আন্দ্রেই কারলোভ মাটিতে পড়ে।ছবি: রয়টার্স
তুরস্কে রুশ রাষ্ট্রদূত খুনের ঘটনায় হত্যাকারী পুলিশ অফিসারের বাবা-মা, বোন এবং আরও তিন আত্মীয়কে আটক করল পুলিশ। তাঁদের জেরা করতে একটি দল পাঠাচ্ছে মস্কো। এই ঘটনায় সিরিয়া নিয়ে শান্তি প্রক্রিয়া ধাক্কা খেতে পারে বলে হুমকি দিয়েছে রাশিয়া। আবার রুশ রাষ্ট্রদূত হত্যার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আঙ্কারায় মার্কিন দূতাবাসের সামনে গুলি চালিয়েছে এক বন্দুকবাজ। তাকে সঙ্গে সঙ্গেই আটক করেছে পুলিশ।
গত কাল আঙ্কারায় এক শিল্প প্রদর্শনীর উদ্বোধনে গিয়েছিলেন প্রয়াত রুশ রাষ্ট্রদূত আন্দ্রেই কারলোভ। বক্তৃতার মাঝপথেই তাঁকে লক্ষ করে গুলি ছোড়ে এক যুবক। সেইসঙ্গে চিৎকার করে বলে, ‘‘আমরা আলেপ্পোয় মরছি। তুমি এখানে মরো।’’ ওই যুবকের গুলিতে আহত হন আরও তিন জন। মিনিট পঁচিশ গুলির লড়াইয়ের পরে নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে নিহত হয় আততায়ী। পরে জানা যায়, সে আঙ্কারার রায়ট পুলিশের অফিসার মেভলুত মার্ত আলতিনতাস।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, মেভলুত অসুস্থতার কারণে সম্প্রতি ছুটি নিয়েছিল। গত কালের অনুষ্ঠানে পুলিশের পরিচয়পত্র দেখিয়ে ঢুকে পড়ে সে। তার সঙ্গে কোনও জঙ্গি সংগঠনের যোগের কথা এখনও জানা যায়নি। তবে একটি সূত্রের দাবি, তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোগানের বিরুদ্ধে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের চেষ্টায় যুক্ত ছিল মেভলুত।
তবে তুরস্ক যা-ই বলুক, রাষ্ট্রদূত হত্যার পিছনে গভীর ষড়যন্ত্র আছে বলেই মনে করছে মস্কো। আপাতত তুর্কি পুলিশের হেফাজতে মেভলুতের বাবা-মা, বোন ও আরও তিন আত্মীয়। আঙ্কারায় গিয়ে তাঁদের জেরা করবেন রুশ গোয়েন্দারা। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মতে, ‘‘রাশিয়া-তুরস্ক সম্পর্কে আঘাত হানতেই এই হামলা। ঘটনার পিছনে কারা আছে তা খুঁজে বের করতে হবে।’’
গত নভেম্বরে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে সিরিয়া সীমান্তে একটি রুশ যুদ্ধবিমান নামানোর অভিযোগ ওঠে তুরস্কের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় চিড় ধরে দু’দেশের সম্পর্কে। তুরস্কের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মস্কো। তাছাড়া, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ নিয়েও দু’দেশের সম্পর্ক যথেষ্ট তিক্ত হয়েছিল। তবে সম্প্রতি আলেপ্পোয় সংঘর্ষবিরতির সমঝোতা নিয়ে মধ্যস্থতা করার সময়ে সেই বরফ কিছুটা গলেছে। কিন্তু রাষ্ট্রদূতের হত্যাকারী আলেপ্পোরই নাম নেওয়ায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ফের বিগড়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। পুতিনও প্রচ্ছন্ন হুমকির সুরে বলেছেন, ‘‘এমন ঘটনা সিরিয়া নিয়ে আলোচনায় প্রভাব ফেলতে পারে।’’
রুশ রাষ্ট্রদূত হত্যার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আঙ্কারায় মার্কিন দূতাবাসের সামনে গুলি চালায় এক ব্যক্তি। ওই ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। বন্দুকবাজকে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করে পুলিশ। আঙ্কারা প্রশাসন জানিয়েছে, ধৃত ব্যক্তির নাম শাহিন এস। ওই ঘটনার পরে আঙ্কারার দূতাবাস ও ইস্তানবুল ও আদানার কনস্যুলেট বন্ধ রেখেছে ওয়াশিংটন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy