ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের উত্তেজনার আঁচে তপ্ত গোটা ফ্রান্স। দেশ জু়ড়ে জারি চূ়ড়ান্ত জঙ্গি-সতর্কতা। তার মধ্যেই সোমবার রাতে আইএস হামলাকারীর হাতে খুন হলেন এক ফরাসি পুলিশ কম্যান্ডার ও তাঁর স্ত্রী। ঘটনার দায় স্বীকার করে ইতিমধ্যেই বিবৃতি দিয়েছে আইএস। বলেছে, “আমাদের এক সৈনিক পুলিশের ডেপুটি চিফ ও তাঁর স্ত্রীকে খুন করেছে।”
ফ্লোরিডার পরেই ফের আইএস নিশানায় প্যারিস। গত বছর নভেম্বরে ধারাবাহিক জঙ্গি বিস্ফোরণের ক্ষত এখনও টাটকা সেখানে। পুলিশ জানায়, হামলাকারীকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। তার নাম লারোসি আব্বালা। বয়স পঁচিশ তথ্য বলছে, পুলিশের খাতায় আগে থেকেই তার নাম ছিল। এমনকী ২০১৩-তে জঙ্গি যোগের দায়ে
তিন বছর জেলও খেটেছে সে। সূত্রের খবর, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিতে সদস্য নিয়োগের কাজেও যুক্ত ছিল লারোসি।
ঠিক কী হয়েছিল সোমবার?
পুলিশ জানিয়েছে, সন্ধে সাড়ে ৮টা নাগাদ দক্ষিণ প্যারিসের ম্যাগনানভিল এলাকায় বাড়ি ফিরছিলেন লে মুরোর ডিস্ট্রিক্ট পুলিশের ডেপুটি চিফ জাঁ ব্যাপটিস্ট সালভিং। ৪২ বছরের সালভিং সে সময় সাদা পোশাকেই ছিলেন। তাঁর বাড়ির সামনেই ঘাপটি মেরে বসেছিল লারোসি। সালভিং কাছাকাছি এসে পৌঁছতেই তাঁর উপর ছুরি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে লারোসি। কুপিয়ে খুন করে সালভিংকে।
এর পর তাঁর বাড়িতে ঢুকে পড়ে লারোসি। ভিতরে ছিলেন সালভিংয়ের স্ত্রী ও তাঁদের তিন বছরের ছেলে। তাদের পণবন্দি করে সে। সালভিংয়ের স্ত্রী-র চি়ৎকার শুনে পুলিশে খবর দেন প্রতিবেশীরা। কিছু ক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ফরাসি পুলিশের এলিট স্কোয়াড। সালভিংয়ের বাড়ি-সহ গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয় পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সালভিংয়ের স্ত্রী ও শিশু সন্তানের চিৎকার শোনা যাচ্ছিল। তার মধ্যেই চড়া গলায় আইএসের নামে শপথ নিতে থাকে আততায়ী।
এই সময়ে হামলার একটি ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করে লারোসি নিজেই। ফরাসি সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, ভিডিও-য় দেখা গিয়েছে, আইএস-এর নামে শপথ নিচ্ছে লারোসি। পেছনে কাঁদছে তিন বছরের শিশুটি। লারোসি বলছে, ‘‘একে নিয়ে কী করব এখনও বুঝতে পারছি না।’’
হঠাৎই একটা ভয়াবহ বিস্ফোরণে স্তব্ধ হয়ে যায় এলাকা। সঙ্গে সঙ্গে বাড়িতে ঢোকে এলিট স্কোয়াড। লারোসিকে গুলি করে মারে তারা। ঘরেই পড়ে ছিল সালভিংয়ের স্ত্রীর মৃতদেহ। অক্ষত তাঁর শিশুসন্তান।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ একে ‘ঘৃণ্য ঘটনা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। গত কালের এই হামলার ঘটনায় প্রশ্নের মুখে ফরাসি পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy