বিপজ্জনক ‘প্যাথোজেন’ নিয়ে আমেরিকায় ঢুকতে গিয়ে এফবিআইয়ের হাতে ধরা পড়ে গেলেন দুই চিনা গবেষক। মঙ্গলবার এফবিআইয়ের ডিরেক্টর কাশ পটেল খবরটি নিশ্চিত করেছেন। বিপজ্জনক জৈবিক ছত্রাক পাচারের অভিযোগে ওই দু’জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে ইতিমধ্যেই।
বুধবার কাশ পটেল নিজের এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘‘আমেরিকায় এক জন চিনা নাগরিককে গ্রেফতার করেছে এফবিআই। ওই মহিলা দেশে একটি বিপজ্জনক প্যাথোজেন পাচার করছিলেন বলে অভিযোগ।’’ পটেল জানিয়েছেন, ধৃত মহিলার নাম ইউনকিং জিয়ান। মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ইউনকিংয়ের কাছ থেকে ‘ফুসারিয়াম গ্রামিনিয়ারাম’ নামে একটি বিপজ্জনক প্যাথোজেন উদ্ধার হয়েছে, যা তিনি লুকিয়ে চিন থেকে আমেরিকায় নিয়ে আসছিলেন বলে অভিযোগ। পটেলের কথায়, ‘‘এই প্যাথোজেনের প্রভাবে ‘হেড ব্লাইট’ নামে একটি রোগ হয়, যা গম, বার্লি, ভুট্টা এবং ধানের মতো কৃষিজাত পণ্যের পাশাপাশি মানুষ কিংবা গবাদি পশুর স্বাস্থ্যের উপরেও উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। এই প্যাথোজেন প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি ডলার অর্থনৈতিক ক্ষতির জন্য দায়ী।” এই ঘটনাকে ‘কৃষি-সন্ত্রাসবাদ’ আখ্যা দিয়েছেন এফবিআইয়ের কর্তা।
আরও পড়ুন:
একই সঙ্গে ধরা পড়েছেন ইউনকিংয়ের প্রেমিক জ়ুনিয়ং লিউও। তাঁর বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ রয়েছে। চিনের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে একই প্যাথোজেন নিয়ে গবেষণা করতেন জ়ুনিয়ং। এফবিআইয়ের দাবি, প্রথমে অস্বীকার করলেও জেরার মুখে দু’জনেই স্বীকার করে নিয়েছেন, তাঁরা লুকিয়ে আমেরিকায় ‘ফুসারিয়াম গ্রামিনিয়ারাম’ নিয়ে এসেছিলেন। ডেট্রয়েট মেট্রোপলিটন বিমানবন্দরেই ধরা পড়ে যান ওই যুগল। তবে ইউনকিংয়ের দাবি, গবেষণার জন্যই ওই প্যাথোজেন সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। এফবিআইয়ের আরও দাবি, তদন্তে জানা গিয়েছে যে ইউনকিং চিনা কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য। এই প্যাথোজেন নিয়ে কাজ করার জন্য চিন সরকারের থেকে বৃত্তিমূলক টাকাও পেতেন তিনি। দু’জনের বিরুদ্ধেই ষড়যন্ত্র, বিপজ্জনক পণ্য পাচার, মিথ্যা বিবৃতি দেওয়া এবং ভিসা জালিয়াতির অভিযোগ এনেছে এফবিআই। এফবিআইয়ের দাবি, দীর্ঘ দিন ধরেই আমেরিকার কৃষি ও অর্থনীতিকে ধসিয়ে দেওয়ার জন্য সক্রিয় ভাবে কর্মী এবং গবেষকদের মোতায়েন করছে চিনা কমিউনিস্ট পার্টি। বিপজ্জনক প্যাথোজেন পাচার করা হচ্ছে, যাতে একসঙ্গে বিপুল পরিমাণে কৃষিপণ্য নষ্ট করা যায়। এই ধরনের ঘটনাকে ‘অ্যাগ্রোটেররিজম’ (কৃষি-সন্ত্রাসবাদ) আখ্যা দেওয়া হয়। ফলে এই মামলাটিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে এফবিআই।