E-Paper

পাক অধিকৃত কাশ্মীরে বিক্ষোভের বলি দুই

পাক অধিকৃত কাশ্মীরের দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য লড়াই করতে থাকা বিভিন্ন সংগঠনকে এক ছাতার তলায় এনে গড়ে উঠেছে আওয়ামী অ্যাকশন কমিটি (এএসি)। তারাই এই বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৭:২৬
উত্তাল হল পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর।

উত্তাল হল পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর। —প্রতীকী চিত্র।

‘মৌলিক অধিকারের’ দাবিতে এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতায় সোমবার সকাল থেকে উত্তাল হল পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর। স্থানীয় সংগঠনের ডাকা লকডাউনের মাঝেই ব্যানার, পতাকা নিয়ে পথে নামল স্থানীয় মানুষ। শাহবাজ় শরিফ সরকারের বিরোধিকায় স্লোগান দিল তারা। পাল্টা সেনা-আধাসেনা নামিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করল প্রশাসন। চলল গোলাগুলিও। সূত্রের খবর, মুজফ্‌ফরাবাদে দু’পক্ষের সংঘর্ষে এ দিন ২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। জখম কমপক্ষে ২২।

পাক অধিকৃত কাশ্মীরের দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্য লড়াই করতে থাকা বিভিন্ন সংগঠনকে এক ছাতার তলায় এনে গড়ে উঠেছে আওয়ামী অ্যাকশন কমিটি (এএসি)। তারাই এই বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল।

বহু দিন ধরে নিজেদের দাবি-দাওয়া নিয়ে অসন্তোষ জানাচ্ছিল এএসি। সম্প্রতি পাক সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে কমিটির দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়। কিন্তু তাতে কমিটির দাবি সরকার মানতে রাজি না-হওয়ায়, বৈঠক ব্যর্থ হয়। বৃহত্তর আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেয় এএসি। আজ, সোমবার থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য পাক অধিকৃত কাশ্মীরে লকডাউনের ডাক দিয়েছে তারা। রবিবার সারা দিন সে কারণে দোকান-বাজার খোলা রাখা হয়েছিল। স্থানীয় মানুষ যাতে প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে মজুত করতে পারে। সোমবার লকডাউনের মধ্যেই বিক্ষোভ দেখাতে পথে নামে মানুষ। পাকিস্তানের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, রাস্তায় আগ্নেয়াস্ত্র হাতে ঘুরছে অনেকে। কেউ কেউ গাড়ির ছাদে উঠে পতাকা দোলাচ্ছে। স্লোগান দিচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেনা এবং পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা এ দিন সাধারণ মানুষকে লক্ষ্য করে গোলাগুলি চালিয়েছে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে এ দিন মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট আংশিক ভাবে বন্ধ করে দেয় পাক সরকার। পাক পঞ্জাব প্রদেশে অতিরিক্ত ২ হাজার সেনা নামানো হয়। সমস্ত জেলায় মোতায়েন করা হয় আধাসেনা। পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে ঢোকা-বেরনোর সমস্ত রাস্তা বন্ধ করে নাকা চেকিং চালানো হয়। সূত্রের খবর, কমিটির বহু সদস্য ও গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাক সরকারের কাছে মোট ৩৮ দফা দাবি পেশ করেছে এসিসি। স্থানীয় বাসিন্দাদের মৌলিক অধিকারের পাশাপাশি আটা-ময়দার দাম কমানো, বিদ্যুতের খরচ কমানোর দাবি তুলেছে তারা। ভারত থেকে আসা কাশ্মীরি শরণার্থীদের জন্য বিধানসভার আসন ১২টিতেই সীমিত রাখার দাবি তুলেছে কমিটি। পাক সরকারের নেতামন্ত্রীদের বিশেষ সুবিধা খারিজের দাবিও রয়েছে তার মধ্যে।

মুজফ্‌ফরাবাদ-সহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় আজ ঘুরে দেখেন কমিটির অন্যতম শীর্ষ নেতা শওকত নওয়াজ় মীর। তিনি বলেন, ‘‘একটা বিষয় সাফ জানাচ্ছি, কোনও বিশেষ মতাদর্শ বা সংগঠনের হয়ে আমরা আন্দোলন করছি না। এই অঞ্চলে সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে মানুষ মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। সেগুলো আদায় করাই আমাদের লক্ষ্য।’’ দাবি পূরণ না হলে শরিফ সরকারের বিরুদ্ধে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মীর।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

POK Kashmir

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy