পাটাতনে ঝুলছেন সেই দুই শ্রমিক। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে। ছবি: এ এফ পি।
তেরো বছর আগে এক ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্নের সাক্ষী হয়েছিল এলাকাটি। এখন সেখানে ফের মাথা তুলেছে আকাশছোঁয়া বহুতল। কিন্তু সেই ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের নয়া বহুতলেই আবার ফিরে এল আতঙ্ক।
বুধবার সেখানকার ৬৮ ও ৬৯ তলার মাঝামাঝি এলাকায় আড়াআড়ি ভাবে হেলে পড়ে একটি পাটাতন। তাতে আটকে পড়েন দুই শ্রমিক। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের ওই অংশে জানলার কাচ পরিষ্কার করছিলেন দু’জনে। তখনই ঘটে বিপত্তি। বাইরে থেকে ওই দৃশ্য দেখে শিউরে ওঠেন অনেকে। যে কোনও মুহূর্তে হয়তো ভেঙে পড়তে পারে পাটাতনটি। নিউ ইয়র্কের লোয়ার ম্যানহাটনে ওই বহুতলের সামনে তখন টানটান উত্তেজনা। তবে ঘাবড়াননি দমকল ও উদ্ধারকর্মীরা। তাঁদেরই যৌথ প্রচেষ্টায় সম্পূর্ণ নিরাপদে উদ্ধার হয়েছেন ওই দুই শ্রমিক।
ওই দুই শ্রমিকের নাম জুয়ান লিজামা ও জুয়ান লোপেজ। বহুতলের জানলার কাচ পরিষ্কার করার কাজ করেন তাঁরা। বুধবারও তা-ই করছিলেন। কিন্তু অর্ধেক পাঁচিল ঘেরা যে পাটাতনের উপর দাঁড়িয়ে তাঁরা জানলার কাচ মুছছিলেন, সেটির এক দিকের দড়ি হঠাৎ বেশি ঝুলে যায়। ফলে পাটাতনটিও কাত হয়ে পড়ে। বিপজ্জনক ভাবে ঝুলতে থাকেন ভিতরে থাকা লিজামা ও লোপেজ। নীচের রাস্তায় তখন দুপুরের খাওয়াদাওয়া সারতে বেরোনো অফিসকর্মীদের ভিড়। হঠাৎ তাঁদের নজর যায় বহুতলের দিকে। কিছু ক্ষণ পর থেকেই চ্যানেলে চ্যানেলে শুরু হয় সরাসরি সম্প্রচার। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের নতুন বহুতলে কাত হয়ে ঝুলছে পাটাতন। ঝুলছেন দুই শ্রমিক। হাড় হিম করা দৃশ্য!
উত্তেজনায় কখন যে সময় কেটে যাচ্ছে খেয়াল করেননি দর্শকরা। দমকল বাহিনী ও উদ্ধারকর্মীরা অবশ্য বসে থাকেননি। মাথা ঠান্ডা রেখে প্রথমে ৬৮ তলায় পৌঁছন তাঁরা। শুরু হয় জানলার কাচ কাটার পর্ব। কিন্তু নতুন বহুতলে এমনিতেই শক্তপোক্ত কাচ ব্যবহার করা হয়েছিল। তার উপর কাচের দু’টি আস্তরণ লাগানো হয়েছিল। ফলে তা কাটতে সময় লেগে যায়। তবে বিকল্প ব্যবস্থাও করেছিলেন তাঁরা। ওই কাত হয়ে থাকা পাটাতনের পাশেই আরও একটি পাটাতন ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। প্রয়োজনে লিজামা ও লোপেজ ওখানে উঠতে পারেন। তবে সে সবের প্রয়োজন পড়েনি। কাচ কেটেই দুই শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়। দুপুর ২টো ১৫ নাগাদ প্রশাসন জানায়, দু’জনেই সম্পূর্ণ সুস্থ।
এবং এ জন্য শ্রমিকদেরও কৃতিত্ব দিচ্ছেন অনেকে। ওই পরিস্থিতিতে কী ভাবে তাঁরা ধৈর্য বজায় রাখলেন, তা ভেবে অবাক যাচ্ছেন অনেকে। উদ্ধারকর্মীদলের নেতৃত্বে থাকা লেফটেন্যান্ট বিলি রিয়ানের বয়ানে, “ওঁরা জানতেন কী অবস্থায় পড়েছেন। তবে ওঁরা এটাও জানতেন যে আমরা সাহায্যের জন্য আসছি। ফলে ঘাবড়াননি।” আর তাতে যে উদ্ধারের কাজে অনেকটাই সুবিধা হয়েছে, তা মানছেন বিলিও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy