E-Paper

জামিনের শুনানি আজ, আইনজীবী পাচ্ছেন না সন্ন্যাসী

ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৫৩ জন আইনজীবী চিন্ময়কৃষ্ণের হয়ে সওয়ালে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের সকলকে একটি বিস্ফোরক মামলা-সহ কয়েকটি মামলায় আসামি করা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৬:৫৩
শুনানি হওয়ার কথা বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিনের আর্জির।

শুনানি হওয়ার কথা বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিনের আর্জির। — ফাইল চিত্র।

মঙ্গলবার চট্টগ্রাম দায়রা আদালতে শুনানি হওয়ার কথা বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিনের আর্জির। তবে কোনও আইনজীবী হয়তো তাঁর পক্ষে সওয়াল করবেন না।

ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৫৩ জন আইনজীবী চিন্ময়কৃষ্ণের হয়ে সওয়ালে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের সকলকে একটি বিস্ফোরক মামলা-সহ কয়েকটি মামলায় আসামি করা হয়েছে। একই সঙ্গে দুই সাংবাদিক এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কয়েক জন বিশিষ্ট জনের নামও যুক্ত করা হয়েছে। রাতে চিন্ময়কৃষ্ণের আইনজীবী রমেন রায়ের বাড়িতে হামলা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসকন। চিন্ময়কৃষ্ণের আর এক আইনজীবী জানিয়েছেন, মঙ্গলবার আদালতে তাঁদের উপরে হামলা করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে জানা গিয়েছে। তার পরেই আতঙ্কিত আইনজীবীরা চিন্ময়কৃষ্ণের জামিনের সওয়ালে হাজির হতে চাইছেন না। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, মঙ্গলবার চট্টগ্রাম আদালতে কঠোর পাহারা থাকবে। অতিরিক্ত ২০০ পুলিশকে এ জন্য সেখানে মোতায়েন করা হচ্ছে।

গত সোমবার ঢাকার হজরত শাহ জালাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতারের পরে মঙ্গলবার ইসকনের প্রাক্তন মুখপাত্র এবং বর্তমানে পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময়কৃষ্ণকে চট্টগ্রাম ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয়। চট্টগ্রামে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার উপরে কেউ একটি ছোট গেরুয়া পতাকা লাগানোয় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র হিসাবে চিন্ময়কৃষ্ণের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করে ফিরোজ খান নামে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা। তিনি মামলা করার পরের দিনই বিএনপি ফিরোজ খানকে বহিষ্কার করে ঘটনা থেকে দূরত্ব রচনা করে। কিন্তু ফিরোজের সেই অভিযোগের মামলাতেই চট্টগ্রাম ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাঁকে জেল হেফাজতে পাঠান। তার পরই নানা কারণে আদালতে কাজ না হওয়ায় এবং শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় চিন্ময়কৃষ্ণকে জেলেই বন্দি থাকতে হচ্ছে। সেখানে তাঁর জন্য বিশেষ নিরামিষ খাবার (প্রসাদ) আশ্রম থেকে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়
আদালত। দুই তরুণ সন্ন্যাসী বৃহস্পতিবার জেলে খাবার দিয়ে বেরিয়ে আসার পরে পুলিশ কোনও অভিযোগ ছাড়াই তাঁদের গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।

চিন্ময়কৃষ্ণের একাধিক আইনজীবীর অভিযোগ, যে মামলায় তাঁদের মক্কেলকে জেলে পাঠানো হয়েছে সেটি পুরোপুরি অবৈধ। কারণ সরকার ছাড়া কেউ কারও বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করতে পারে না। এই মামলা আদালতে উঠলেই খারিজ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু বর্তমান শাসকেরা আদালতকে এমন ভাবে চাপে রেখেছে, কার্যত তাঁদের মনোমত কাজই করতে হচ্ছে বিচার বিভাগকে। চট্টগ্রামের ম্যাজিস্ট্রেট আদালত হোক বা দেশের হাই কোর্ট, সর্বত্র চিত্রটি এক। রবিবার ২১ অগস্টের গ্রেনেড হামলায় এক ঝাঁক বিএনপি শীর্ষ নেতা-সহ সব আসামিকে বেকসুর খালাসও তারই নজির।

আইনজীবীদের দাবি, ৭০ জনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক ও অন্য মামলাও একই ভাবে অসার ও মিথ্যা। কেবল মাত্র হেনস্থার উদ্দেশ্যেই এই মামলাগুলি করা হয়েছে। কারণ সচরাচর পুলিশ বিস্ফোরকের মামলা করে। এ ক্ষেত্রে এই মামলার বাদী করা হয়েছে গন্ডগোলে নিহত আইনজীবী সাইফুল ইসলামের ভাইকে। কোনও বিস্ফোরণের ঘটনাই যখন ঘটেনি, তখন এই মামলা টেঁকারই কথা নয়। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদও চিন্ময়কৃষ্ণের ৫৩ জন আইনজীবী-সহ ৭০ জন বিশিষ্ট সংখ্যালঘুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের মামলার নিন্দা করেছে।

চিন্ময়কৃষ্ণের সুষ্ঠু বিচারে বাধা সৃষ্টি করতেই প্রশাসন এই কাজ করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এক আইনজীবীর কথায়, “অন্তর্বর্তী সরকার মুখে সংখ্যালঘু প্রেম দেখাচ্ছে। আর কার্যক্ষেত্রে চিন্ময়কৃষ্ণের সুষ্ঠু বিচার আটকাতে নানা ধরনের চক্রান্ত করে চলেছে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lawyer iscon

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy