Advertisement
E-Paper

গাজ়ায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ‘ভেটো’ আমেরিকার! ‘বন্ধুরাষ্ট্র’ ইজ়রায়েলের পাশে থাকতেই কি এমন সিদ্ধান্ত?

গাজ়ায় যুদ্ধবিরতির প্রসঙ্গে আমেরিকার বেশ কিছু দাবি জায়গা পায়নি নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে। ইজ়রায়েল যে আমেরিকার অন্যতম ‘বন্ধুরাষ্ট্র’, তা-ও নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটি শুরুর আগে স্পষ্ট করে দিয়েছেন আমেরিকার দূত।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২৫ ১৫:০৯
ইজ়রায়েল-হামাস সংঘর্ষে বিধ্বস্ত গাজ়া ভূখণ্ড।

ইজ়রায়েল-হামাস সংঘর্ষে বিধ্বস্ত গাজ়া ভূখণ্ড। ছবি: রয়টার্স।

গাজ়া ভূখণ্ডে অবিলম্বে সংঘর্ষবিরতির জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে বিশেষ ক্ষমতা ‘ভেটো’ প্রয়োগ করল আমেরিকা। নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে একমাত্র আমেরিকাই ‘ভেটো’ প্রয়োগ করে। বাকি দেশগুলি প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের ওই প্রস্তাবে গাজ়ায় দ্রুত এবং স্থায়ী সংঘর্ষবিরতির কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু আমেরিকার বক্তব্য, ওই প্রস্তাবটিতে যুদ্ধবিরতির দাবির সঙ্গে বন্দিমুক্তির প্রসঙ্গকে যুক্ত করা হয়নি। সংবাদ সংস্থা এপি অনুসারে, সেই কারণে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসাবে প্রাপ্ত বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে প্রস্তাবটি খারিজ করে দিয়েছে আমেরিকা।

ইজ়রায়েলের সঙ্গে প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের দেড় বছরের বেশি সময় ধরে সংঘর্ষ চলছে। দু’পক্ষের মধ্যে সাময়িক যুদ্ধবিরতি হলেও বর্তমানে ফের হামাসের উপর হামলা শুরু করেছে ইজ়রায়েল। সংঘর্ষের মাঝে সাধারণ গাজ়াবাসীর মৃত্যু হচ্ছে। গাজ়া ভূখণ্ডে খাবারের জন্য চলছে হাহাকার। ইজ়রায়েল এবং হামাসের মধ্যে যুদ্ধ, সংঘর্ষ থামাতে মধ্যস্থতারও চেষ্টা করছে আমেরিকা। তবে এখনও পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়নি। এ অবস্থায় রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে গাজ়ায় সংঘর্ষবিরতির প্রস্তাবে আমেরিকার ‘ভেটো’ প্রয়োগ করা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবারই গাজ়া থেকে দুই ইজ়রায়েলি আমেরিকান বন্দির দেহ উদ্ধার করেছে ইজ়রায়েলি সেনা। ২০২৩ সালের অক্টোবরে দক্ষিণ ইজ়রায়েলে হামলার সময়ে ওই দম্পতিকে বন্দি করেছিল হামাস গোষ্ঠী। নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবে আমেরিকার আরও দু’টি দাবি জায়গা পায়নি। প্রথমত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইজ়রায়েলের উপর হামাসের হামলার নিন্দা ছিল না ওই প্রস্তাবে। ওই হামলা থেকেই দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল। দ্বিতীয়ত, হামাসের অস্ত্রসমর্পণ করা এবং গাজ়া থেকে সরে যাওয়ার বিষয়েও কিছু উল্লেখ ছিল না। বুধবার ভোটাভুটি শুরুর ঠিক আগে নিরাপত্তা পরিষদে আমেরিকার দূত ডরোথি শিয়ে জানান, এই প্রস্তাবের ফলে আমেরিকার ‘বন্ধুরাষ্ট্র’ ইজ়রায়েলের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে।

আমেরিকার ‘ভেটো’ প্রয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে নিরাপত্তা পরিষদের অন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলি। আমেরিকার এই পদক্ষেপ ইজ়রায়েলকে দায়মুক্ত করার চেষ্টা বলে অভিযোগ তুলেছে তারা। রাষ্ট্রপুঞ্জের চিনা দূত ফুং কংয়ের দাবি, ইজ়রায়েল যা করছে, তাতে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের সীমা অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রস্তাবগুলিকে মারাত্মক ভাবে লঙ্ঘন করছে ইজ়রায়েল। তবুও একটি দেশ তাদের আড়াল করে যাচ্ছে।

ব্রিটেনকে আমেরিকার মিত্রদেশ হিসাবেই বিবেচনা করা হয়। তবে ইজ়রায়েলের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন ব্রিটেনের দূত বারবারা উডওয়ার্ডও। গাজ়ায় ইজ়রায়েলের সামরিক অভিযান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ইজ়রায়েলের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক, অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং পরস্পরবিরোধী। ব্রিটেন সম্পূর্ণ ভাবে এর বিরোধিতা করে।”

সম্প্রতি গাজ়ায় ত্রাণশিবিরের কাছাকাছি গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল ইজ়রায়েলি সেনার বিরুদ্ধে। ওই গুলি চালানোর কথা স্বীকারও করেছে ইজ়রায়েল। তবে তাদের দাবি, ওই গাজ়াবাসীরা এমন ভাবে ইজ়রায়েলি বাহিনীর দিকে এগিয়ে আসছিলেন, যা দেখে ‘হুমকিমূলক’ বলে মনে হয়েছিল। সেই কারণেই গুলি চালানো হয়েছে বলে দাবি তাদের।

Gaza Strip Israel Hamas Conflict Israel Hamas Ceasefire USA UNSC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy