পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনওয়ার হক কাকর। —ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান আনওয়ার হক কাকর ইরান প্রসঙ্গে মুখ খুললেন। শুক্রবার তিনি জানিয়েছেন, ইরানের সঙ্গে যে ‘ছোটখাটো অস্বস্তি’ তৈরি হয়েছে, আলোচনার মাধ্যমে তা মিটিয়ে নেওয়া যাবে।
কিছু দিন আগে ইরানের হামলার জবাবে পাল্টা প্রত্যাঘাত করেছিল পাকিস্তান। তার পরে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের কিছুটা অবনতি হয়েছিল। এমনকি, নতুন করে যুদ্ধের সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল দক্ষিণ এশিয়ায়। পাক সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় ইরান বায়ুসেনার মহড়া শুরু করে দিয়েছিল। তার পরেই রাতারাতি সুর নরম করে ফেলেছে ইসলামাবাদ। তারা আর হামলা, প্রতি-হামলার পথে হাঁটতে চাইছে না। আলোচনার মাধ্যমে শান্তি স্থাপনে আগ্রহী ইসলামামাবাদ। পাকিস্তানের তদারকি প্রধানমন্ত্রীর কথাতেও সেই ইঙ্গিতই মিলল।
ইরানের হামলা এবং তাদের মাটিতে পাকিস্তানের পাল্টা হামলার সময়ে দেশে ছিলেন না আনওয়ার। সংঘাতের আবহে তড়িঘড়ি তিনি ফিরে এসেছেন ইসলামাবাদে। সেখান থেকে শুক্রবার বলেন, ‘‘পাকিস্তান আইন মেনে চলে, এটি একটি শান্তিপ্রিয় দেশ। ইরানের সঙ্গে ছোটখাটো যে অস্বস্তি তৈরি হয়েছে, তা কথাবার্তার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়া যাবে।’’ তিনি আরও জানান, তাঁর দেশ সমস্ত দেশের সঙ্গেই বন্ধুত্বপূর্ণ এবং সহযোগিতামূলক সম্পর্ক স্থাপন করতে আগ্রহী। বিশেষত প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে পাকিস্তান কখনও সম্পর্ক তিক্ত করতে চায় না।
পশ্চিমের পড়শি দেশ ইরানকে ‘ভাইয়ের মতো’ বলে উল্লেখ করেছেন আনওয়ার। দুই দেশের সুসম্পর্কের দৃষ্টান্ত দিয়ে অতীতের কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
দেশে ফিরেই আনওয়ার আগে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল (এনএসসি)-এর সঙ্গে বৈঠক করেন। ইরান সীমান্তে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে ওই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। তবে বালুচিস্তানের মাটিতে বিনা প্ররোচনায় ইরানের হামলাকে ইসলামাবাদ যে ভাল চোখে দেখেনি, তা নিশ্চিত। নিরাপত্তা বৈঠকে এ বিষয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী জওয়ানদের প্রশংসাই করেছেন বলে খবর। পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের উপরে হস্তক্ষেপ যে মেনে নেওয়া যাবে না, এ বিষয়ে তাঁরা একমত।
ইরান-পাকিস্তান সংঘাতের সূত্রপাত মঙ্গলবার থেকে। মঙ্গলবার পাকিস্তানের বালুচিস্তানে জঙ্গি সংগঠন জইশ আল অদলের ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালায় ইরান। পাকিস্তানের উপর হামলার কথা ইতিমধ্যেই স্বীকার করেছে তেহরান। ইরানের বিদেশমন্ত্রী স্বীকার করেছেন যে, ওই হামলার লক্ষ্য ছিল জঙ্গি সংগঠন জইশ অল অদল বা ‘আর্মি অফ জাস্টিস’-এর ঘাঁটি ধ্বংস করা। ইরানের দাবি ছিল, এই জঙ্গি সংগঠনের কার্যকলাপ মূলত ইরান-পাকিস্তান সীমান্ত জুড়ে। সাম্প্রতিক সময়ে ওই জঙ্গি গোষ্ঠী ইরানের মাটিতে বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে বলেও সে দেশের দাবি।
ইরানের হামলার পরেই গর্জে ওঠে ইসলামাবাদ। ইরানের হামলায় পাকিস্তানের দু’জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে পাকিস্তান হুঁশিয়ারি দেয়, ‘ফল ভুগতে হবে’ ইরানকে। এর পরে বৃহস্পতিবার ইরানের উপর পাল্টা হামলা চালায় পাকিস্তান। ইরানের দাবি পাক হামলায় অন্তত ন’জনের মৃত্যু হয়েছে। হামলা-পাল্টা হামলার আবহে দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে ফাটল ধরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy