প্রতীকী ছবি।
দ্রুত গতিতে কোভিডের টিকাকরণ এগোনোয় ভারতের অর্থনীতি চাঙ্গা হওয়ার পথে। এ কথা জানিয়েও তেলের চড়া দাম এবং কয়লার ঘাটতি নিয়ে এ দেশকে সতর্ক করে দিল রাষ্ট্রপুঞ্জ। জানাল, এই দু’টি বিষয় আগামী দিনে আর্থিক কর্মকাণ্ডকে এমন শ্লথ করতে পারে যে, চলতি অর্থবর্ষে আর্থিক বৃদ্ধির হার হয়তো ৬.৫ শতাংশেই আটকে যাবে। অথচ এর আগে তা ৮.৪% হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল তারা। আচমকা খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়েও হুঁশিয়ারি দিয়েছে আন্তর্জাতিক আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের ওই রিপোর্ট। মূল্যবৃদ্ধির কারণ মূলত সরবরাহ সমস্যা বলে জানালেও, তাদের দাবি এতে দেশে খাদ্যের নিরাপত্তা নষ্ট হতে পারে। কমতে পারে প্রকৃত আয়। যা অর্থনীতির পক্ষে ভাল হবে না।
সংশ্লিষ্ট মহল অবশ্য রাষ্ট্রপুঞ্জের বার্তা সত্ত্বেও সমস্যা সমাধানের পথ দেখছে না। কারণ, গত এক বছরে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল ব্রেন্ট ক্রুডের দর বেড়েছে প্রায় ৫০%। বুধবার একটা সময়ে আগাম লেনদেনের বাজারে ব্যারেল প্রতি তা ৮৫ ডলারও পার করেছিল। যা গত দু’মাসের সর্বোচ্চ। ফলে জল্পনা চড়ছে, শীঘ্রই কি তা সেঞ্চুরি হাঁকাবে? ব্রোকারেজ সংস্থা জেপি মর্গ্যান মনে করছে, এই আশঙ্কা অমূলক নয়। এ বছর পণ্যটির দর ১০০ ডলার তো ছাড়াতে পারেই, পরের বছর তা ১৫০ ডলারে পৌঁছে যাওয়াও অসম্ভব নয়। যারা এই মতের সমর্থক নয়, তারাও বলছে ৯০ ডলার দেখা যাচ্ছে চোখের সামনেই।
এই প্রেক্ষিতেই ভারতে তেলের দর নিয়ে নতুন করে আশঙ্কা মাথাচাড়া দিচ্ছে। দীপাবলির সময়ে পেট্রল ও ডিজ়েলের শুল্ক কমার পর থেকে প্রায় আড়াই মাস পণ্য দু’টির দর আটকে। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, যা পরিস্থিতি, তাতে পাঁচ রাজ্যের ভোট মিটলেই তেলের দাম ফের বাড়তে পারে।
২০২০ সালে করোনার প্রথম হানার সময়ে রুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল অর্থনীতি। সেই সময়ে চাহিদা কমার ফলেই অশোধিত তেলের দাম বিপুল ভাবে পড়েছিল। দরে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য তখন তেলের উৎপাদন ছাঁটাই করে ওপেক গোষ্ঠী ও তার সহযোগী দেশগুলি। কিন্তু এ দফায় হয়েছে ঠিক উল্টো। ওমিক্রনের দাপটে সংক্রমণ বেড়েছে ঠিকই কিন্তু আর্থিক কর্মকাণ্ড বন্ধের পক্ষে প্রায় কোনও দেশই হাঁটছে না। ফলে কমছে না তেলের চাহিদাও। বরং ঠান্ডার দেশগুলিতে জ্বালানির চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সমান মাত্রায় উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষমতা নেই তেল উৎপাদনকারী দেশগুলির। এই ক্ষেত্রে ইদানীং বিনিয়োগ কম হওয়াও এর অন্যতম কারণ। জেপি মর্গ্যানের বিশ্লেষকদের বক্তব্য, খুব তাড়াতাড়িই অশোধিত তেলের দাম ৩০ ডলার বাড়তে পারে। তার পরে আরও বেশি। তবে মর্গ্যান স্ট্যানলির মতে, এ বছরের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে তা ৯০ ডলার ছাড়াতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy