Advertisement
১০ মে ২০২৪
sheikh hasina

রোহিঙ্গা সঙ্কট, হাসিনার সফরে সরব হবে ঢাকা

রোহিঙ্গার পাশাপাশি তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নের দিকটিও বাংলাদেশের অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে। জুলাই মাসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে হাসিনা দেখা করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন।

শেখ হাসিনা। ফাইল চিত্র

শেখ হাসিনা। ফাইল চিত্র

অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:৪৩
Share: Save:

সম্প্রতি ভারত থেকে কাঁটাতার পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন ঢাকা। সূত্রের খবর, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরে নয়াদিল্লিকে এই বিষয়টি জানানো হবে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে সোনালি অধ্যায় চলছে। কূটনীতিকরাও সে কথাই বলে থাকেন। হাসিনার আসন্ন সফরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সেই অধ্যায়কে আরও বিস্তৃত করতে দু’দেশই সক্রিয়। বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, যোগাযোগ, শক্তির মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে একাধিক চুক্তিপত্র সই হওয়ার কথা রয়েছে দু’দেশের মধ্যে। যৌথ বিবৃতিতেও চেষ্টা থাকবে দ্বিপাক্ষিক বকেয়া বিষয়গুলি নিয়েজট ছাড়ানোর।

তারই মধ্যে বেশ কিছু বিষয়কে আলোচনা এবং যুগ্ম বিবৃতির অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছে বাংলাদেশ। রোহিঙ্গা সমস্যা যার অন্যতম। হাসিনা ভারতে নামার তিন দিন আগে ঢাকার সূত্র জানাচ্ছেন, ‘বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত-সহ এই গোটা অঞ্চলই রোহিঙ্গা সঙ্কটে আজ না হোক কাল ভুক্তভোগী হবে। তারা নির্বিঘ্নে নিজেদের দেশে ফিরে গেলে ভারতেরও মঙ্গল। ভারত ইদানীং রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক মঞ্চ থেকে মায়ানমার প্রশ্নে অনুপস্থিত থাকার কূটনীতি অবলম্বন করেছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, রোহিঙ্গা শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা অঞ্চলের বিপদের কারণ।’ পাশাপাশি বলা হচ্ছে, ভারত থেকে সীমান্ত টপকে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করছে। ভারতকে অনুরোধ করা হবে, বিষয়টির দিকে নজর রাখার জন্য।

রোহিঙ্গার পাশাপাশি তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নের দিকটিও বাংলাদেশের অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে। জুলাই মাসে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে হাসিনা দেখা করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন। কূটনৈতিক মহলের মতে, হাসিনার রাজনৈতিক প্রয়োজন রয়েছে ভারতে এসে মুখোমুখি মমতার সঙ্গে তিস্তা নিয়ে কথা এগোনোর। কারণ বাংলাদেশে এই নিয়ে আবেগ এবং আকাঙ্ক্ষা এখনও যথেষ্ট। তবে এখনও পর্যন্ত খবর, কেন্দ্রের পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমন্ত্রণ যায়নি। ঢাকার শীর্ষ সূত্রের বক্তব্য, ‘৯৬ সালে গঙ্গা চুক্তি সম্পাদনের পরে তিস্তার বিষয়টি ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ২০১১ সালে ভারত রাজি হয় তিস্তার জলের ৩৭.৫ শতাংশ বাংলাদেশের সঙ্গে ভাগ করে নিতে। তবে এ ব্যাপারে ভারত এখনও কোনও সিদ্ধান্তে আসেনি। যদিওএ নিয়ে বহু বার উদ্যোগী হতে দেখা গিয়েছে দু’দেশকে।’

সীমান্ত হত্যার বিষয়টিও কাঁটার মতো হয়ে রয়েছে সোনালি অধ্যায়ে। এ বারের সফরে বিষয়টিকে গুরুত্ব গিয়ে উপস্থাপিত করতে চাইছে আওয়ামী লীগ সরকার। বাংলাদেশ সূত্রের বক্তব্য, ‘গত দু’দশকে সীমান্ত রক্ষীদের গুলিতে অন্তত ১২০০ মানুষ মারা গিয়েছেন। ২০২১ সালে মারা গিয়েছেন ১১ জন। দিল্লি বার বার আশ্বস্ত করেছে, সীমান্তে হত্যার ঘটনা শূন্যে নামিয়ে আনা হবে। কিন্তু মৃত্যু ঘটেই চলেছে। দু’দেশের সীমান্তে যাতে কাউকে হত্যা করা না-হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। দেখতে হবে যাতে বন্দুকের গুলি ছোড়ার মতো ঘটনা না-ঘটে।’ পাশাপাশি আরও একটি নতুন প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে জানাচ্ছে সূত্র। ভারত এবং মায়ানমার সীমান্তের মতো, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের মধ্যবর্তী একটি নির্দিষ্ট এলাকা যাতায়াতের জন্য উন্মুক্ত করে রাখা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE