E-Paper

পাকিস্তান সীমান্তে হামলা চালিয়ে ‘জবাব’ তালিবানের

নিহত হয়েছেন আফগানিস্তানের ৩ জন সাধারণ নাগরিকও। আহত অনেকে। তবে আফগান সরকারের তরফে হতাহতের সংখ্যা নিয়ে মুখ খোলা হয়নি।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:৪০
পাকিস্তানি বায়ুসেনার হামলার জবাব দিল আফগানিস্তানের তালিবান বাহিনী।

পাকিস্তানি বায়ুসেনার হামলার জবাব দিল আফগানিস্তানের তালিবান বাহিনী। —প্রতীকী চিত্র।

হামলা আর পাল্টা হামলায় রক্তাক্ত পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্ত। এ বার পাকিস্তানি বায়ুসেনার হামলার জবাব দিল আফগানিস্তানের তালিবান বাহিনী। বিভিন্ন পাক সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, তালিবানি হামলায় পাক সীমান্ত লাগোয়া এলাকার বিভিন্ন চেক পোস্টে অন্তত ১৯ পাকিস্তানি সেনার মৃত্যু হয়েছে। নিহত হয়েছেন আফগানিস্তানের ৩ জন সাধারণ নাগরিকও। আহত অনেকে। তবে আফগান সরকারের তরফে হতাহতের সংখ্যা নিয়ে মুখ খোলা হয়নি।

এক বিবৃতিতে আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তের সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় আজকের এই হামলার কথা স্বীকার করেছে তালিবান সরকারও। কিন্তু তালিবান প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র ওই বিবৃতিতে একটি বারও পাকিস্তানের নাম উল্লেখ করেননি। এনায়তোল্লা খোয়ারাজ়ামি নামে ওই মুখপাত্রের বক্তব্য, ‘‘কাল্পনিক সীমান্তের ও-পারে আকাশ-পথে অভিযান চালিয়েছে আমাদের বাহিনী। আমাদের সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্তকারীদের চূড়ান্ত জবাব দেওয়া হয়েছে সেখানে।’’ আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র কে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিনি কি নির্দিষ্ট ভাবে পাকিস্তানের অভ্যন্তরের বিভিন্ন চেক পোস্টে হামলা চালানোর কথা বলছেন? জবাবে এনায়তোল্লা জানিয়েছেন, হামলা সীমান্তের ও-পারে হলেও তাঁরা ওই এলাকাকে পাকিস্তানের বলে মনে করেন না। উল্টে তাঁর বক্তব্য, আফগানিস্তান-বিরোধী বেশ কিছু সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চলছিল সীমান্তের ও-পারে। ষড়যন্ত্রকারীদের সেই ঘাঁটিগুলিকেই নিশানা করেছে তালিবান বাহিনী। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, ব্রিটিশদের তৈরি করা ডুরান্ড সীমান্ত নিয়ে দু’দেশের দ্বন্দ্ব বহু পুরনো। একে অপরের ভূখণ্ডকে স্বীকৃতি দিতে চায় না দু’দেশই। আজকের বিবৃতিতেও সেই দ্বন্দ্বের ইঙ্গিতই দিয়েছেন আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র।

গত মঙ্গলবার আফগানিস্তানের দক্ষিণাংশের পাকতিকা প্রদেশে আকাশ পথে হামলা চালিয়েছিল পাকিস্তানের বায়ুসেনা। মূলত তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান গোষ্ঠীর ঘাঁটি এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলি তাদের নিশানায় ছিল। পাকিস্তানের শাহবাজ শরিফ সরকার বারবার অভিযোগ করেছে, তাদের দেশে অশান্তি আর সন্ত্রাস ছড়ানোর পিছনে রয়েছে তালিবান মদতপুষ্ট এই জঙ্গি গোষ্ঠীরই হাত। অবিলম্বে সন্ত্রাসে মদত দেওয়া বন্ধ না করলে তার ফল ভুগতে হবে বলে তালিবান প্রশাসনকে সম্প্রতি হুমকি দিতেও শোনা গিয়েছে পাক প্রধানমন্ত্রীকে। সে দিন পাক বাহিনীর ড্রোন হামলায় অন্তত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল বলে দাবি করেছিল তালিবান প্রশাসন। পাকিস্তানি প্রশাসন মূলত জঙ্গি ঘাঁটিগুলিকে নিশানা করার কথা বললেও আফগানিস্তান সরকার কিন্তু সেই দাবি উড়িয়ে পাল্টা জানিয়েছিল, সে দিনের ওই বোমাবর্ষণে নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন নারী এবং শিশু। আজকের হামলার পরে পাক সেনাবাহিনী আফগান সীমান্তে ফের অভিযান শুরু করে বেশ কয়েকটি চেক পোস্ট দখল করে নিয়েছে বলে দাবি পাক সংবাদমাধ্যমের একাংশের।

মঙ্গলবারের হামলার ঠিক চার দিনের মাথায় পাল্টা পাক সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় হামলা চালাল আফগান সরকার। তারা উল্টে সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার অভিযোগ এনেছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। এখানেই শেষ নয়। পাক সংবাদমাধ্যমের একটি অংশের রিপোর্ট জানাচ্ছে, অন্তত ১৫ হাজার তালিবানি সেনা হেরাট, কন্দহর, কাবুলের মতো এলাকা থেকে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমের প্রত্যন্ত খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মির আলি সীমান্তের দিকে এগোচ্ছে। ফলে আগামী কয়েক দিনে সীমান্তে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। তবে রিপোর্টে এ-ও বলা হয়েছে, এই দুই পড়শি দেশের সাম্প্রতিক দ্বন্দ্বে তালিবানের তরফে হতাহতের সংখ্যাও প্রচুর। তবু পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে পিছু হটতে চাইছেনা তারা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

taliban Death army Terrorist

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy