বজ্রপাতেও কোনও ক্ষতি হয় না বুর্জ খলিফার। এমন ভাবেই তৈরি করা হয়েছে দুবাইয়ের ২,৭১৭ ফুট উঁচু ভবনটি। নেপথ্যে রয়েছে বিশেষ কারিকুরি, যে কারণে গোটা ভবনটিই একটি বজ্রনিরোধকের মতো কাজ করে।
সৌদি আরবে গত কয়েক দিন ধরেই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া চলছে। ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে। জলমগ্ন হয়ে পড়েছে দুবাইয়ের বেশ কিছু অঞ্চল। এরই মধ্যে সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, বুর্জ খলিফার মাথায় বজ্রপাত হচ্ছে। এমন দৃশ্য নতুন নয়। অতীতেও দেখা গিয়েছে। বছর পাঁচেক আগেও দুবাইয়ে ঝ়ড়বৃষ্টির সময়ে বুর্জ খলিফার মাথায় বজ্রপাত হতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল, বার বার বজ্রপাত হলেও ভবনের কোনও ক্ষতি হয় না।
১৬৩ তল বিশিষ্ট এই ভবনটি আশপাশের এলাকার জন্যও একটি বজ্রনিরোধক ব্যবস্থা হিসাবে কাজ করে। বুর্জ খলিফার সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে একটি ধাতব রড। এই রডটি একটি বজ্রনিরোধক ব্যবস্থা হিসাবে কাজ করে। সেই ধাতব রড দিয়ে বিদ্যুৎ মাটির দিকে পরিচালিত হয়। বজ্রনিরোধক হিসাবে বিভিন্ন বহুতল ভবনেই এই ধাতব রডের ব্যবহার দেখা যায়। তবে বুর্জ খলিফার আরও বিশেষত্ব রয়েছে। বিশেষত্ব রয়েছে এর গড়নেই। বুর্জ খলিফা এমন ভাবে নির্মিত হয়েছে, যা একটি বিশাল ‘ফ্যারাডে খাঁচা’র মতো কাজ করে। সাধারণত কোনও সার্ভার রুম বা গবেষণাগারকে বাহ্যিক তড়িচ্চুম্বকীয় ক্ষেত্র থেকে রক্ষা করতে ‘ফ্যারাডে খাঁচা’র ব্যবহার হয়।
আরও পড়ুন:
‘ফ্যারাডে খাঁচা’ হল এমন এক ধরনের প্রযুক্তি যা বাইরের কোনও তড়িচ্চুম্বকীয় ক্ষেত্রকে ভিতরে প্রভাব ফেলতে বাধা দেয়। বুর্জ খলিফার ইস্পাতের কাঠামোও একটি বিরাট ‘ফ্যারাডে খাঁচা’র মতো কাজ করে। বাইরে থেকে কোনও বৈদ্যুতিক ক্ষেত্র বা বজ্রপাত এই খাঁচার সংস্পর্শে এলে, ইস্পাতের কাঠামোর মুক্ত ইলেকট্রনগুলি দ্রুত পুনর্বিন্যাস হয়। এর মাধ্যমে বাহ্যিক তড়িৎক্ষেত্রের বিপ্রতীপে একটি সমান এবং বিপরীত ক্ষেত্র তৈরি হয়। ফলে বিপরীত ক্ষেত্রের ভিতরে বিদ্যুতের ভোল্টেজ শূন্য হয়ে যায়।
ফলে বজ্রপাত হলেও বুর্জ খলিফার ভিতরে তা কোনও ক্ষতি করতে পারে না। ভবনের মাথায় বসানো ধাতব রডের মাধ্যমে তা নির্দিষ্ট পরিবাহী পথে মাটির দিকে চলে যায়। এই কারণে বুর্জ খলিফা বজ্রপাতের ধাক্কা সামাল দিতে সক্ষম।