Advertisement
০৩ মে ২০২৪

কার ঝুলিতে ৩২৬, বোঝা যাবে আজই

ব্রেক্সিটের পরে দেশের স্থিতিশীলতা মজবুত করার কথা বলে গত এপ্রিলে তড়িঘড়ি ভোট এগিয়ে আনার কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে আজ সকাল ৭টা থেকে দেশের ৪০ হাজারের বেশি কেন্দ্রে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ।

শ্রাবণী বসু
লন্ডন শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৭ ০২:৪৫
Share: Save:

এক দিকে কর্পোরেট সংস্থাগুলোর উপর বেশি কর চাপিয়ে সেই টাকা সামাজিক-সুরক্ষা খাতে খরচ করার প্রস্তাব দিয়েছেন লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন। উল্টো দিকে, প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-র কনজারভেটিভ পার্টি বলেছে, সরকারি ঋণ কমিয়ে সামাজিক সুরক্ষা খাতে ব্যায়ভার কাটছাঁট করবে তারা। এই দুই প্রস্তাবের কোনটায় সায় দেবে ব্রিটেন? তা নির্ধারণ করতেই আজ ভোটের পথে দেশ।

জনসমীক্ষা বলছে, সমর্থন অনেক কমলেও এখনও পাল্লা ভারী মে-র দিকে। ফলে প্রতিপক্ষকে একেবারে উড়িয়ে না দিতে পারলেও ১০ ডাউনিং স্ট্রিট থাকতে পারে মে-র দখলেই। আগামী কাল দুপুরের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে যাবে ফলাফল। পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে গেলে ৩২৬টি আসন পেতে হবে একটি দলকে। তবে কোনও দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা আদৌ পাবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন নির্বাচন বিশ্লেষকেরা।

ব্রেক্সিটের পরে দেশের স্থিতিশীলতা মজবুত করার কথা বলে গত এপ্রিলে তড়িঘড়ি ভোট এগিয়ে আনার কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে আজ সকাল ৭টা থেকে দেশের ৪০ হাজারের বেশি কেন্দ্রে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। বৈদ্যুতিন ভোটিং যন্ত্র না থাকায় এখনও ব্যালট পেপারেই ভোট হয় ব্রিটেনে। রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে ভোটদান প্রক্রিয়া। তা শেষ হতেই শুরু হবে গণনা।

এ বার প্রায় ৪ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষ ভোট দিচ্ছেন ব্রিটেনে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ১৫ লক্ষ ভারতীয়। ৬৫০ জন এমপি নির্বাচিত হবেন এই ভোটের মাধ্যমে। শুক্রবার ভোররাতের মধ্যেই বেশ কিছু আসনে ফলাফল ঘোষণা হয়ে যাবে। দুপুরের মধ্যে পরিষ্কার হয়ে যাবে গোটা ছবিটা। প্রথা অনুযায়ী, পরাজিত দল হার স্বীকার করার পরেই জয় ঘোষণা করবে বিজয়ীরা।

বুধবারের জনমত সমীক্ষা কনজারভেটিভ পার্টিকে এগিয়ে রাখলেও প্রত্যাশার তুলনায় সমর্থনের মাত্রা অনেকটাই কম। অথচ সাত সপ্তাহ আগে ভোটের ডাক দেওয়ার সময় করবিনের তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন মে। কিন্তু লেবার পার্টির ইস্তাহারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি মকুব করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যুবসমাজকে অনেকটাই কাছে টানতে পেরেছেন করবিন। এক বছরের জন্য প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ টাকা ফি দিতে হয় পড়ুয়াদের। স্নাতক স্তর পেরোতেই সেই খরচের অঙ্ক দাঁড়ায় প্রায় ৪২ লক্ষে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই ফি মকুবের প্রস্তাবকে প্রচার পর্ব থেকেই তুরুপের তাস করেছিল লেবার। ফলও মিলেছে হাতেনাতে। কনজারভেটিভ পার্টির সঙ্গে কুড়ি পয়েন্টের ব্যবধান এক ধাক্কায় নামিয়ে এনেছে চারে।

পর পর তিন সন্ত্রাসবাদী হামলায় ধ্বস্ত ব্রিটেনের বেশ কিছু কেন্দ্রে আজ পুলিশ পাহারা ছিল চোখে পড়ার মতো। ভোট নেওয়া হচ্ছে মূলত স্কুল, কমিউনিটি সেন্টার ও চার্চগুলোতে। পানশালা, লন্ড্রি ও স্কুলবাসও ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। আজ সকালে উত্তর লন্ডনের ইসলিংটনে একটি প্রাথমিক স্কুলে ভোট দিতে যান করবিন। ভোটদাতা ও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন হাসিমুখে। পরে ভোটকেন্দ্রের বাইরে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘‘ভোট দিতে আসার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। আমাদের গণতন্ত্রের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন।’’ নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র মেডেনহেডে স্বামী ফিলিপের সঙ্গে ভোট দিতে আসেন বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী। সাংবাদিকদের দিকে তাকিয়ে হাসি হাসি মুখে হাত নাড়েন তিনিও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE