Advertisement
E-Paper

যে কোনও অনুপ্রবেশকারী শত্রুকে হারাতে সক্ষম চিনা বাহিনী: ফের বললেন শি

চিনা সেনার সক্ষমতার কথা ফের মনে করিয়ে দিতে চাইলেন চিনা প্রেসিডেন্ট। ডোকলাম সঙ্কটের নাম নিলেন না। কিন্তু বললেন, চিনা বাহিনী যে কোনও ‘অনুপ্রবেশকারী শত্রুকে’ হারাতে সক্ষম।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৭ ১৬:৩৫
চিনের বৃহত্তম সামরিক ঘাঁটি ঝুরিহেতে প্যারেড পরিদর্শনে প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। ছবি: এপি।

চিনের বৃহত্তম সামরিক ঘাঁটি ঝুরিহেতে প্যারেড পরিদর্শনে প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। ছবি: এপি।

যে কোনও অনুপ্রবেশকারী শক্তিকে পরাস্ত করার সক্ষমতা পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) রয়েছে। মন্তব্য চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর। পিএলএ-র ৯০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে চিনের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটিতে রবিবার এক বিরাট সামরিক প্যারেডে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডেন্ট চিনফিং। সেখানেই নিজের ভাষণে তিনি এই মন্তব্য করেছেন।

শি চিনফিং শুধু চিনা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক বা চিনের প্রেসিডেন্টই নন, তিনি চিনের সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের চেয়ারম্যানও। চিনা সেনা বা পিএলএ-র সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক হচ্ছে এই সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশন। সেই সুবাদে চিনফিং-ই চিনা বাহিনীর সর্বোচ্চ নেতা। তাই পিএলএ-র ৯০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে বাহিনী অভিবাদন জানিয়েছে চিনফিংকে। প্রেসিডেন্ট চিনফিং-ও নিজের বাহিনীর সক্ষমতা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি রবিবার বলেছেন, ‘‘আমি দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করি, যে কোনও অনুপ্রবেশকারী শত্রুকে পরাস্ত করার সক্ষমতা এবং আত্মবিশ্বাস, দুই-ই আমাদের বীর সেনাবাহিনীর রয়েছে।’’

সেনার প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে চিনা প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্য যে ডোকলাম সঙ্কটের প্রেক্ষিতেই, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞ মহলের সংশয় নেই। ভারত-ভুটান-চিন সীমান্তের ডোকলামে ভারতীয় এবং চিনা সেনা প্রায় দু’মাস ধরে পরস্পরের মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। চিন বার বার দাবি করছে, ভারতীয় বাহিনী চিনের এলাকায় ঢুকেছে। তাই ‘অনুপ্রবেশকারী শত্রু’ বলতে চিনফিং যে ভারতীয় বাহিনীর কথাই বলতে চেয়েছেন, তা বেশ স্পষ্ট।

পিএলএ-র ৯০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন। উত্তর চিনের ইনার মঙ্গোলিয়া অটোনমাস রিজিয়নের ঝুরিহে সামরিক ঘাঁটিতে শক্তি প্রদর্শন চিনা সেনার। ছবি: রয়টার্স।

ভারত এবং ভুটান কিন্তু বার বারই চিনের দাবি নস্যাৎ করেছে। নয়াদিল্লি জানাচ্ছে, ভারত যেখানে বাহিনী পাঠিয়েছে, সেটা মোটেই চিনের এলাকা নয়। ভুটানের এলাকায় ঢুকে চিন রাস্তা তৈরির চেষ্টা করছিল এবং চিনকে এটা করতে দেওয়া হলে শিলিগুড়ি করিডরের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। বেজিঙের চড়া হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও ভারত ডোকলাম থেকে সেনা সরায়নি। নয়াদিল্লি জানিয়েছে, সেনা সরাতে ভারতের আপত্তি নেই। কিন্তু চিনকেও ডোকলাম থেকে বাহিনী প্রত্যাহার করে নিতে হবে এবং রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা বাতিল করতে হবে।

চিনের সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদপত্র, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এবং বিদেশ মন্ত্রক দফায় দফায় ভারতের এই অবস্থানের সমালোচনা করেছে। বার বার চিন যুদ্ধের হুঙ্কার শুনিয়েছে। ভারত কোনও বাগ্‌যুদ্ধে জড়ায়নি, কিন্তু অবস্থানে অনড় থেকেছে। সীমান্তে এই তুমুল উত্তেজনার মধ্যেই কূটনৈতিক পথে সমাধান খোঁজার চেষ্টা চলছিল। কিন্তু চিনা মিডিয়া বার বার চড়া সুরে জানাচ্ছিল, ভারত সেনা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত কোনও কূটনৈতিক আলোচনা হবে না।

আরও পড়ুন: শীতের আগেই ডোকলাম থেকে সেনা প্রত্যাহার

আলোচনা কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়েছে। ব্রিকস দেশগুলির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের বৈঠক উপলক্ষে ভারতের প্রতিনিধি অজিত ডোভাল বেজিং গিয়েছিলেন। ব্রিকস কর্মসূচির ফাঁকে চিনের স্টেট কাউন্সিলর ইয়াং জিয়েচির সঙ্গে তাঁর আলাদা বৈঠক হয়। পরে প্রেসিডেন্ট চিনফিং-এর সঙ্গেও তাঁর কথা হয়। কথোপকথন কী হয়েছে, তা নিয়ে কোনও দেশই মুখ খোলেনি। কিন্তু, শীত পড়ার আগে দুই দেশই ডোকলাম থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সহমত হয়েছে বলে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর।

হুঙ্কার বন্ধ করে চিন যে শেষ পর্যন্ত কিছুটা নমনীয় হল, বেজিং সে কথা প্রকাশ্যে বলছে না। গোটা দেশ যখন পিএলএ-র ৯০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করছে, তখন ডোকলাম নিয়ে সমঝোতায় আসার কথা ঘোষণা করা হলে চিনা জাতীয়তাবাদে আঘাত লাগতে পারে বলে বেজিং মনে করছে। তাই কিছুটা নীরবেই কূটনৈতিক পথে রফার দিকে এগোচ্ছে তারা। কিন্তু বেজিং যে সমঝোতায় যাচ্ছে, সে কথা বুঝতে দিতেও চিনফিং সম্ভবত রাজি নন। তাই নিজের দেশের বাহিনীর সক্ষমতার এ দিন আরও এক বার জোর দিয়ে শুনিয়ে দিলেন তিনি।

China Xi Jinping PLA 90th Foundation Day Army Parade Chinese President Invading Enemy Doklam Standoff ডোকলাম
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy