শীঘ্রই মুখোমুখি বসতে পারেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। তবে ওই বৈঠকে কোনও আগাম শর্ত চাপানো যাবে না। সোমবার হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পরে তা স্পষ্ট করে দিলেন জ়েলেনস্কি।
সোমবার ইউরোপের বন্ধুদের নিয়ে সদলবলে হোয়াইট হাউসে গিয়েছিলেন জ়েলেনস্কি। প্রথমে জ়েলেনস্কির সঙ্গে একান্ত বৈঠক সারেন ট্রাম্প। পরে ইউরোপীয় নেতারাও যোগ দেন বৈঠকে। দ্বিতীয় বৈঠকটি চলাকালীনই তা মাঝপথে থামিয়ে পুতিনকে ফোন করেন ট্রাম্প। সংবাদমাধ্যম সিএনএন সূত্রে খবর, একটি ত্রিপাক্ষিক (আমেরিকা, ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে) বৈঠকের জন্য পুতিনকে প্রস্তাব দেন পুতিন। মস্কোর দাবি, প্রায় ৪০ মিনিট ধরে কথা হয়েছে দু’জনের। যদিও পরে জানা যায়, ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের আগে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে। ওই দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় থাকবেন শুধুমাত্র জ়েলেনস্কি এবং পুতিন।
ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পরে হোয়াইট হাউসের বাইরে জ়েলেনস্কি জানান, দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের জন্য রাশিয়াই প্রস্তাব দিয়েছিল। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, তিনি পুতিনের সঙ্গে যে কোনও ধরনের আলোচনার জন্য প্রস্তুত। তবে ওই বৈঠকের জন্য কোনও আগাম শর্ত চাপানো চলবে না। জ়েলেনস্কির কথায়, “আমি মনে করি নিঃশর্ত ভাবে আমাদের বৈঠকে বসা উচিত। যুদ্ধ থামানোর এই উদ্যোগকে আরও প্রসারিত করার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করা উচিত।” ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, তিনি এই দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের জন্য কোনও শর্ত আরোপ করতে চান না। কারণ, তিনি শর্ত চাপালে পুতিনও নিজস্ব শর্ত নিয়ে হাজির হবেন।
তবে জ়েলেনস্কি এ-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে তিনি থাকবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার অগ্রগতি কেমন হয়, তার উপর নির্ভর করবে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে যোগ দেওয়ার বিষয়টি। সোমবার জ়েলেনস্কির সঙ্গে হোয়াইট হাউসে গিয়েছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ, ইটালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মের্ৎজ়, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজ়ান্ডার স্টাব। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন এবং আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নেটো-র প্রধান মার্ক রুটও উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে। যুদ্ধ থামানোর প্রসঙ্গে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকেও ইউরোপের বন্ধুদের নিজের পাশে পান জ়েলেনস্কি। জার্মান চ্যান্সেলর বৈঠকে দাবি করেছিলেন, আলোচনার অগ্রগতির জন্য যুদ্ধবিরতিতে রাজি হতেই হবে রাশিয়াকে। তবে জ়েলেনস্কি এমন কোনও মন্তব্য করেননি।
আরও পড়ুন:
এর আগে গত সপ্তাহেই আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ট্রাম্প। সম্প্রতি রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে ট্রাম্প এবং পুতিনের মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েন সৃষ্টি হয়। আলাস্কার বৈঠকে সেই টানাপড়েন কিছুটা কেটেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। ওই বৈঠকের আগে জ়েলেনস্কি এবং ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠকও সেরেছিলেন ট্রাম্প। আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পরে ফোনও করেছিলেন জ়েলেনস্কিকে। ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের সম্ভাবনা তখন থেকেই পাওয়া যাচ্ছিল। এ বার পুতিন এবং জ়েলেনস্কির মুখোমুখি বসারও সম্ভাবনা তৈরি হল। কবে, কোথায় বৈঠক হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে জার্মান চ্যান্সেলরের দাবি, দু’সপ্তাহের মধ্যেই বৈঠকে বসতে রাজি হয়েছেন পুতিন।