এস জয়শঙ্কর (বাঁ দিকে) এবং অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। —ফাইল চিত্র।
কানাডার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে টানাপড়েনের আবহেই বৃহস্পতিবার আমেরিকার বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সেই বৈঠকে কানাডা প্রসঙ্গ উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে বৈঠকের আগেই এই বিষয়ে মুখ খুলেছে আমেরিকা। সে দেশের বিদেশ দফতরের অন্যতম মুখপাত্র ম্যাথু মিলার জানিয়েছেন, কানাডার তরফে শুরু হওয়া তদন্ত প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করার জন্য তাঁরা ভারতকে ‘উৎসাহিত’ করেছেন। আমেরিকার এই বার্তা থেকে অনেকেরই অনুমান যে, বৈঠকে এই বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইছে তারা।
এর আগে চতুর্দেশীয় অক্ষ কোয়াডের বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে ব্লিঙ্কেন এবং জয়শঙ্করের মধ্যে কথা হয়েছিল। তবে দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে কথা বলার অবকাশ সেখানে ছিল না। তাই আমেরিকায় ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসে জয়শঙ্কর কানাডা প্রসঙ্গ তুলতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতের তরফে এখনও পর্যন্ত কানাডার প্রতি কড়া বার্তাই দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনের বক্তৃতায় নাম না করে কানাডাকে নিশানা করেছিলেন জয়শঙ্কর। কিন্তু তার পর ‘কাউন্সিল অব ফরেন রিলেশনস’-এ দেওয়া বক্তৃতা এবং প্রশ্নোত্তরে সেই আড়ালটুকু ঘুচিয়ে আক্রমণাত্মক হতে দেখা যায় তাঁকে।
জয়শঙ্কর তোপ দেগে বলেন, “গত কয়েক বছরে কানাডায় পরিকল্পিত অপরাধের সংখ্যা ব্যাপক ভাবে বেড়েছে। বিচ্ছিন্নতাবাদ, উগ্রপন্থার কারণেই এই অপরাধ ও হিংসা। কানাডা থেকে কী কী অসামাজিক কার্যকলাপ চলে, সেই নিয়ে প্রচুর তথ্য ওদের দিয়েছি আমরা। জঙ্গি নেতাদের চিহ্নিত করে প্রত্যর্পণ করতেও বার বার অনুরোধ জানানো হয়েছে।” বিচ্ছিন্নতাবাদী শিখ নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জর হত্যা সংক্রান্ত বিষয়ে জয়শঙ্কর বলেন, আমরা কানাডা সরকারকে স্পষ্ট ভাবে জানিয়েছি যে, এটা ভারত সরকারের নীতি নয়।” তবে প্রাসঙ্গিক তথ্য বা নথি দেওয়া হলে ভারত যে তদন্ত করে দেখতে রাজি, তা-ও জানিয়েছেন তিনি।
জয়শঙ্করের সঙ্গে ব্লিঙ্কেনের বৈঠকে কানাডা প্রসঙ্গ উঠবে কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে জো বাইডেন সরকারের অন্যতম মুখপাত্র মিলার বলেন, “আগেই স্পষ্ট করেছি যে, কানাডার তদন্তে সহযোগিতা করার জন্য আমরা ভারতকে উৎসাহিত করেছি। আমরা এটি করে যাব।” উল্লেখ্য যে, জুন মাসে খলিস্তানপন্থী সংগঠন ‘খলিস্তান টাইগার ফোর্স’ (কেটিএফ)-এর প্রধান তথা কানাডার সারের গুরু নানক শিখ গুরুদ্বার সাহিবের প্রধান নিজ্জরকে গুরুদ্বার চত্বরের মধ্যেই গুলি করে খুন করা হয়। সেই ঘটনায় ভারত সরকারের এজেন্টরা জড়িত, এমনটা মনে করার ‘বিশ্বাসযোগ্য কারণ’ রয়েছে বলে সম্প্রতি দাবি করেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এই দাবিকে ‘অবাস্তব’ এবং ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে উড়িয়ে দেয় ভারত। ঘটনার দায়ও অস্বীকার করে ভারত। ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় সংহতির বিরোধী শক্তিকে কানাডা মদত দিচ্ছে বলে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে অভিযোগ করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy