দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির এক মাস আগে গাজ়ায় ইজ়রায়েলি হানাদারি বন্ধ করতে সক্রিয় হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর সরকারের পশ্চিম এশিয়া বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ জানিয়েছেন, গাজ়ায় সংঘর্ষবিরতি কার্যকর করার লক্ষ্যে বুধবার হোয়াইট হাউসে ‘গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক’ করতে পারেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেই সঙ্গে স্টিভের মন্তব্য, ‘‘আমরা আশা করছি, চলতি বছরের শেষেই শান্তি ফেরানোর পথ প্রশস্ত হবে।’’
মার্কিন দূত স্টিভ সাময়িক যুদ্ধবিরতির বিনিময়ে কেবল কিছু ইজ়রায়েলি পণবন্দির মুক্তির সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন। জানিয়েছেন, প্যালেস্টাইনি অধ্যুষিত ভূখণ্ডে স্থায়ী শান্তির পথের সন্ধান করাই হোয়াইট হাউসে বুধবারের বৈঠকের মূল লক্ষ্য হবে। তিনি বলেন, ‘‘সমস্ত পণবন্দির মুক্তির মাধ্যমে পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি ফেরানোই আমাদের লক্ষ্য।’’
আরও পড়ুন:
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইজ়রায়েলে হামলা চালিয়েছিল প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র সংগঠন হামাস। এই হামলার জেরে মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ১১০০ জনের। শুধু তা-ই নয়, ২৫০ জন ইজ়রায়েলি নাগরিককে যুদ্ধবন্দিও করেছিল হামাস। তার পর পণবন্দিদের মুক্তি এবং গাজ়া ভূখণ্ড থেকে হামাসকে নির্মূল করতে পাল্টা অভিযান শুরু করে ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বাহিনী। এখনও পর্যন্ত সেই অভিযানের বলি ৫৫ হাজারেরও বেশি প্যালেস্টাইনি সাধারণ নাগরিক।
দ্বিতীয় বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরেই ইজ়রায়েল এবং হামাসের মধ্যে সংঘাত থামানোর কথা বলেছিলেন ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছিলেন, প্রয়োজনে মধ্যস্থতা করতেও রাজি। কাতার এবং মিশরের মতো দেশগুলিও দুই দেশের যুদ্ধ থামাতে উদ্যোগী হয়েছিল। গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতিতে রাজিও করানো হয়েছিল দু’পক্ষকে। এর পরে শর্ত মেনে পণবন্দি বিনিময় হয়। কিন্তু হামাস ৫০ জনেরও বেশি পণবন্দিকে আটকে রেখেছে বলে অভিযোগ তুলে মার্চের গোড়ায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজ়ায় হামলা শুরু করে ইজ়রায়েল।
আরও পড়ুন:
গাজ়ায় মানবিক সাহায্য এবং ত্রাণ পৌঁছোনোর পথ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। তবে বিভিন্ন মহলের চাপে গাজ়ায় ত্রাণ সরবরাহ কিছুটা শিথিল করলেও পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেনি নেতানিয়াহুর সরকার। ইজ়রায়েলের অবরোধের জেরে তীব্র খাদ্যসঙ্কটে ভুগছে প্যালেস্টাইন। অনাহারের শিকার লাখ লাখ প্যালেস্টাইনি। মৃত্যুও হয়েছে অনেকের। সেই আবহে বিশ্বনেতাদের একাংশের মুখে যুদ্ধ বন্ধের কথা শোনা গিয়েছে। এগিয়ে এসেছেন ট্রাম্পও। যদিও হামাসের অভিযোগ, ইজ়রায়েলকে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য মদত দিচ্ছে আমেরিকাই! অতীতে ট্রাম্পকে ‘গাজ়া দখল’ করার হুঁশিয়ারি দিতেও শোনা গিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, প্যালেস্টাইনিদের গাজ়া ছাড়ার ‘পরামর্শ’ও দিয়েছেন ট্রাম্প।