দিন কয়েক আগেই নতুন আফগান ও দক্ষিণ এশিয়া নীতি ঘোষণা করতে গিয়ে সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই পথে হেঁটেই এ বার ট্রাম্প প্রশাসন পাকিস্তানকে বিপুল অঙ্কের সামরিক সাহায্য দিয়ে শর্ত চাপিয়ে দিল, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না করলে এই টাকা আদপেই হাতে পাবে না ইসলামাবাদ!
বুধবার ট্রাম্প প্রশাসন মার্কিন কংগ্রেসকে জানিয়েছে, গত বছরের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পাকিস্তানকে সামরিক খাতে সাড়ে বাইশ কোটি ডলার অর্থসাহায্য দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সেই টাকা সরাসরি ইসলামাবাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে না। রাখা হবে তৃতীয় পক্ষের কোনও অ্যাকাউন্টে। পাকিস্তান যদি সন্ত্রাসদমনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না করে, তা হলে সেই অ্যাকাউন্ট থেকে কোনও টাকা তুলতে পারবে না। তৃতীয় পক্ষটি কে হবে, তা এখনও জানায়নি ট্রাম্প প্রশাসন।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাকিস্তান তাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী, এ কথা বহু বার বলেছে ওয়াশিংটন। পাকিস্তানকে ‘সহযোগী’র মর্যাদা দিয়ে ২০০২ সাল থেকে তাদের ৩৩০০ কোটি ডলারেরও বেশি সাহায্য দিয়েছে আমেরিকা। ২০১৬ সালেই নতুন করে ১১০ কোটি ডলার অনুদানের প্রতিশ্রুতি দেয় ওয়াশিংটন। কাল যে ২২.৫ কোটি ডলার দেওয়া হয়েছে, তা এই ১১০ কোটি ডলারেরই অংশ।
কয়েক দিন আগে নতুন আফগান ও দক্ষিণ এশিয়া নীতি ঘোষণার সময়েই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘আমরা সন্ত্রাসদমনের জন্য পাকিস্তানকে কোটি কোটি ডলার সাহায্য করছি। অথচ তারা দেশের মাটিতে জঙ্গি পুষছে। এই পরিস্থিতির বদল দরকার। অবিলম্বে!’’ গত সপ্তাহে মার্কিন বিদেশসচিব রেক্স টিলারসনও বলেছিলেন, ‘‘পাকিস্তানকে এ বার শর্ত সাপেক্ষেই সাহায্য করা হবে।’’ গতকাল সাহায্য ঘোষণা করার সময়ে টিলারসন জানান, তালিবান ও হক্কানি গোষ্ঠীর নেটওয়ার্ক ভাঙতে পাকিস্তান উঠে-পড়ে লাগলে তবেই তাদের আর্থিক সাহায্য করা হবে।
মার্কিন প্রশাসনের কিছু শীর্ষকর্তা যদিও মনে করছেন, ইসালামাবাদকে চাপে রাখতে ওয়াশিংটনের আরও বেশি কড়া হওয়া উচিত। ভারতপন্থী এক রিপাবলিকান নেতার কথায়, ‘‘অর্থসাহায্য পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলেই আমরা খুশি হবো। অন্ততপক্ষে পাকিস্তানের এফ ১৬-র মতো যুদ্ধবিমান বিক্রি বন্ধ করা উচিত। এই ধরনের যুদ্ধবিমান নিয়েই তারা ভারতকে আক্রমণ করতে পারে।’’
পাকিস্তান-আমেরিকার এই টানাপড়েনের মধ্যে টিলারসনের সঙ্গে বৈঠক বাতিল করেছেন পাক বিদেশমন্ত্রী খাজা মহম্মদ আসিফ। এ মাসের শেষেই আসিফের মার্কিন সফরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর পাকিস্তান ও দক্ষিণ এশিয়া নীতি ঘোষণার পরে সেই সফর বাতিল করেন আসিফ। জানান, আপাতত তিনি চিন, রাশিয়া ও তুরস্ক সফরে যেতে চান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy