জলবায়ু পরিবর্তন সীমাহীন। ক্রমশই বাড়ছে পৃথিবীর উষ্ণতা। বিভিন্ন দেশের সরকার, বড় বড় শিল্পপতিদের উপর চাপ বাড়ছে— শুধু কথার কথা নয়, কাজে করে দেখাতে হবে। এ রকম এক পরিস্থিতিতে ব্রাজ়িলের বেলেম শহরে বসেছে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সম্মেলন ‘কনফারেন্স অব পার্টিস’ (সিওপি৩০)। অ্যামাজ়নের জঙ্গলের দেশ ব্রাজ়িল। এ বারের সম্মেলনের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হওয়ার কথা ছিল ৫৫ লক্ষ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই বৃষ্টিঅরণ্য, যা দিনের দিন গাছ কাটা ও বেআইনি খননকার্যে শেষ হয়ে যাচ্ছে। যদিও আলোচনার মূলে রইল ভারত, চিন, আমেরিকার মতো দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের অনুপস্থিতি।
ফ্রান্সের প্যারিস বা মিশরের শর্ম এল-শেখ শহরের মতো ঝাঁ চকচকে চোখ ধাঁধানো নয় বেলেম। সেই কারণেই হয়তো এ বারের সম্মেলন নিয়ে বিশেষ আলোচনা নেই। লাতিন আমেরিকার এই দেশে এ বছর সব রাষ্ট্রনেতারা আসেনওনি। ভারত, আমেরিকা, চিন, রাশিয়া— চার দেশের রাষ্ট্রপ্রধানই অনুপস্থিত। অথচ জনসংখ্যা ও অর্থনীতির বিচারে চারটি দেশই গুরুত্বপূর্ণ।
জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে সিওপি-তে যা যা লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়ে থাকে, তা নিয়ে বরাবরই নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ বিষয়ে আমেরিকার সঙ্গে মিল রয়েছে চিনেরও। রাশিয়া আবার যুদ্ধ নিয়ে ব্যস্ত। তবে ভারতের রাষ্ট্রপ্রধানের অনুপস্থিতি অনেকেরই চোখ টেনেছে। কিন্তু এই মনোভাবের জন্য ট্রাম্পকেই কাঠগড়ায় তুলছেন অনেকে।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, জলবায়ু সম্মেলনের গুরুত্ব সার্বিক ভাবে কমছে কিছু রাষ্ট্রনেতার আচরণে। যেমন ট্রাম্প। গত সেপ্টেম্বর মাসে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘জলবায়ু পরিবর্তন হল বিশ্বের সবচেয়ে বড় জালিয়াতি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সমগ্র বিশ্ববাদী ধারণা, একটি শিল্পসমৃদ্ধ দেশকে যন্ত্রণা দেওয়া, কোনও সমাজকে ধ্বংস করে দেওয়া... এ সব ভাবনা অবিলম্বে খারিজ করা উচিত।’’ আমেরিকার নাম না-করেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ব্রাজ়িলের প্রেসিডেন্ট লুই ইনাসিও লুলা ডা সিলভা বলেন, “কিছু কট্টরপন্থী শক্তি ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে। বিশ্ব উষ্ণায়ন পৃথিবীকে চিরকালের মতো বদলে দিচ্ছে, আর এরা তরুণ প্রজন্মকে দুষছে।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)