সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে (ভারতীয় সময়) আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) ছাড়ল স্পেসএক্সের ড্রাগন যান। তাতে সওয়ারি সুনীতা উইলিয়ামস এবং তাঁর সঙ্গী নভশ্চর বুচ উইলমোর। ন’মাস মহাকাশে কাটানোর পর অবশেষে পৃথিবীর উদ্দেশে রওনা দিলেন তাঁরা। ভারতীয় সময় বুধবার ভোররাতে ড্রাগন নামবে আমেরিকার ফ্লরিডার উপকূলে। এমনই জানাচ্ছে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।
গোটা বিশ্বের মানুষ সুনীতাদের ফেরার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন। এক এক মিনিট, যেন এক এক ঘণ্টা! তবুও সকলের একটাই প্রার্থনা, নির্বিঘ্নে পৃথিবীতে ফিরে আসুক ড্রাগন, ফিরে আসুন সুনীতারা! তবে অনেকেরই কৌতূহল, এই ১৭ ঘণ্টা কী কী প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে সুনীতাদের ফিরতে হবে?
সোমবার সকাল থেকেই গোটা অবতরণ প্রক্রিয়ার সরাসরি সম্প্রচার করছে নাসা। রবিবারই আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) পৌঁছোয় স্পেসএক্সের ড্রাগন যান। মঙ্গলবার আইএসএস থেকে সুনীতা এবং বুচ উঠে পড়েন ড্রাগন যানে। তার পর শুরু হয় আন ডকিং প্রক্রিয়া। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার কিছুটা পরে (ভারতীয় সময়) সেই প্রক্রিয়া শেষ হয়। সুনীতাদের নিয়ে আইএসএস ছাড়ে ড্রাগন যান।
মহাকাশ থেকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করা খুব সহজ নয়। বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের আগেই যান তার ডানা খুলে ফেলবে। যানের একটি অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে ড্রাগন থেকে। কিন্তু বায়ুমণ্ডলের তাপ সহ্য করার মতো অনুকূল পরিস্থিতিও তৈরি করতে হবে ড্রাগন যানটিকে। সেই কারণে ওই যানের মধ্যে থাকা বিশেষ তাপ ঢাল খুলবে। তা তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে সুনীতাদের রক্ষা করবে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পরই গতি কমিয়ে ফেলবে যানটি। সেই কারণে চারটি প্যারাশুট খুলে দেবে ড্রাগন যান। তাতে ভর করেই যানটি নেমে আসবে পৃথিবীর বুকে, ফ্লরিডার সমুদ্রে! সেখানে সেই যানকে উদ্ধার করার জন্য থাকবে বিশেষ জাহাজ। তাতে চাপিয়েই উপকূলে ফিরিয়ে আনা হবে সুনীতাদের। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ভারতীয় সময় ভোর ৩টে ২৭ মিনিট নাগাদ পৃথিবীর মাটি ছোঁবেন তাঁরা।
আরও পড়ুন:
গত বছরের জুন মাসে আট দিনের সফরে মহাকাশে গিয়েছিলেন সুনীতা এবং বুচ। কিন্তু তাঁদের বাহক বোয়িং স্টারলাইনারে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ে। ফলে সুনীতাদের ঘরে ফেরা আটকে যায়। তার পর বার বার ফেরানোর চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু এক বারও সফল হয়নি। প্রায়ই কোনও না কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সুনীতাদের ফেরার পথে। অবশেষে পৃথিবীতে ফেরার পথ ধরলেন সুনীতারা।