Advertisement
E-Paper

রাষ্ট্রপুঞ্জে গাঁধী-কূটনীতি মোদীর, শামিল হাসিনাও

এ বার রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনের অংশ হিসেবে ভারতের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হল গাঁধীর প্রাসঙ্গিকতা শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের। সেখানে প্রতিবেশী দেশ-সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রের অধিবেশনে নেতৃত্ব দিলেন মোদী।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:০৮
নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই

নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই

হিউস্টনের মঞ্চে মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী এবং জওহরলাল নেহরুর ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্রের কথা বলেছিলেন মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের মেজরিটি লিডার স্টেনি হোয়ার। তার পরে সেই মঞ্চে গাঁধী বা নেহরুকে নিয়ে মুখ না খোলায় সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নেহরুকে ব্রাত্য করে রাখলেও এ বার গাঁধীকে কূটনৈতিক অস্ত্র হিসেবে কাজে লাগালেন মোদী।

স্বচ্ছ ভারত অভিযানের লোগোয় গাঁধীর চশমাটি নিয়েছিলেন মোদী। পরে ধীরে ধীরে গাঁধীকে নিজেদের ব্র্যান্ডে শামিল করার চেষ্টাও করেছেন তিনি। এ বার রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনের অংশ হিসেবে ভারতের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হল গাঁধীর প্রাসঙ্গিকতা শীর্ষক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের। সেখানে প্রতিবেশী দেশ-সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রের অধিবেশনে নেতৃত্ব দিলেন মোদী।

কূটনীতিকদের মতে, এ ভাবে নিউ ইয়র্কে এক ঢিলে একাধিক পাখি শিকারের চেষ্টা করেছেন মোদী। এক দিকে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দৌত্যের প্রশ্নে ভারত তথা মোদী সরকারের ভাবমূর্তিকে মসৃণ করা চেষ্টা হয়েছে। স্বচ্ছ ভারত থেকে প্লাস্টিক বর্জন নিয়ে গণআন্দোলনের সরকারি প্রকল্পগুলির সঙ্গে গাঁধী দর্শনকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সংযুক্ত করা গেল বলে মনে করছে সাউথ ব্লক। এই অনুষ্ঠানের পরে উপস্থিত বাংলাদেশ, কোরিয়া, জামাইকা, নিউজ়িল্যান্ডের মতো দেশগুলির নেতাদের সঙ্গে ঘরোয়া আলাপচারিতাও সারলেন মোদী রাষ্ট্রপুঞ্জের মূল ভবনেই। পাশাপাশি কয়েক মাইল দূরে নিজের হোটেলে বসে ইমরান খানের কাশ্মীর নিয়ে আক্রমণকেও কিছুটা ভোঁতা করা গিয়েছে বলে দাবি ভারতীয় শিবিরের।

প্রধানমন্ত্রী গাঁধীর প্রাসঙ্গিকতা অনুষ্ঠানে বলেছেন, “সন্ত্রাসবাদ, সংঘাত, আর্থ সামাজিক বঞ্চনা, আর্থিক অসাম্যের মত বিষয়গুলি রাষ্ট্র এবং সমাজকে প্রভাবিত করছে। এ সবের মোকাবিলা করতে যথার্থ নেতৃত্বদান জরুরি। গাঁধীর মূল্যবোধ সেই নেতৃত্বের সুঠাম নৈতিক ভিত গড়ে দেবে।” রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ বলেন, “ক্ষমতায়ন এবং সাম্যের জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিদিনের কাজে গাঁধীর আদর্শ আমাদের পাথেয়। স্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্যে যে সব রাষ্ট্রনেতা লড়াই করছেন তাঁদেরও মননে রয়েছেন গাঁধী।” প্রধানমন্ত্রী মোদীকে তিনি ধন্যবাদ দিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জে সোলার প্যানেল বসানো এবং প্লাস্টিক বর্জন রোধে সদর্থক ভূমিকা নেওয়ার জন্য। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথায়, “আমি আমার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের লড়াইয়ের সঙ্গে গাঁধীজির মিল খুঁজে পাই। দু’জনকেই হত্যা করে হয়েছিল।”

সফররত এক সাউথ ব্লক কর্তার মতে, “আমরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আঞ্চলিক, দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং সমন্বয়ের জন্য জোট গড়ে চলেছি। রাষ্ট্রপুঞ্জের মঞ্চ সেই কাজে ব্যবহার করছি। অন্য দিকে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কাশ্মীরের ফাটা রেকর্ড বাজিয়ে ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছেন।” বস্তুত কাশ্মীর নিয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি যে খুশি নন তা আজ নিজেই জানিয়েছেন ইমরান। তাঁর কথায়, ‘‘মোদীর উপরে কোনও চাপই তৈরি হয়নি। আমরা চাপ তৈরির চেষ্টা চালিয়ে যাব।’’ তবে ভারতের অস্বস্তি বাড়িয়ে আজ কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের সিদ্ধান্ত খারিজ করার দাবি তুলেছে মুসলিম দেশগুলির সংগঠন ‘ওআইসি’। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন অবশ্য গত কালের সুরেই জানিয়েছে, ভারতের সঙ্গে নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও বাড়বে। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতে ও কাশ্মীরিদের ভাল রাখার প্রতিশ্রুতি পালনের জন্য মোদীকে ‘উৎসাহ’ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।

Narendra Modi Mahatma Gandhi Diplomacy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy