শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পরে প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের সঙ্গে দীনেশ গুণবর্ধনে (ডান দিকে)। শুক্রবার কলম্বোয়। ছবি: রয়টার্স।
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন দীনেশ গুণবর্ধনে। ৭৩ বছর বয়সি কট্টর বামপন্থী এই নেতা নতুন প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের স্কুলের সহপাঠী ছিলেন।
শ্রীলঙ্কা পার্লামেন্টের ক্ষমতাসীন জোটের অন্যতম দল এমইপি-র নেতা গুণবর্ধনে। এর আগে তিনি দেশের বিদেশমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীর ছিলেন। এ বছর এপ্রিলে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে তাঁকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দায়িত্ব দেন। দীনেশের মা-বাবা পরাধীন ভারতে স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন। শ্রীলঙ্কায় আসার পরে বহু দশক ধরে গুণবর্ধনে পরিবার দেশের রাজনীতিতে যুক্ত। দীনেশের বাবা ফিলিপ ও দাদা ইন্দিকা দু’জনেই নামজাদা রাজনীতিবিদ। তা ছাড়া, দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের ঘনিষ্ঠ তিনি। ফলে এই টালমাটাল সময়ে যে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ‘বন্ধু’ দীনেশকেই বেছে নিয়েছেন রনিল, তাতে বিস্মিত নয় সরকারপক্ষ বা বিরোধী— কেউই।
গত কাল প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নিয়েছেন বিক্রমসিঙ্ঘে। আর আজই সরকার-বিরোধী বিক্ষোভকারীদের উপরে ব্যাপক হামলা চালায় পুলিশ ও সেনা। ন’জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। লাঠিচার্জে অন্তত ৫০ জন বিক্ষোভকারী জখম হয়েছেন। গুরুতর জখম দু’জন হাসপাতালে ভর্তি। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ অনুযায়ী, সমুদ্রের সামনে প্রেসিডেনশিয়াল সচিবালয় চত্বরে যেখানে গত কয়েক দিন ধরে অবস্থান করছিলেন বিক্ষোভকারীরা, সেখানেই আজ সকালে হাজির হয় পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর বিশাল দল। ব্যারিকেড ভেঙে, তাঁবু ছিঁড়ে, বিক্ষোভকারীদের অস্থায়ী বাসস্থানের সব জিনিসপত্র ভেঙেচুরে লাঠি চালাতে শুরু করে তারা। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করাই তাদের উদ্দেশ্য ছিল। বিক্ষোভকারীরা অবশ্য আগে জানিয়েছিল, শুক্রবার দুপুরের মধ্যেই তাঁরা সচিবালয় চত্বর ছেড়ে চলে যাবেন। কিন্তু এর কয়েক ঘণ্টা আগে পুলিশের এই নজিরবিহীন হামলায় বিস্মিত বিক্ষোভকারীরা। এক বিক্ষোভকারীর আক্ষেপ, ‘‘শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের শায়েস্তা করতে সেনা-পুলিশ নামিয়ে দেওয়া— এটাই তা হলে নতুন প্রেসিডেন্টের আসল চেহারা।’’ আর বিরোধী নেতা সাজিথ প্রেমদাসা বলেন, ‘‘ক্ষমতায় এসেই বিক্রমসিঙেঘ অহেতুক পেশি আস্ফালন করলেন।’’ কলম্বোয় নিযুক্ত ব্রিটেন ও আমেরিকার রাষ্ট্রদূত আজ এই পুলিশি তাণ্ডবের প্রতিবাদ করে বিবৃতি জারি করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy