ফাইল চিত্র।
টাইফুন, টর্নেডো, সাইক্নোন আকছার দেখে আমেরিকা। কিন্তু কাক ডাকা ভোর থেকে নিশি ডাকা রাত পর্যন্ত এত টুইট এর আগে আর কখনও দেখেনি মার্কিন মুলুক।
তাই দশ দিক থেকে ভেসে আসছে এখন একটাই কাতর আর্জি! ‘ঢের হয়েছে, এ বার বন্ধ করুন!’
নিন্দুক, সমালোচকরা নন। যাঁরা তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলে পরিচিত, যাঁরা তাঁর খুব কাছের বৃত্তে আছেন, ঘোরাফেরা করেন সব সময়, ফিসফিস করে নয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তাঁরা প্রকাশ্যেই বলতে শুরু করে দিয়েছেন, ‘ঢের হয়েছে, টুইটের ঝড় এ বার বন্ধ হোক।’ কেউ বলছেন, ‘টুইটে টুইটে পাগল হয়ে উঠেছি আমরা!’ কেউ বা বলছেন, ‘এত এত টুইট বিভীষিকা হয়ে উঠেছে হোয়াইট হাউসের কাছে!’
মঙ্গলবার নিউইয়র্কে একটি সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বন্ধু টম বারাক প্রকাশ্যেই বলেছেন, ‘‘ওফ্! আর পারা যাচ্ছে না! টুইটে টুইটে আমাদের সকলের পাগল পাগল দশা হয়েছে। এ সব করে তো কোনও লাভ হচ্ছে না। ঢের হয়েছে, এ বার এ সব বন্ধ হোক।’’
ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বন্ধু বারাকই শুধু নন, নির্বাচনী প্রচারে যাঁরা
ট্রাম্পের জন্য জান, মান বাজি ধরেছিলেন, রিপাবলিকান পার্টির সেই সদস্য, সমর্থকরাও নানা ভাবে, সরাসরি বা একে, ওকে দিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কানে দিনকয়েক আগে একই পরামর্শ পৌঁছে দিয়েছেন। দিয়ে চলেওছেন। ট্রাম্পের সমর্থকদের বক্তব্য, একের পর এক টুইটের ঝড়ে ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে প্রেসিডেন্টের। নষ্ট হচ্ছে রিপাবলিকান পার্টির ভাবমূর্তিও।
কিন্তু কে কার কথা শোনেন! রিপাবলিকান পার্টির সদস্য, সমর্থকরাই শেষমেশ নিজেদের প্রশ্ন করতে শুরু করে দিয়েছেন, ‘‘চোরা কি শোনে ধর্মের কাহিনী?’’
ঘনিষ্ঠ বন্ধু বারাকের পরামর্শকেও তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। ‘ঢের হয়েছে, এ বার ও সব বন্ধ কর’, বন্ধু বারাক এ কথা বলার পরেও জঙ্গি হামলার ঘটনার পর টুইট করে প্রকাশ্যে লন্ডনের মেয়রকে তুলোধনা করেছেন। আমেরিকায় অনুপ্রবেশ বন্ধ করার ব্যাপারে তাঁর প্রশাসনিক উদ্যোগের পথে মার্কিন ন্যায় দফতর যে আইনি প্রতিবন্ধকতার কথা বলেছে, টুইট করে তাকে প্রকাশ্যে সমালোচনা করতেও পিছপা হননি ট্রাম্প। টুইট করে সমালোচনা করেছেন তাঁরই প্রশাসনের একটি দফতরের।
আরও পড়ুন- পাকিস্তানে সামরিক ঘাঁটি বানাচ্ছে চিন, রিপোর্ট পেন্টাগনের
পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে ট্রাম্পের বহু পুরনো বন্ধু, হোয়াইট হাউসের কাউন্সেলর কেলিয়ান কনওয়ের স্বামী জর্জ কনওয়ে বলেছেন, ‘‘কেউ যদি প্রশাসনের কোনও আইনি বিষয়ের সমালোচনা করেন টুইটে, নিজে সেই প্রশাসনের মাথায় বসে থেকে, তা হলে সাধারণ মানুষের কাছে অন্য রকম বার্তা পৌঁছয়। এতে প্রশাসন সম্পর্কে সন্দিহান হয়ে পড়ে মানুষ। দ্বিধান্বিত হয়ে পড়েন সদস্য, সমর্থকরাও। যে যেন ভাবে পাগলামি করতে ভালবাসেন!’’
এর পর কী বলছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট?
হোয়াইট হাউসের খবর, ঘনিষ্ঠ মহলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, টুইট তিনি চালিয়ে যাবেন।
ফলে, টুইটের সাইক্লোন, টর্নেডো, টাইফুনের হাত থেকে শিগগিরই আমেরিকার রেহাই মিলবে, এমন দুরাশা নেই ট্রাম্পের কট্টর সমর্থকদেরও!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy