে ময়দানে নামেন। তার পর হাওয়া ঘোরার সঙ্গে সঙ্গে আস্তে আস্তে শিবির বদলে ফেলেন। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর খবর ছিল যে, নিকি হ্যালিকে বিদেশ দফতরের সচিব করতে চলেছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রপুঞ্জে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে তাঁকে।
অন্য দিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জীবনে নারীসঙ্গের কাহিনি একটা-দুটো নয়। বিতর্কও উঠেছে নানান সম্পর্ক ঘিরে। শেষতম বিতর্কটা উস্কে দিয়েছিল ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। দিন ১৫ আগে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, ট্রাম্পের সঙ্গে এক মার্কিন পর্নস্টারের অতীত যৌন সম্পর্ক নিয়ে মুখ বন্ধ রাখার জন্য, ওই পর্নস্টারকে ভোটের আগে ১ লক্ষ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার ‘ঘুষ’ দেওয়া হয়েছিল। ট্রাম্পের আইনজীবী অবশ্য একে প্রেসিডেন্টের চরিত্রকে কালিমালিপ্ত করার অপচেষ্টা বলে উড়িয়ে দেন। স্টেফানি ক্লিফোর্ড নামের ওই মহিলাও ওই খবর অস্বীকার করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy