হাতে ‘ভিক্ষার ঝুলি’ নিয়ে ঘুরবে পাকিস্তান, তার অতি-বড় বন্ধু-রাষ্ট্রও এখন আর সেই প্রত্যাশা করে না। এ কথা জানালেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। আর তা বলেই পাকিস্তানকে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, উন্নয়নে জোর দেওয়ার কথা বললেন তিনি। সেই সঙ্গে জানালেন, তিনি এবং পাক সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল জেনারেল আসিম মুনিরই শেষ ব্যক্তি, যাঁরা নিজেদের কাঁধে এই ‘বোঝা’ তুলে নিয়েছেন। এর পরে আর কেউ এই বোঝা নেবে না।
শনিবার বালুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটায় পাকিস্তান সেনার একটি অধিবেশনে যোগ দেন শরিফ। সেখানেই তিনি পাকিস্তানকে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার বার্তা দেন। পাকিস্তানের বন্ধু-রাষ্ট্র কারা, সেই কথাও জানান। শরিফ চিনকে ‘সর্বসময়ের বন্ধু’, সৌদি আরবকে ‘বিশ্বাসী বন্ধু’ বলে সম্বোধন করেন। তুরস্ক, কাতার, আরব আমিরশাহিকেও নিজের বন্ধু বলেই বর্ণনা করেন তিনি। তার পরেই তিনি বলেন, ‘‘একটা কথা বলতে চাই এখানে যে, ওই দেশগুলি এখন আশা করে আমরা ওদের সঙ্গে ব্যবসা, বাণিজ্য, আবিষ্কার, গবেষণা, উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনিয়োগে যোগ দেব। আমরা ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে যাব, ওরা আর তা প্রত্যাশা করে না।’’ শরিফের এই মন্তব্যের পরেই প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি এর আগে নিজের বন্ধু-রাষ্ট্রের কাছে ‘ভিক্ষার ঝুলি’ নিয়ে যেত পাকিস্তান? অনেকে মনে করছেন, কোয়েটায় নিজেদের দুর্বল অর্থনীতির বিষয়টিই আরও এক বার স্পষ্ট করে তুলেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী।
শরিফ এ-ও জানিয়েছেন যে, নিজের দেশের প্রাকৃতিক এবং মানব সম্পদ আরও বেশি করে ব্যবহার করতে হবে পাকিস্তানকে। তাতেই উন্নয়ন সম্ভব। তার পরেই তিনি জানিয়েছেন, তিনি এবং পাক সেনাপ্রধানের পরে এই বোঝা আর কেউ কাঁধে নিতে চাইবেন না। শরিফের কথায়, ‘‘ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের সঙ্গে আমিই শেষ ব্যক্তি, যে এই বোঝা (অর্থনৈতিক) কাঁধে নিয়েছি। ঈশ্বর আমাদের ভরে প্রাকৃতিক এবং মানব সম্পদ দিয়েছেন। সে সবের সদ্ব্যবহার করতে হবে। লাভ তুলতে হবে।’’
সম্প্রতি পাকিস্তানের জন্য ১০০ কোটি ডলার ঋণ মঞ্জুর করেছে আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার (আইএমএফ)। ভারতীয় মুদ্রায় সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার বেশি। আইএমএফকে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার কথা বলেছিল ভারত। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেন, ‘‘আইএমএফ পাকিস্তানকে যে টাকা দিয়েছে, ওরা তার অধিকাংশই সন্ত্রাসবাদের জন্য খরচ করবে। ভারত চায়, সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুক আইএমএফ।’’ আইএমএফ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, পাকিস্তান এই ঋণের জন্য প্রয়োজনীয় সকল লক্ষ্য পূরণ করেছে। তাই ঋণ মঞ্জুরে কোনও বাধা ছিল না।