Advertisement
১১ মে ২০২৪

ইরানে বিমান দুর্ঘটনায় মৃত ৩৮

মাটি ছাড়ার পরেই পাইলট বুঝেছিলেন, ইঞ্জিনে গোলমাল রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই ফেরার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু মাঝ রাস্তাতেই ভেঙে পড়ে যাত্রিবাহী বিমান। আজ সকালে ইরানের রাজধানী তেহরানে বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৮ জনের। আহত ১০।

রবিবার তেহরানের রাস্তায় ভেঙে পড়া বিমানের অংশ। ছবি: এএফপি

রবিবার তেহরানের রাস্তায় ভেঙে পড়া বিমানের অংশ। ছবি: এএফপি

সংবাদ সংস্থা
তেহরান শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৪ ০২:৪০
Share: Save:

মাটি ছাড়ার পরেই পাইলট বুঝেছিলেন, ইঞ্জিনে গোলমাল রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই ফেরার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু মাঝ রাস্তাতেই ভেঙে পড়ে যাত্রিবাহী বিমান। আজ সকালে ইরানের রাজধানী তেহরানে বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৮ জনের। আহত ১০।

আজ স্থানীয় সময় সকাল সাতটা আঠারো মিনিটে মেহরাবাদ বিমানবন্দর থেকে তাবাসের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল সেপাহান বিমান সংস্থার উড়ান ৫৯১৫। ইরানের উপ পরিবহণমন্ত্রী আহমেদ মাজিদি জানিয়েছেন, ৪০ জন যাত্রী ও আট বিমানকর্মী ছিলেন অ্যানাটভ-১৪০ প্রপেলার বিমানটিতে। যাত্রীদের মধ্যে ছ’জন আবার শিশু। ওড়ার পর পরই আজাদি এলাকায় ভেঙে পড়ে সেটি।

প্রথমে জানা যায়, কর্মী-সহ বিমানটির ৪৮ জন যাত্রীরই মৃত্যু হয়েছে। পরে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, ৩৮ জনের দেহ উদ্ধার করেছে দমকল বাহিনী। ১০ জন স্থানীয় হাসপাতালে ভতি। হাসপাতালের চিকিৎসক জানিয়েছেন, দু’জনের অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক। দমকল কর্মীরা জানান, কয়েকটি দেহ এতটাই পুড়ে গিয়েছে যে সেগুলি চিহ্নিত করতে ডিএনএ পরীক্ষা করতে হবে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, প্রথমে বিমানটির লেজের অংশ ভেঙে পড়ে। তার পরই সামনের দিকটা তালগোল পাকিয়ে হুড়মুড়িয়ে নীচে নেমে আসে। আশপাশের লোকজনরা জানান, যাত্রীদের উদ্ধার করতে এগোচ্ছিলেন তাঁরা। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে পর পর দু’টি বিস্ফোরণে দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে বিমানটি। যে জায়গায় বিমানটি ভেঙে পড়েছে, তার কয়েক হাত দূরেই রয়েছে একটি বাজার। সকালে খুবই ভিড় থাকে সেখানে। তা ছাড়া, ওই এলাকাতেই রয়েছে সেনা আবাসন। ফলে আরও বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। হতাহতের সংখ্যাও সে ক্ষেত্রে আরও অনেক গুণ বাড়ত।

বিমানটি ভেঙে পড়ার সময় মোটরবাইক করে সেখান দিয়েই যাচ্ছিলেন এক যুবক। তিনি বলেন, “হঠাৎই বিকট আওয়াজ শুনে পিছনে তাকিয়ে দেখি একটা বিমান মাটির দিকে নেমে আসছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে নিচু হয়ে যাই। না হলে হয়তো আমার মাথার উপর দিয়েই চলে যেত সেটা। পরে দেখি, রাস্তার পাশে একটা বড় দেওয়াল আর গাছে ধাক্কা মারে বিমানটি।”

ইরানে এই ধরনের বিমান দুর্ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। গত দশ বছরে বেশ কয়েকটি বিমান ভেঙে পড়েছে এ দেশে। ২০১১ সালেই একটি দুর্ঘটনায় ৭৭ জন বিমান যাত্রীর মৃত্যু হয়েছিল। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দেশের প্রতিটি বিমানই রীতিমতো ধুঁকছে বলে অভিযোগ। আর তার জন্য পশ্চিমী দেশগুলির নিষেধাজ্ঞাকেই দায়ী করেছেন ইরানের রাজনৈতিক নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণেই ইউরোপ থেকে যন্ত্রপাতি এনে বিমানগুলিকে সারানো সম্ভব হয় না। নতুন মার্কিন বিমানও কিনতে পারে না ইরান। তার ফলেই ঘনঘন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এখানকার বিমানগুলি। যান্ত্রিক সহায়তার জন্য রাশিয়া, ইউক্রেনের মতো কয়েকটি দেশের উপরই ভরসা করতে হয় ইরানের বিমান সংস্থাগুলিকে। আজকের দুর্ঘটনাও এক ধরনের যান্ত্রিক ত্রুটিরই ফল বলে সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

iran tehran plane crasher flight accident
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE