অন্য দেশ থেকে আসা ছাত্রছাত্রী, সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচির অতিথি ও বিদেশি সংবাদকর্মীদের আমেরিকায় বসবাসের সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দিতে নয়া ভিসা নীতির প্রস্তাব করল ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। বুধবার সরকারি তরফে বলা হয়েছে, “নতুন নিয়মে বিদেশি পড়ুয়া, শিক্ষক, ডাক্তার ও অন্য ভিসাধারীদের আমেরিকাবাসের মেয়াদ সীমিত করা হবে।” এই নীতি অনুযায়ী, সময়ে সময়ে বর্ধিত মেয়াদের জন্য আবেদন করতে হবে ভিসাধারীদের। ভিসার ‘অপব্যবহার’ ঠেকাতে এবং সব কিছু খতিয়ে দেখে তত্ত্বাবধান করার লক্ষ্যে এই প্রচেষ্টা, দাবি করেছে হোমল্যান্ড সিকিয়োরিটি দফতর।
বিদেশি পড়ুয়া ও অতিথি বিনিময় কর্মসূচিতে আসা লোকজনের ভিসার সর্বোচ্চ ৪ বছরের মেয়াদ বেঁধে দেওয়ারকথা বলা হয়েছে প্রস্তাবিত নীতিতে। বিদেশি পড়ুয়াদের তার পরে হয় মেয়াদবৃদ্ধির আবেদন করতে হবে বা কর্মরতদের জন্য নির্দিষ্ট ভিসা নিতে হবে। বিদেশি সাংবাদিক-সহ আই ভিসাধারীদের ক্ষেত্রে ২৪০ দিনের মেয়াদ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। চিনা নাগরিকদের ক্ষেত্রে তা হবে ৯০ দিন। আই ভিসাধারীরা ২৪০ দিন পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করতে পারেন। কিন্তু বর্ধিত মেয়াদ কখনও তাঁদের কাজের জন্য নির্ধারিত সময়ের থেকে বেশি হবে না। এ ছাড়া মেয়াদ বৃদ্ধিরক্ষেত্রে দফায় দফায় যাচাইও চলবে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আগের সরকারগুলি দীর্ঘদিন ধরে বিদেশি পড়ুয়া ও অন্য ভিসাধারীদের কার্যত অনির্দিষ্ট কাল আমেরিকায় বসবাস করার অনুমতি দেওয়ার ফলে নিরাপত্তার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে, খরচ হয়েছে করদাতাদের প্রচুর অর্থ, বঞ্চিত হয়েছেন আমেরিকার নাগরিকেরা। ১৯৭৮ থেকে বিদেশি পড়ুয়ারা (এফ ভিসাধারী) অনির্দিষ্ট কালের জন্য আমেরিকায় বসবাসের সুবিধা পেয়ে এসেছেন, ‘ডিউরেশন অব স্টেটাস’ নামে যা পরিচিত। বলা হয়েছে, ‘এই উদারতার সুযোগ নিয়ে ‘চিরকালীন’ পড়ুয়া হয়ে উঠছেন অন্য দেশ থেকে আসা ছাত্রছাত্রীরা। তাঁরা আমেরিকায় থাকার জন্য অনবরত উচ্চ শিক্ষার কোর্সে নাম লিখিয়ে গিয়েছেন।’ ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টির ফ্লরিডার গভর্নর রন ডি’সান্টিস এইচ-১বি ভিসা ব্যবস্থাটা ‘পুরোদস্তুর কেলেঙ্কারি’ বলে অভিযোগ করেছেন। তাঁর বক্তব্য, “কিছু সংস্থা প্রচুর সংখ্যায় আমেরিকানদের ছাঁটাইয়ের পাশাপাশি নতুন এইচ-১বি কর্মী নিয়োগ করছে ও ওই ভিসার পুনর্নবীকরণ করে চলেছে... তাদের অধিকাংশ আবার একটাই দেশের— ভারত।”
এই নীতি প্রথম প্রস্তাবিত হয়েছিল ২০২০ সালে, প্রথম দফার ট্রাম্প সরকারের আমলে। ২০২১ সালে জো বাইডেন প্রশাসন তা প্রত্যাহার করে নেয়। প্রস্তাবিত এই নীতির ব্যপারে সাধারণ মানুষকে মতামত জানাতে ৩০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)