আগের দু’দফায় শান্তিচুক্তি নিয়ে আলোচনা বেশি দূর এগোয়নি। উল্টে জুনের গোড়া থেকেই ইউক্রেনের উপরে আক্রমণ আরও তীব্র করেছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। তবে তিনি নতুন করে শান্তি আলোচনা চান বলে গত কাল জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। গত কাল রাতে দেশবাসীর উদ্দেশে দেওয়া তাঁর নিয়মিত ভাষণে জ়েলেনস্কি স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, রাশিয়ার সঙ্গে মধ্যস্থতা এবং আলোচনার বিষয়টি আরও গতি পাওয়া উচিত। গত কাল জ়েলেনস্কি আলোচনার বার্তা দেওয়ার পর পরই মুখ খুলেছে ক্রেমলিনও। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ আজ এক স্থানীয় টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও শান্তি নিয়ে আলোচনা করতে রাজি। তবে মস্কোর মূল উদ্দেশ্য হল নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছনো। যদিও কী সেই লক্ষ্য, তা স্পষ্ট করেননি পেসকভ।
ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা এবং প্রতিরক্ষা কাউন্সিলের সচিব রুস্তেম উমেরভ আগামী সপ্তাহেই রাশিয়ার সঙ্গে নতুন করে আলোচনা শুরুর প্রস্তাব রেখেছেন। ক্রেমলিনের তরফেও আজ শান্তি আলোচনা নিয়ে ইতিবাচক সাড়াই মিলেছে। যদিও সেই বৈঠক ঠিক কবে থেকে বা কোথায় শুরু হবে, তা নিয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। জ়েলেনস্কি গত কাল বলেছেন, ‘‘সংঘর্ষবিরতি নিয়ে সদর্থক চুক্তিতে পৌঁছনোর জন্য আমাদের সমস্ত রকমের চেষ্টা করতে হবে। তবে রাশিয়াকে বন্দি বিনিময় বা শিশুদের ফেরত দেওয়ার বিষয়গুলি নিয়ে সিদ্ধান্ত এড়িয়ে যাওয়া বন্ধ করতে হবে।’’ তিনি এ-ও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, সেই আলোচনায় দু’দেশের সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের থাকাটা প্রয়োজন। তিনি নিজে সেই আলোচনায় থাকতে রাজি বলেও জানিয়েছেন জ়েলেনস্কি। তবে রুশ প্রেসিডেন্ট সেই প্রস্তাবে রাজি হবেন কি না, তা অবশ্য জানা যায়নি।
ইউক্রেনের প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী উমেরভকে সদ্য মধ্যস্থতা নিয়ে যাবতীয় দায়িত্ব দিয়েছেন জ়েলেনস্কি। যত দ্রুত সম্ভব রাশিয়ার সঙ্গে শান্তিচুক্তি নিয়ে আলোচনা এগোতে চাইছেন তিনি। ইউক্রেন সরকারের বক্তব্য, তুরস্কের ইস্তানবুলে হওয়া গত দু’দফার আলোচনায় রাশিয়া ইউক্রেনের কিছু ভূখণ্ড নিজেদের দখলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছিল। সেই সঙ্গে আমেরিকা এবং পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলির থেকে ইউক্রেন যাতে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় সাহায্য নেওয়া বন্ধ করে, সেই শর্তও দিয়েছিল মস্কো। তবে কিভের প্রতিনিধিরা সেই শর্তগুলি মেনে নিতে পারেননি। জ়েলেনস্কি স্পষ্টই জানিয়েছিলেন, তাঁদের কোনও ভূখণ্ডের বিনিময়ে শান্তি ফেরানো সম্ভব নয়। এর মধ্যেই আমেরিকা অবশ্য সদ্য রাশিয়ার উপরে নতুন করে নিষেধাজ্ঞার বোঝা চাপিয়েছে। গত সোমবারই ইউক্রেনকে নতুন করে সামরিক ত্রাণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। রাশিয়াকে আপাতত ৫০ দিন সময় দিয়েছেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্যে ইউক্রেনের উপরে রুশ হামলা না কমলে মস্কোর উপরে আরও বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন তিনি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)