বন্যার কবলে পাকিস্তান। বিশেষত জলের তলায় পঞ্জাব প্রদেশ। রাস্তায় জল থইথই করছে। কী ভাবে এই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার সম্ভব, তা নিয়ে চিন্তায় বাসিন্দারা। তবে এই সমস্যার ‘সমাধান বাতলে’ দিলেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ। তাঁর মতে, বন্যার জল ধরে বাড়িতে সংরক্ষণ করে রাখা উচিত জনগণের! শুধু তা-ই নয়, বন্যার ফলে অতিরিক্ত জলকে ‘আশীর্বাদ’ বলে মনে করেন আসিফ।
স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় আসিফের কাছে পাকিস্তানের বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। সেই প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিতে গিয়েই বন্যার জলকে ‘আশীর্বাদ’ বলে বর্ণনা করেন আসিফ। শুধু তা-ই নয়, বন্যার জল নিয়ে কী করা যায়, তারও সমাধানের খোঁজ দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কথায়, ‘‘এই জলকে ধরে রাখা উচিত।’’ বন্যার কারণে বেহাল দশার প্রতিবাদে অনেকেই রাস্তায় নেমেছেন। প্রতিবাদ চলছে পাকিস্তানের দিকে দিকে। সেই সব প্রতিবাদীদের উদ্দেশে আসিফ বলেন, ‘‘যাঁরা রাস্তা আটকে বসে আছেন, তাঁদের উচিত জমা জল বাড়িতে নিয়ে যাওয়া এবং তার পরে সেটা কোনও জায়গায় মজুত করে রাখা।’’ পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মতে, বন্যার জল সংরক্ষণ করে সেটাকে পরে কাজে লাগানোর জন্য পরিকল্পনা করা উচিত।
টানা বর্ষণের জেরে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে পাকিস্তানের বিস্তীর্ণ এলাকায়। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা পঞ্জাব প্রদেশের। শুধু তা-ই নয়, প্রভাব পড়েছে লাহৌরেও। পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (পিডিএমএ) দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৬ জুন থেকে বর্ষায় ৮৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে শুধু পঞ্জাব প্রদেশেই মৃতের সংখ্যা ১৯৫। ভারতের সীমান্তবর্তী পঞ্জাব প্রদেশের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত তিনটি আন্তঃসীমান্ত নদীর জলস্তর অনেকটাই বেড়েছে। এর ফলে ২,৩০০টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। চন্দ্রভাগা, ইরাবতী এবং শতদ্রু—তিন নদীর অবস্থা শোচনীয়। স্থানীয় কর্তাদের মতে, এই তিন নদী এক সঙ্গে উপচে পড়ার ঘটনা বিরল। শেষ কবে এমন ঘটেছে, তা মনে করতে পারছেন না অনেকেই। পঞ্জাবের মন্ত্রী মরিয়াম ঔরঙ্গজ়েব বলেন, ‘‘এটি পঞ্জাবের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বন্যা।’’ সামগ্রিক ভাবে, এ বছরের বন্যায় পাকিস্তানে এখনও পর্যন্ত ১৫ লক্ষের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।