Advertisement
E-Paper

হ্যাকিং-এর নির্দেশ দেন স্বয়ং পুতিন, বলছে মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট

সরাসরি পুতিনই। ডোনাল্ড ট্রাম্পকে মার্কিন নির্বাচনে জেতাতে ডেমোক্র্যাট ন্যাশনাল কনভেনশনের কম্পিউটার ব্যবস্থাকে হ্যাক করার নির্দেশ দিয়েছিলেন পুতিনই। একই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রাম্পের পক্ষে সমর্থন জোটাতেও নির্দেশ দিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট স্বয়ং।

রত্নাঙ্ক ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৭ ১৭:৪৬
পুতিনের দিকে সরাসরি আঙুল তুলল আমেরিকা।

পুতিনের দিকে সরাসরি আঙুল তুলল আমেরিকা।

সরাসরি পুতিনই। ডোনাল্ড ট্রাম্পকে মার্কিন নির্বাচনে জেতাতে ডেমোক্র্যাট ন্যাশনাল কনভেনশনের কম্পিউটার ব্যবস্থাকে হ্যাক করার নির্দেশ দিয়েছিলেন পুতিনই। একই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রাম্পের পক্ষে সমর্থন জোটাতেও নির্দেশ দিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট স্বয়ং। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলির প্রকাশ করা রিপোর্টে রয়েছে এমনই অভিযোগ। পাশাপাশি এই রিপোর্টের সুপারিশ, আমেরিকার ভোটিং মেশিন এবং নির্বাচনের তথ্যভাণ্ডারের সুরক্ষা আরও বাড়ানো হোক।
রাশিয়ার হ্যাকিং নিয়ে ন্যাশনাল ইন্টালিজেন্স ডিরেক্টর জেনারেল জেমস ক্ল্যাপার, সিআইএ ডিরেক্টর জন বার্নান এবং এফবিআই ডিরেক্টর জেমস কোমি-র সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও বৈঠক হয়েছে। যদিও এর পরেও এই হ্যাকের জন্য সরাসরি রাশিয়াকে দায়ী করেননি ট্রাম্প। বরং ডেমোক্র্যাট দলের কম্পিউটার ব্যবস্থার খামতিকেই দায়ী করেছেন। রাশিয়ার পক্ষ থেকে এই রিপোর্ট নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করা হয়নি। এই হ্যাকিং-এর জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ৩৫ জন রাশিয়ার কূটনীতিক আমেরিকা থেকে বহিষ্কার করেছেন। নিউ ইয়র্ক ও মেরিল্যান্ডে রাশিয়ার দূতাবাসের দু’টি কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
নিজের নির্বাচনী প্রচার চলাকালীন ট্রাম্প সরাসরি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের প্রশংসা করেছেন। পুতিন যে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ওবামার থেকে যোগ্য তাও বলেছিলেন। এর পরেই নাকি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ক্ষমতায় আনতে উদ্যোগী হন পুতিন। নির্দেশ পৌঁছে যায় রাশিয়ার গুপ্তচর সংস্থাগুলির কাছে।
রাশিয়ার গুপ্তচরের কাজ করে দু’টি সংস্থা। একটি অসামরিক গুপ্তচর সংস্থা এফএসবি। এটি আসলে বিখ্যাত কেজিবি-র উত্তরসূরী। অন্যটি সামরিক গুপ্তচর সংস্থা জিআরইউ। পুতিনের নির্দেশ মতো কাজ শুরু হয়। নিজেদের নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হ্যাকিং-এর জগতে নামজাদা হ্যাকারদের কাজে লাগানো হয়। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার প্রকাশ করা রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান দু’দলেরই কম্পিউটার ব্যবস্থা হ্যাক করা হয়েছিল। ডেমোক্র্যাট দলের নেতাদের ই-মেলও হ্যাক করা হয়। সেখান থেকে বিতর্কিত তথ্য পেয়ে তা উইকিলিকস, ডিসিলিকস, গুসিফার-এর মতো গোপন তথ্য প্রকাশ করার অনলাইন সংস্থার কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। কিন্তু রিপাবলিকান দলের কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

আরও পড়ুন: পুতিনের পছন্দের টিলারসনকে বিদেশসচিব করছেন ট্রাম্প


এখানেই থেকে থামেনি রাশিয়া। ট্রাম্পের নানা বিতর্কিত মন্তব্য যাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, ট্রোল করে তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় যাঁরা এই ট্রোলে সাহায্য করেছেন তাঁদের অর্থও দেওয়া হয়েছে। তবে গুপ্তচরবৃত্তির সনাতন ধর্ম মেনে রাশিয়ার গুপ্তচর সংস্থাগুলি নিজেদের দূরে রেখেছিল। কিন্তু মার্কিন গোয়েন্দারা এই হ্যাকারদের সঙ্গে রাশিয়ার গুপ্তচর সংস্থাগুলির যোগাযোগেরও প্রমাণ পেয়েছে বলে দাবি। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে অবশ্য হ্যাকারদের নাম প্রকাশ করেনি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলি। তবে পুতিনের নির্দেশেই যে এই কাজ হয়েছে তা সরাসরিই দাবি করা হয়েছে।
পুতিনের কাছে ট্রাম্পকে জিতিয়ে আনা রাজনৈতিক বিনিয়োগ। তিনি যে ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী তা বার বার জানিয়েছেন। ট্রাম্পের জয়ের পরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ না করলেও তিনি যে খুশি হয়েছেন তা লুকিয়ে রাখেননি পুতিন। তাই ওবামা যখন ৩৫ জন রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করল তখনও পাল্টা কোনও পদক্ষেপ করেনি রাশিয়া। বরং রাশিয়ার বসবাসকারী মার্কিন কূটনীতিকদের সন্তানদের ক্রেমলিনে বড়দিন ও নতুন বছরের উৎসবে যোগ দিতে বলেছেন। কারণ, পুতিন জানেন, ট্রাম্প চেয়ারে বসলে আমেরিকার নীতিতে বড়সড় পরিবর্তন আসবে। এবং রাশিয়ার পক্ষে নানা সদর্থক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন ট্রাম্প। ট্রাম্প নিজের বিদেশ সচিব হিসেবে টিলারসনকে বেছে নিয়েছেন। যাঁর সঙ্গে পুতিন-প্রশাসনের প্রকাশ্যে ঘনিষ্ঠতা আছে। এতেও পুতিনের বিশ্বাস বেড়েছে।

Vladimir Putin Barack Obama Donald Trump Hillary Clinton DC Hack
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy