পারস্পরিক বোঝাপড়া আরও বৃদ্ধি করল পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ। এ বার দুই দেশের কূটনীতিক এবং সরকারি আধিকারিকদের ভিসা ছাড়াই প্রবেশাধিকার দেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে ইসলামাবাদ এবং ঢাকা। বুধবার ঢাকায় বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণমন্ত্রী মহসিন নকভি। সেখানেই এই ভিসাবিহীন প্রবেশাধিকারের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, দুই দেশে যাঁদের কাছে কূটনৈতিক এবং সরকারি পাসপোর্ট থাকবে, তাঁদের ভিসা ছাড়াই প্রবেশাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে দুই দেশ যৌথ ভাবে সম্মত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে ওই বিবৃতিতে। তবে ঠিক কবে থেকে এই ভিসাবিহীন চলাচল শুরু হবে, তার উল্লেখ করা হয়নি।
বুধবারের বৈঠকে স্থির হয়েছে সন্ত্রাসবাদ দমন, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, মাদক নিয়ন্ত্রণ, মানবপাচার রোধের মতো বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান। দুই দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি যৌথ কমিটি গঠন করা হবে। পাকিস্তানের তরফ থেকে এই কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের সচিব খুররম আঘা। তা ছাড়া পুলিশি প্রশিক্ষণের বিষয়েও দুই দেশ একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতা করবে বলে বৈঠকে স্থির হয়েছে। খুব শীঘ্রই বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদল ইসলামাবাদের ন্যাশনাল পুলিশ অ্যাকাডেমিতে যাবে।
বুধবার ঢাকায় পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণমন্ত্রীকে ‘গার্ড অফ অনার’ দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, পাক মন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এর ফলে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হয় সাবেক পূর্ব পাকিস্তান। তৈরি হয় স্বাধীন বাংলাদেশ। তার পর থেকে দীর্ঘ সময় ধরে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি বাণিজ্য প্রায় বন্ধই ছিল। সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার দু’দেশের মধ্যে ফের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চালু করতে পদক্ষেপ করেছে ইউনূসের প্রশাসন। দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ককে ‘স্বাভাবিক’ করতে ইতিমধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে ঢাকা এবং ইসলামাবাদের। বস্তুত, গত বছরের ডিসেম্বরেই মুহাম্মদ ইউনূসের প্রশাসন জানিয়েছিল, বাংলাদেশের ভিসা সহজে পেয়ে যাবেন পাকিস্তানিরা। বিশ্বের যে কোনও প্রান্ত থেকে কোনও পাকিস্তানের নাগরিক যদি বাংলাদেশে যেতে চান, তাঁদের ভিসা সংক্রান্ত সমস্যা হবে না। সব দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস এবং উপদূতাবাসে এমনটাই নির্দেশ পাঠিয়েছিল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।