লুইসা ভন ট্র্যাপের ভূমিকায় (বাঁ দিকে)। বড় হয়ে হেদার মেনজিস ইউরিখ।
স্বামীর মৃত্যুর পরে ক্যানসার গবেষণায় তহবিল সংগ্রহের কাজে নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন তিনি। মাসখানেক আগে তাঁর নিজেরও মস্তিষ্কে ক্যানসার ধরা পড়ে। কিন্তু চিকিৎসকদের বিশেষ সুযোগ দিলেন না হেদার মেনজিস ইউরিখ। ক্রিসমাস ইভে চলে গেলেন তিনি। লুইসা ভন ট্র্যাপ নামে দুনিয়া চিনত যাঁকে। বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর।
হলিউডের ক্লাসিক ছবিগুলির মধ্যে অন্যতম ‘সাউন্ড অব মিউজিক’-এর সাত ভাই-বোনের মধ্যে মেজো মেয়ে লুইসার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন হলিউড অভিনেত্রী হেদার। মাত্র চোদ্দো বছর বয়সে লুইসার চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ আসে হেদারের কাছে। আদতে কানাডার বাসিন্দা হেদার জীবনের বেশির ভাগ সময়টা অবশ্য আমেরিকাতেই কাটিয়েছেন। ‘সাউন্ড অব মিউজিক’-এর সাফল্যের পরে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। নাচ, গান, ব্যালে নিয়েই থাকতেন। করেছেন বেশ কয়েকটি হলিউডের ছবিও। যার মধ্যে অন্যতম ‘হাওয়াই’, ‘পিরানহা’, ‘হাউ সুইট ইট ইজ’, ‘এনডেনজারড স্পিসিস’। ‘লোগানস রান’-এ মতো টিভি সিরিজেও দেখা গিয়েছে তাঁকে।
হেদারের ছেলে রায়ান ইউরিখ একটি বিবৃতিতে জানান, গত রবিবার কানাডার বাড়িতে মৃত্যু হয় হেদারের। রায়ান বলেছেন, ‘‘মা এক প্রকৃত অভিনেত্রী এবং নর্তকী যিনি নিজের জীবন উপভোগ করতে জানতেন।’’ রায়ান জানান, মাত্র এক মাস আগে ক্যানসার ধরা পড়ে তাঁর মায়ের। তবে মৃত্যুর সময় তেমন কষ্ট পাননি।’ ‘সাউন্ড অব মিউজিক’ যে গীতি নাট্যকার সংস্থার মূল প্রযোজনা, সেই রজার্স অ্যান্ড হ্যামারস্টেইনও হেদারের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে।
১৯৬৫ সালে আমেরিকায় মুক্তি পেয়েছিল মিউজিক্যাল ড্রামা ‘সাউন্ড অব মিউজিক’। বাকি তো ইতিহাস। একসঙ্গে অনেকগুলি অস্কার পেয়েছিল জুলি অ্যান্ড্রুজ আর ক্রিস্টোফার পামার অভিনীত এই ছবিটি। বছরের পর বছর ধরে বিশ্বের দর্শক আপন করে নিয়েছেন ভন ট্র্যাপ ভাই-বোন আর তাদের গভর্নেসকে। ছবিতে বাড়িতে আসা নতুন গভর্নেস মিস মারিয়াকে বিভ্রান্ত করার জন্য মাঝে মধ্যেই তার পরের বোন ব্রিজিতা হওয়ার অভিনয় করত লুইসা ভন ট্র্যাপ। আর লুইসাকে প্রায় অর্ধ শতক ধরে ভালবেসে এসেছেন বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ।
১৯৬৯ সালে প্রথম বিয়ে। চার বছর টিকেছিল জন ক্লুয়েটের সঙ্গে সম্পর্ক। প্রথম বিচ্ছেদের দু’বছরের মাথায়, ১৯৭৫ সালে অভিনেতা রবার্ট ইউরিখকে বিয়ে। সেই সম্পর্কে ভাঙন ধরেনি। ২০০২ সালে ক্যানসারে মৃত্যু হয় রবার্টের। স্বামী চলে যাওয়ার পরে ওই অসুখের জন্য আরও উন্নততর গবেষণার জন্য তহবিল সংগ্রহের দিকে নজর দেন হেদার। তৈরি করেন রবার্ট ইউরিক ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে হেদার লিখেছেন, ‘‘২০০২ সালে আমার স্বামী লড়াইটা হেরে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার পর থেকে তাঁর স্বপ্ন নিয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে আমি বদ্ধপরিকর। এমন একটা দুনিয়া গড়তে হবে যেখানে ক্যানসার মানে হবে এক যুদ্ধ জয়ের স্মৃতি।’’
গত বছর লুইসার বড় দিদি লিজল ভন ট্র্যাপের চরিত্রাভিনেতা চারমিয়ান কারের মৃত্যু হয়েছিল। এ বছরের শেষে চলে গেলেন লুইসা। ভন ট্র্যাপ ভাই-বোনেদের জন্য তাই মন খারাপ গোটা দুনিয়ার সিনে প্রেমিকদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy