হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি পড়ুয়া ভর্তির বিষয়ে আদালতে ধাক্কা খাওয়ার পরেও দমলেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ বার হার্ভার্ডে বিদেশি পড়ুয়াদের প্রবেশের উপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করল ট্রাম্প প্রশাসন। বুধবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, এখন থেকে হার্ভার্ডে নতুন করে পড়তে আসা বিদেশি পড়ুয়ারা ভিসা পাবেন না। শুধু তা-ই নয়, কোনও উদ্দেশ্যে হার্ভার্ড-ভ্রমণের উপরেও কড়া নজর রাখবে মার্কিন প্রশাসন।
বুধবার হার্ভার্ডে নতুন করে ভর্তি হতে আসা বিদেশি পড়ুয়াদের ভিসা দেওয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ট্রাম্প সরকার। আগামী ছ’মাস এই নির্দেশই বহাল থাকবে। অন্য দিকে, এই পদক্ষেপকে ‘প্রতিশোধমূলক’ বলে মনে করছেন হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে হার্ভার্ডের এক ঊর্ধ্বতন কর্তা বলেন, ‘‘এটা ট্রাম্প প্রশাসনের আর এক বেআইনি প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপ হার্ভার্ডের স্বাধিকারকে ক্ষুণ্ণ করবে। তবে হার্ভার্ড আন্তর্জাতিক পড়ুয়াদের পাশে রয়েছে। তাঁদের যে কোনও মূল্যে নিরাপত্তা দেওয়া হবে।’’
আরও পড়ুন:
দ্বিতীয় বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকেই হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছিলেন ট্রাম্প। শুধু তা-ই নয়, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে একের পর এক পদক্ষেপও করেছে তাঁর প্রশাসন। কারণ, হামাস-ইজ়রায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আমেরিকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্যালেস্টাইনের সমর্থনে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছিল। আমেরিকার প্রশাসনের অভিযোগ ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ইহুদি-বিদ্বেষের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ইহুদি-বিদ্বেষ বন্ধ করতে বেশ কিছু শর্তও দেয় মার্কিন প্রশাসন। এ বিষয়ে ট্রাম্পের নজরে ছিল হার্ভার্ড। শর্ত মানতে রাজি না-হওয়ায় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে প্রথমে ‘আর্থিক অবরোধ’ শুরু করে মার্কিন প্রশাসন। অনুদান বন্ধ করে দেওয়া থেকে শুরু করে করমুক্ত মর্যাদা প্রত্যাহারের মতো নানা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শেষমেশ হার্ভার্ডে বিদেশি পড়ুয়াদের ভর্তির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন ট্রাম্প। যদিও আদালত সম্প্রতি জানিয়েছে, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি ছাত্র ভর্তি এবং স্টুডেন্টস ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে মার্কিন প্রশাসন কোনও বিধিনিষেধ জারি করতে পারবে না। তবে আদালতে ধাক্কা খাওয়ার পরেও হার্ভার্ড নিয়ে সুর নরম করছে না ট্রাম্প প্রশাসন।
উল্লেখ্য, বুধবারই আরও কঠোর অভিবাসন আইন প্রণয়নের পথে হেঁটেছে আমেরিকা। সে দেশে ১২টি দেশের নাগরিকদের প্রবেশাধিকার পুরোপুরি নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছে। আমেরিকায় ঢোকার ক্ষেত্রে আংশিক নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে আরও সাতটি দেশের নাগরিকদের উপর। আগামী ৯ জুন থেকে আফগানিস্তান, মায়ানমার, চাদ, রিপাবলিক অফ কঙ্গো, ইকিউটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান এবং ইয়েমেনের বাসিন্দারা আর আমেরিকায় ঢুকতে পারবেন না। প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে আংশিক নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান এবং ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের উপরেও।