প্রধানমন্ত্রী গত বছর মায়ানমার সফরে গিয়ে যে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন, আজ সেই পুরনো ক্ষত সারানোর চেষ্টা করলেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ।
সুষমার দু’দিনের মায়ানমার সফরের শেষে এমনই মনে করছেন কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। আজ সে দেশের শীর্ষ নেত্রী তথা স্টেট কাউন্সিলর আউং সান সু চি এবং প্রেসিডেন্ট এইচ ই দাও-এর সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদ, দ্রুত এবং স্থায়ী প্রত্যাবর্তনে জোর দিয়েছেন সুষমা। এ ব্যাপারে ভারত যে মায়ানমারকে সাহায্য করতে রাজি, সে কথাও জানান বিদেশমন্ত্রী।
গত বছর ডোকলাম বিতর্ক মেটার ঠিক পরই মায়ানমারে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু বাংলাদেশের উষ্মা বাড়িয়ে তিনি রোহিঙ্গা প্রশ্নে সমর্থন করে বসেন মায়ানমারকেই। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে পাকিস্তানের জঙ্গি সংগঠনগুলির যোগাযোগ রয়েছে, এমন কথাও বলেন। ক্ষুব্ধ শেখ হাসিনা সরকার সে সময় ভারতের ভূমিকার সমালোচনা করে বলেছিলেন, তাঁরা সর্ববিষয়ে নয়াদিল্লির পাশে থাকেন। কিন্তু প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ শরণার্থী নিয়ে যখন হিমসিম খাচ্ছে ঢাকা, নয়াদিল্লি তাদের ফেরত পাঠাতে মায়ানমারকে চাপ দেওয়া দূরস্থান, উল্টে সে দেশের রোহিঙ্গা-নীতিকেই উৎসাহিত করছে।
এর পর চিন একসঙ্গে মায়ানমার ও বাংলাদেশকে কাছে টানার কৌশল শুরু করে। উভয়সঙ্কটে পড়ে (কারণ, ভারত মায়ানমারকে চটাতে চাইছিল না, চিন-মায়ানমার ঘনিষ্ঠতার কথা ভেবেই) এরপরই অবস্থান পাল্টাতে হয় সাউথ ব্লককে। রোহিঙ্গাদের বাসস্থান রাখাইন প্রদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মডেল তৈরি করে সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয় সু চি-কে। সঙ্গে অনুরোধ করা হয়, এ বার তাঁরা ফিরিয়ে নিন শরণার্থীদের।
আজ সু চি এবং সুষমার বৈঠকের পরে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার পক্ষে সওয়াল করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘রাখাইন প্রদেশ থেকে বিতাড়িত জনগোষ্ঠীকে দ্রুত নিরাপদে ও স্থায়ীভাবে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ভারত আজ মায়ানমারকে জানিয়েছে। সে প্রদেশে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ ভারত শুরু করেছে। উদ্বাস্তুদের জন্য আবাসন প্রকল্প গড়ার কাজ শুরু হয়েছে।’’
দু’দেশের মধ্যে সাতটি চুক্তিপত্রও সই হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল স্থলসীমান্ত পারাপার সংক্রান্ত। এই চুক্তির ফলে তীর্থযাত্রা, চিকিৎসা এবং শিক্ষা পরিষেবার কারণে পরস্পরের দেশে যাতায়াত সহজ হবে, অবশ্যই বৈধ পাসপোর্ট, ভিসা-সহ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy