E-Paper

ভারতীয় দূতাবাস ঘিরে বিক্ষোভ ঢাকায়, হিমশিম খেল পুলিশ

ছাত্র-জনতার নাম করে বিভিন্ন এলাকায় নীতিপুলিশি কার্যকলাপের অভিযোগ এক মাস ধরেই আসছে। সর্বশেষ বুধবার রাতের কয়েকটি ঘটনা পর্যটন নগরী কক্সবাজারে ঘটেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:১৬
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

১৩ সেপ্টেম্বর: বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পরে গত এক মাস ধরে সে দেশের যাবতীয় দুর্গতির জন্য ভারতকে দায়ী করে মন্তব্য ও বিবৃতি চলছিল। এ বার বিক্ষোভ পৌঁছে গেল ঢাকার বারিধারা কূটনৈতিক এলাকায় ভারতীয় দূতাবাসের দোরগোড়ায়। সীমান্তে হত্যা বন্ধ করার দাবি নিয়ে কয়েকশো লোকের এই বিক্ষোভ থামাতে হিমশিম খেলেন পুলিশ ও সেনা সদস্যরা। সীমান্তে বিএসএফ-এর গুলিতে নিহত কিশোরী ফেলানি খাতুনের নামে দূতাবাসের সড়কের নাম বদলে বোর্ড লাগিয়ে দিল বিক্ষোভকারীরা, যাতে লেখা— ‘শহিদ ফেলানি সড়ক’।

এ দিনের এই বিক্ষোভ অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে, এমন গোয়েন্দা রিপোর্ট পেয়ে বারিধারার ভারতীয় দূতাবাসের বাইরে পুলিশি পাহারা জোরদার করার পাশাপাশি সেনাদেরও মোতায়েন করা হয়েছিল। কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আহমেদ ইশহাক এই বিক্ষোভের নেতৃত্বে দেন। তিনি বলেন, “বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের নতজানু বিদেশ নীতির কারণে সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যা করা হচ্ছে। নতজানু বিদেশ নীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।” বিক্ষোভকারীদের পুলিশ আটকালে স্লোগান দেওয়া হয়, ‘দিল্লি না ঢাকা? ঢাকা ঢাকা!’

এ দিনই আবার বিভিন্ন ধর্মীয় সংখ্যালঘু সংগঠনের ডাকে ঢাকার শাহবাগে বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সংখ্যালঘু নেতারা অভিযোগ করেন, ঢাকার বাইরে প্রায় প্রতিদিন আক্রমণ ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন তাঁরা। সরকারের পদাধিকারীরা শুধু নীতিবাক্য শুনিয়ে যাচ্ছেন। গত এক সপ্তাহে নতুন উপসর্গ শুরু হয়েছে, সংখ্যালঘু কিশোরীকে তুলে নিয়ে যাওয়া। একের পর এক অন্তত ৭টি এমন ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ অভিযোগ নিলেও সক্রিয় হয় না। শাহবাগের সমাবেশে এ দিন দুপুর থেকে ঢাকা কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায়।

ছাত্র-জনতার নাম করে বিভিন্ন এলাকায় নীতিপুলিশি কার্যকলাপের অভিযোগ এক মাস ধরেই আসছে। সর্বশেষ বুধবার রাতের কয়েকটি ঘটনা পর্যটন নগরী কক্সবাজারে ঘটেছে। এখানে ‘শালীন পোশাক’ না পরার অভিযোগে বেশ কিছু মহিলাকে গণহেনস্থা করা হয়েছে। এলাকার ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কের নেতৃত্বে জনা পঞ্চাশ লোক এই কাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সমাজমাধ্যমের ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, সাদা চুড়িদার পরা এক কিশোরীকে প্রথমে ঘিরে ধরে হেনস্থা করা হচ্ছে। তার পরে তাঁকে সাগরতীরে সকলের সামনে কান ধরে ওঠবোস করানো হচ্ছে। লাঠিসোঁটা নিয়ে ওই সমন্বয়কের নেতৃত্বে এই কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আর একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, একলা বসে থাকা এক মহিলাকে নানা প্রশ্ন করে হেনস্থা করার পরে মারের ভয় দেখিয়ে সৈকত-ছাড়া করতে।

এই পরিস্থিতিতে দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদী সরকারের সঙ্গে আলোচনা সেরে শনিবার ঢাকা পৌঁছচ্ছে আমেরিকার একটি উচ্চপদস্থ প্রতিনিধি দল।
দক্ষিণ এশিয়ার অর্থ এবং নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা জো বাইডেন সরকারের অফিসারেরা এই দলে রয়েছেন। তাঁরা ইউনূস সরকারের সঙ্গে বৈঠক করবেন। আমেরিকা কী দিশা দেয় সরকারকে, সে দিকেই এখন নজর রাজনৈতিক দলগুলির।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Indian Embassy Bangladesh

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy