Advertisement
E-Paper

মিত্র দিল্লি, মার্কিন বার্তা বেজিংকে

পূর্ব ভারতে মার্কিন বিনিয়োগের সম্ভাবনা কতটা? রাষ্ট্রদূত জানান, পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্ব ভারতে এখন তথ্যপ্রযুক্তি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পে অন্তত দু’‌শো মার্কিন সংস্থা ব্যবসা করছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:১২

কূটনীতি আর অর্থনীতি দু’দিক থেকেই ভারতের সঙ্গে মৈত্রী দৃঢ়তর করা আমেরিকার লক্ষ্য বলে কলকাতায় দাঁড়িয়ে আবার জানিয়ে দিলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেনেথ জাস্টার। সেই সঙ্গে নাম না-করে ওই দু’দিক থেকেই বার্তা দিলেন চিনকে। বললেন, এশিয়ায় চিন-বিরোধী শক্তিকে জোরালো করতে হবে।

বণিকসভা বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত আলোচনাসভায় কেনেথ জানান, এ দেশে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে মার্কিন বিনিয়োগের পাশাপাশি এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলেও ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকে স্বাগত জানাচ্ছেন তাঁরা। চিনের কথা মাথায় রেখেই ‘লুক ইস্ট’ নীতি চালু করেছিল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। এখন সেটাকে বলা হচ্ছে ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতি। সেই নীতিকেই জোরালো করার কথা জানান মার্কিন রাষ্ট্রদূত।

পূর্ব ভারতে মার্কিন বিনিয়োগের সম্ভাবনা কতটা? রাষ্ট্রদূত জানান, পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্ব ভারতে এখন তথ্যপ্রযুক্তি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পে অন্তত দু’‌শো মার্কিন সংস্থা ব্যবসা করছে। পরিকাঠামো ও যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হলে বিনিয়োগ আরও বাড়বে। সামগ্রিক ভাবে বর্তমানে ভারত আর্থিক ভাবে দ্রুত এগোচ্ছে বলেও জানান তিনি। ভারতকে মার্কিন বাণিজ্যের বৃহত্তর বাজার হিসেবেও ঘোষণা করেছেন রাষ্ট্রদূত।

কেনেথের বক্তব্য, এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি, সাম্য এবং উন্নয়ন বজায় রাখতে ভারত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। তাঁরা চান না, পৃথিবীর এই সমৃদ্ধ অঞ্চলে দ্বন্দ্ব, বিবাদ এবং আগ্রাসী অর্থনীতি বিরাজ করুক। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এ ক্ষেত্রেও নাম না-করে চিনকেই দুষেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। কারণ, সস্তায় বাজিমাত করা পণ্য উৎপাদন করে প্রতিযোগী দেশগুলিকে বিপাকে ফেলছে বেজিং। চিনের পাশাপাশি এ দিন কাশ্মীর-সমস্যা নিয়েও প্রশ্নের মুখে প়ড়েন কেনেথ। সে-ক্ষেত্রে ইসলামাবাদকে সরাসরি না-দুষলেও মার্কিন দূত জানিয়ে দেন, সন্ত্রাসবাদকে আমেরিকা কখনওই মেনে নেবে না। তবে দু’‌দেশের সীমান্ত-বিরোধে আমেরিকা সরাসরি জড়িয়ে পড়তে চায় না।

মোদী এবং ট্রাম্প সরকারের মধ্যে মৈত্রীর কথা বারবার বলা হলেও সম্প্রতি এ দেশে জাতি-ধর্ম বিদ্বেষের যে-সব ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে এ দিন প্রশ্নের মুখে পড়েন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। এই ধরনের হাঙ্গামা বিনিয়োগের সম্ভাবনায় কতটা ব্যাঘাত ঘটাতে পারে, সেই প্রশ্নের সরাসরি জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। তবে এটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন, ব্যবসায়িক স্বার্থে এই ধরনের ঘটনাকে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিতে রাজি নয় হোয়াইট হাউস।

কূটনীতি-বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে ভারত মহাসাগরীয় এলাকাই আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। সেই জন্য এই এলাকা যার দখলে থাকবে বা যার প্রভাব বেশি হবে, আর্থিক লাভ তারই বেশি। সেই জন্যই ভারতকে এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত করে জোট দৃঢ় করতে চাইছে আমেরিকা। সামরিক ক্ষেত্রেও দু’‌দেশের দৌত্য জোরদার করা হচ্ছে। এ দিন কেনেথও সেটা জানান। সামরিক সরঞ্জাম তৈরিতে যৌথ ভাবে নকশা ও উৎপাদনের পরিকল্পনার কথা জানানোর পাশাপাশি ভারতে পরিবেশ দূষণ রোধ এবং কৃষি ক্ষেত্রে উন্নতি ঘটাতে প্রযুক্তিগত সাহায্যের কথাও বলেছেন মার্কিন দূত।

US India China
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy