মাল্লাকুটা হোক বা বেটসম্যান বে— দক্ষিণ-পূর্ব অস্ট্রেলিয়ার এই সব সৈকতশহর বছর শেষে পর্যটকদের ভিড়ে ঠাসা থাকে। এ বারেও ভিড়টা নেহাত কম নয়। তবে পর্যটক নয়, এই ভিড় আতঙ্কগ্রস্ত, কোণঠাসা মানুষের। প্রাণ বাঁচাতে যাঁরা এই মুহূর্তে ঘরবাড়ি ছেড়ে আস্তানা গেড়েছেন সমুদ্রের পাড়ে। অনেকে আবার নৌকা ভাড়া করে আশ্রয় নিয়েছেন সমুদ্রেই।
কয়েক মাস ধরে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে অস্ট্রেলিয়া। এই মুহূর্তে পরিস্থিতি সব চেয়ে ভয়ঙ্কর ভিক্টোরিয়া আর নিউ সাউথ ওয়েলস (এনএসডব্লিউ) প্রদেশের। এনএসডব্লিউ-এর বেটসম্যান বে থেকে ভিক্টোরিয়ার বায়ার্নসডেল পর্যন্ত প্রায় ৫০০ কিলোমিটার এলাকা পুড়ে খাক। হাজার পাঁচেক মানুষ ঘরছাড়া। সোমবার নিউ সাউথ ওয়েলসের কোরবারগো শহরে আগুনে পুড়ে বাবা ও ছেলের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এখন পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক জন দমকলকর্মী। আরও চার জন নিখোঁজ। এনএসডব্লিউ এবং ভিক্টোরিয়ায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে সাহায্য করতে সেনাবাহিনীর কপ্টার ও নৌকা ব্যবহার করা হবে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছে প্রশাসন। সেনা নামিয়ে আকাশ ও সমুদ্রপথে উদ্ধারের কথাও ভাবা হচ্ছে।
বেটসম্যান বে এলাকায় গড় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। যা নজিরবিহীন। তার উপরে শুষ্ক আবহাওয়া, ঘনঘন বজ্রপাত আর ঝোড়ো হাওয়ার দাপট। যার ফলে আগুন দ্রুত ছড়াচ্ছে। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া দফতর জানিয়েছিল, হাওয়ার গতিপথ উল্টো হওয়ায় দক্ষিণ-পূর্ব অস্ট্রেলিয়ার সৈকতগুলি তুলনামূলক নিরাপদ। স্থানীয়েরা তাই শহর ছেড়ে সৈকতের দিকে পালাচ্ছিলেন। সোমবার থেকে সে-দিকেও আগুন ছড়ানোয় উপকূলবর্তী এলাকা এখন সত্যিই কতটা নিরাপদ, সেই প্রশ্ন উঠছে। এক দিকে আগুন, আর এক দিকে সমুদ্র। দাবানলের জেরে বেশ কিছু, উপকূলবর্তী এলাকা বিচ্ছিন্ন। কয়েকটি এলাকায় জলপথে রসদ পাঠানোর কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে।