Advertisement
E-Paper

চিনফিংয়ের হাতেই এখন সব ক্ষমতা

সিপিসি-র ১৯তম কংগ্রেস আনুষ্ঠানিক ভাবে শেষ হওয়ার আগেই এটাও স্পষ্ট হল যে, এই মুহূর্তে চিনের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তিটি শি-ই।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৪৮
পার্টি কংগ্রেসের শেষ দিনে প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। ছবি: এএফপি।

পার্টি কংগ্রেসের শেষ দিনে প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। ছবি: এএফপি।

আগে থেকেই ইঙ্গিতটা ছিল। চিনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) ১৯তম কংগ্রেসে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চিনের সংবিধানে জায়গা করে নিল প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের নাম এবং তাঁর রাজনৈতিক মতাদর্শ। আর এই সূত্রেই তাঁর দুই প্রবাতপ্রতিম পূর্বসূরি, চিনের চেয়ারম্যান মাও জে দং এবং শীর্ষ নেতা দেং শিয়াওপিংয়ের স্তরে উন্নীত হলেন শি চিনফিং।

সিপিসি-র ১৯তম কংগ্রেস আনুষ্ঠানিক ভাবে শেষ হওয়ার আগেই এটাও স্পষ্ট হল যে, এই মুহূর্তে চিনের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তিটি শি-ই। চিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘হংকং সেন্টার ফর চায়না স্টাডিজ’-এর অধ্যাপক উইলি লামের কথায়, ‘‘শি এখন চাইলে সারা জীবনের জন্য সম্রাট হয়ে থাকতে পারেন। তাঁর শরীর যত দিন সায় দেবে, চাইলে তত দিনই উনি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন।’’ পার্টি কংগ্রেসের পরে পরিস্থিতি যা দাঁড়াল, তাতে ২০২২-এ দ্বিতীয় দফার শাসন শেষ হওয়ার পরেও ইচ্ছে হলে ক্ষমতায় থাকতেই পারেন শি।

গত সপ্তাহে পার্টি কংগ্রেস শুরুর দিনেই ‘চিনের নিজস্ব সমাজতন্ত্র’র কথা বলে বিশ্বকে বার্তা দেন শি। বোঝান, চিনা ভাবধারার সমাজতন্ত্র থেকে একচুলও সরবেন না তিনি। সেটাই লিপিবদ্ধ হয়েছে সংবিধানে। শি-র বক্তব্য অনুযারী, ইউরোপীয় সমাজতন্ত্র যে আদর্শের পথে এগিয়েছিল, দীর্ঘমেয়াদে তা ব্যর্থ হয়েছে। তাই যে পথে চিনা সমাজতন্ত্র সাফল্য পেয়েছে, তাতেই আস্থা রাখার কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট।

‘নিজস্ব ভাবধারার সমাজতন্ত্রে’র পথে হাঁটতে গিয়ে শি একই সঙ্গে দু’টি কাজ করেছেন। একদিকে দুর্নীতি দমন অভিযানে শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের উপরে খড়্গহস্ত হয়েছেন। অন্য দিকে বাক‌্স্বাধীনতার উপরে চাপিয়েছেন আরও কঠোর বিধিনিষেধ। সেই সঙ্গেই দেশের নিরাপত্তার কথা বলে চিনের ‘পিপলস লিবারেশন আর্মি’কে আরও শক্তিশালী করেছেন। চিনফিংয়ের এ বার লক্ষ্য, বুধবার পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটির নতুন সদস্যদের নাম ঘোষণা। ২২৮০ জন প্রতিনিধি নিয়ে তৈরি হবে নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি। তাঁদের মধ্যে থেকে বাছাই ২৫ জন থাকবেন পলিটব্যুরোয়। এঁদের সাত জনকে নিয়ে আবার তৈরি হবে পলিটব্যুরোর স্ট্যান্ডিং কমিটি ‘অ্যাপেক্স ৭’। চিনা রাজনীতির এক পর্যবেক্ষকের মতে, শি-এর এই প্রতিপত্তির অর্থ হলো, এখন থেকে তিনি অপ্রতিরোধ্য। তাঁকে অমান্য করলে সেটা হবে গোটা পার্টির বিরুদ্ধাচারণ।

১৯২১ সালে চিনা কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে জীবৎকালে এমন ক্ষমতা ও সম্মানলাভের সুযোগ হয় শুধু এক জনেরই। মাও জে দং। মাওয়ের রাজনৈতিক দর্শন ‘মাও জে দংয়ের চিন্তা’ হিসেবে স্থান করে নেয় সংবিধানে। চিনা অর্থনীতিতে সংস্কারের ডাক দিয়ে আর এক নেতা দেং শিয়াওপিংয়ের অর্থনৈতিক তত্ত্বও ঠাঁই পেয়েছে সংবিধানে। কিন্তু সেটা তাঁর মৃত্যুর পরে। চিনফিংয়ের পূর্বতন দুই প্রেসিডেন্ট হু জিনতাও এবং জিয়াং জেমিনের সে সৌভাগ্যই হয়নি। তবে অনেকে আবার মাওয়ের সঙ্গে চিনফিংয়ের তুলনার ক্ষেত্রে একটু সংশয়ী। ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির ‘২১ শতকের চায়না সেন্টার’-এর প্রধান সুজান শার্ক বলছেন, ‘‘দুর্নীতি দমন অভিযানে মানুষ ভয় পেয়েছে। কিন্তু এখনই তাঁকে একনায়ক বলতে চাই না।’’ সুজানের মতে, পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটিতে যদি তিন সম্ভাব্য উত্তরসূরির (হু চুনহুয়া, চেন মিনের এবং ঝাং কিংওয়েই) মধ্যে যদি এক জনকেও বেছে নেওয়া হয়, তা হলে হয়তো বা ২০২২ সালে ক্ষমতা থেকে সরতেও পারেন শি। তা না হলে সর্বাত্মক একনায়ক হয়ে উঠবেন চিনফিংই।

Xi Jinping China শি চিনফিং চিন
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy