বাংলাদেশের গদিচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ‘সম্ভবত’ মানবতাবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত ছিল বলে মনে করে রাষ্ট্রপুঞ্জ। গত বছরের জুলাই-অগস্টে কোটা সংস্কার আন্দোলনপর্বে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হাসিনার সরকারের মদতে ‘পরিকল্পিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ ঘটানো হয়েছিল বলে বুধবার প্রকাশিত রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্টে জানানো হয়েছে।
রিপোর্ট প্রকাশ করে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনের হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক বলেন, ‘‘ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে আওয়ামী লীগ সরকার নৃশংস পদক্ষেপ করেছিল।’’গত ৫ অগস্ট জনবিক্ষোভের জেরে প্রধানমন্ত্রীপদে ইস্তফা দিয়ে বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন হাসিনা। তার পরেই ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’, মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার এবং আওয়ামী লীগ-বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির তরফে ‘গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ’-এর অভিযোগে একের পর এক মামলা দায়ের করা হয়েছিল হাসিনা-সহ প্রাক্তন মন্ত্রী ও জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে।
এর পরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশে এসেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম’। কোটা সংস্কার আন্দোলনপর্বের প্রত্য়ক্ষদর্শী এবং ‘নির্যাতিতদের’ সঙ্গে কথাও বলেন ওই দলের সদস্যেরা। সে সময় হাসিনা সরকার প্রতিবাদীদের উপর ‘নিয়মতান্ত্রিক দমনপীড়ন’ চালিয়েছিল বলে রিপোর্টে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিনিধিরা। লেখা হয়েছে, ‘‘হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার আগে তাঁর সরকার শয়ে শয়ে বিচারবহির্ভূত হত্যা চালিয়েছে।’’ খুনের জন্য় সরকার বাহিনীর পাশাপাশি রিপোর্টে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলকেও নিশানা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম’-এর রিপোর্টে ‘২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ অগস্টের মধ্যবর্তী সময়ে ঘটে যাওয়া মানবতাবিরোধী ঘটনা ও হত্যাকাণ্ড সম্পর্ক তথ্য রয়েছে’। কিন্তু ৫ অগস্টই বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন হাসিনা। ইউনূসের সরকারের তরফে রাষ্ট্রপুঞ্জকে জানানো হয়েছে, জুলাই-অগস্ট আন্দোলনপর্বে বাংলাদেশে হাসিনা সরকার খুন করেছিল ১৪০০ জনকে! সে প্রসঙ্গও উল্লিখিত হয়েছে রিপোর্টে।