Advertisement
E-Paper

রক্ত, উকুনে ঢাকা শরীর দেখে পিছিয়ে যায় সেনা!

রাষ্ট্রপুঞ্জের সদস্যদের কাছে এক মহিলা বলেছেন, তাঁকে তাঁর ভাইয়ের সামনে ধর্ষণ করা হয়েছে। আর এক জন জানিয়েছেন, স্বামী আর তিন সন্তানের সামনে ধর্ষিত হতে হয়েছে তাঁকে। যাঁরা বাধা দিতে গিয়েছেন, মরতে হয়েছে তাঁদের। নয়তো চোখের সামনে মেরে ফেলা হয়েছে সেই মহিলার স্বজনকেই।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৮ ০৩:২৬
ঘরহারা: সেনাবাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের সংঘর্ষে বিধ্বস্ত সিরিয়া। নতুন করে বোমা হামলায় গত তিন দিনে আফরিন শহর ছেড়েছেন দু’ লক্ষেরও বেশি মানুষ। শনিবার গুটার জিসরিনে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। ছবি: এএফপি।

ঘরহারা: সেনাবাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের সংঘর্ষে বিধ্বস্ত সিরিয়া। নতুন করে বোমা হামলায় গত তিন দিনে আফরিন শহর ছেড়েছেন দু’ লক্ষেরও বেশি মানুষ। শনিবার গুটার জিসরিনে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। ছবি: এএফপি।

মহিলারা যেন দাবার ঘুঁটি! তেমনটাই মনে করছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।

সিরিয়ার যুদ্ধে সাধারণ মানুষ যে ভয়ঙ্কর যৌন হিংসার শিকার, তা নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কাউন্সিল নতুন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতেই মহিলাদের নিয়ে এই মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের সদস্যরা। অন্তত ৪৫০ জনকে প্রশ্ন করে তৈরি হয়েছে এই প্রতিবেদন। যা থেকে উঠে এসেছে যৌন হিংসার ভয়াবহ চিত্র। অভিযোগের তির প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বাহিনীর দিকেই।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধর্ষণ এবং যৌন হেনস্থা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সিরিয়ায় পরিবার-জীবনকে পুরোপুরি বিপন্ন করে দিতে এবং সন্ত্রাসদীর্ণ মানুষের মনোবল ভেঙে দিতে যৌন হিংসা একটা মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছে। জঙ্গি ও বিদ্রোহী খোঁজার নামে আসাদের বাহিনী যখন-তখন হানা দিয়েছে বসতবাড়িতে। তার পর অবাধে চালিয়েছে যৌন অত্যাচার। কোথাও কোথাও আবার বাড়ির বাইরে টেনে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছে বাহিনীর লোকজন। কখনও সামরিক ট্যাঙ্কের সামনে নগ্ন হয়ে হাঁটতে বলা হয়েছে মহিলাদের।

রাষ্ট্রপুঞ্জের সদস্যদের কাছে এক মহিলা বলেছেন, তাঁকে তাঁর ভাইয়ের সামনে ধর্ষণ করা হয়েছে। আর এক জন জানিয়েছেন, স্বামী আর তিন সন্তানের সামনে ধর্ষিত হতে হয়েছে তাঁকে। যাঁরা বাধা দিতে গিয়েছেন, মরতে হয়েছে তাঁদের। নয়তো চোখের সামনে মেরে ফেলা হয়েছে সেই মহিলার স্বজনকেই।

আরও পড়ুন: সিরিয়ার ধর্ষণে কাঠগড়ায় সেনাও

বিদ্রোহীদের দখলে থাকা সেনাছাউনিগুলিতেও এক ছবি। ভিড় বাসে মহিলাদের মধ্যে থেকে কাউকে হঠাৎ তুলে এনে রাখা হচ্ছে আলাদা কোনও বাড়িতে। তিনি গিয়ে দেখছেন, সেখানে আরও নির্যাতিতাকে আটক রয়েছেন। জখম শরীরে পরার জন্য কিছু দেওয়া হয়নি তাঁদের। রক্ষা পাননি বৃদ্ধারাও। অশালীন ভাবে তাঁদের দেহতল্লাশি করা হয়েছে। এক বৃদ্ধা জানিয়েছেন, সেনা অফিসার তাঁকে যৌন নির্যাতনের সঙ্গে মারধরও করেছে। আর এক বৃদ্ধার দাবি, যৌনাঙ্গে জিনিস ঢুকিয়ে অত্যাচার চালানো হয়েছে তাঁর উপরে।

সরকার-বিরোধী কথা বললেই আসাদ বাহিনী জেলে ভরেছে মহিলা সাংবাদিক, আইনজীবী এবং আন্দোলনকারীদের। বন্দি ওই মহিলাদের অবস্থা সব চেয়ে ভয়াবহ বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে। রেহাই নেই ওই মহিলাদের আত্মীয়দেরও। জেলে রয়েছে ৯ বছরের মেয়েও। সবার সামনে জেলে ধর্ষণ করা হয়েছে অন্তঃসত্ত্বাকে। জেলে ঢুকিয়েই মহিলাদের নগ্ন অবস্থায় পুরুষ অফিসারের সামনে মিছিলে হাঁটতে বাধ্য করা হয়েছে। পুরুষ অফিসার মহিলাদের যৌনাঙ্গে আঙুল ঢুকিয়ে এমন অত্যাচার করেছেন যে গুটিয়ে বসে থাকতে হয়েছে বহু ক্ষণ। যৌনাঙ্গে ও স্তনে বিদ্যুতের শক দিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। গণধর্ষণ তো চলেইছে। অকথ্য অত্যাচারে রক্ত, মূত্র আর উকুনে ঢেকে যাওয়া নারী-শরীর দেখে কখনও পিছিয়ে গিয়েছে সেনা।

আটক হয়ে নিগ্রহের শিকার হয়েছেন পুরুষরাও। অন্য বন্দিদের সামনে তাঁদেরও ধর্ষণ করা হয়েছে। পাইপ, রড দিয়ে চলেছে নির্যাতন। আসাদের বাহিনী এ সব দৃশ্য দেখে ‘আনন্দ’ পেত বলে রাষ্ট্রপুঞ্জের সদস্যদের জানিয়েছেন বন্দিরা। ২০১৫ সালের পরে আকাশপথে হামলা বেড়ে যাওয়ায় এই হিংসায় কিছুটা ছেদ পড়েছে। তার আগে সিরিয়ার দারা, হমস, দামাস্কাস এবং লাটাকিয়ায় এই ছবিটাই ছিল রোজনামচা।

Rape Syria United Nations Bashar al-Assad বাশার আল আসাদ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy