Advertisement
E-Paper

‘গণহত্যা’ তকমা, তুরস্কের বিরুদ্ধে অবরোধে ট্রাম্প?

শোনা যায়, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে পূর্ব আনাতোলিয়া থেকে কয়েক লক্ষ আর্মেনীয়কে সিরিয়ার মরুভূমিতে পাঠিয়ে দেয় তুরস্কের তৎকালীন অটোমান শাসকেরা।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:০৩
ছবি এএফপি।

ছবি এএফপি।

সেই ঘটনার পরে কেটে গিয়েছে শতাধিক বছর। কী যে ঠিক ঘটেছিল, তা নিয়েও রয়েছে নানা মতভেদ। মঙ্গলবার মার্কিন প্রতিনিধি সভা বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় প্রস্তাব পাশ করিয়ে ঘোষণা করল— ১৯১৫-১৬ সালে প্রথম মহাযুদ্ধে আর্মেনীয়দের ওপর গণহত্যাই চালিয়েছিল অটোমান তুর্কিরা, যাতে প্রাণ হারান অন্তত ১৫ লক্ষ মানুষ। স্বভাবতই ক্ষুব্ধ তুরস্ক। মঙ্গলবার ছিল আবার তুরস্কের জাতীয় দিবস। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়িপ এর্ডোয়ান বলেছেন, ‘‘মার্কিন প্রতিনিধি সভায় এই ভোটাভুটি একেবারেই মূল্যহীন। আমরা এ ঘটনাকে স্বীকারই করি না।’’ এর্ডোয়ানের কথায়, ‘‘আমাদের জাতীয় দিবসে এই ভোটাভুটি করে তুর্কিদের অসম্মান করা হল।’’

কী ঘটেছিল সে দিন?

শোনা যায়, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে পূর্ব আনাতোলিয়া থেকে কয়েক লক্ষ আর্মেনীয়কে সিরিয়ার মরুভূমিতে পাঠিয়ে দেয় তুরস্কের তৎকালীন অটোমান শাসকেরা। সেখানে খাদ্য ও পানীয় জল না পেয়ে এবং রোগে ভুগে বহু মানুষ মারা যান। মার্কিন প্রস্তাবে ১৫ লক্ষ মানুষ মারা যাওয়ার কথা বলা হলেও তুরস্ক সরকারের দাবি, সংখ্যাটি ৩ লক্ষের নীচে। আবার ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্য়াসোসিয়েশন অব জেনোসাইড স্কলার্স’ নামে একটি সংগঠন তাদের রিপোর্টে বলেছে, সে দিনের ঘটনায় অন্তত ১০ লক্ষ মানুষ মারা গিয়েছিলেন।

মার্কিন প্রতিনিধি সভা সেই ঘটনাকে শুধু ‘গণহত্যা’ তকমাই দেয়নি, ১০৯ বছর আগের সেই মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে তুরস্কের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ জারির জন্য দরবার করেছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে। ৪০৫-১১ ভোটে পাশ হয়েছে প্রস্তাবটি। পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে কয়েক কদম এগিয়ে থাকা জো বাইডেন টুইট করেছে, ‘গণহত্যার স্বীকৃতি দিয়ে আমরা সে ঘটনায় নিহতদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা জানালাম। আমাদের ঘোষণা: আর কখনও নয়।’ হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলসি বলেছেন, ‘‘বিংশ শতাব্দীর অন্যতম ভয়ঙ্কর একটি ঘটনাকে আমরা স্মরণ করলাম।’’ বহু আর্মেনীয় বংশোদ্ভূতের বসবাস ক্যালিফর্নিয়া জেলায়। সেখানকার প্রতিনিধি অ্যাডাম স্কিফ বলেন, ‘‘১৯ বছর ধরে এই ভোটাভুটি চেয়ে আসছি আমি। আমার এলাকার হাজার হাজার আর্মেনীয় বংশোদ্ভূত নাগরিক দশকের পর দশক ধরে চেয়ে এসেছেন, সরকার গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিক।। এই গণহত্যা আমরা ভুলতে পারি না, তাকে অস্বীকার করাটা হবে ইতিহাসকে অস্বীকার করা।’’

এর আগে যে এই প্রস্তাব পাসের চেষ্টা হয়নি, তা নয়। বস্তুত কূটনৈতিক কারণেই এত দিন বিষয়টি নিয়ে এগোয়নি সরকার। তুরস্ককে বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী দেশ হিসেবে মেনে এসেছে মার্কিন প্রশাসন। ‘ন্যাটো’-র সদস্য হিসেবেও তুরস্কের অবদান উল্লেখযোগ্য। কিন্তু ইরাকি কুর্দদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানো নিয়ে সম্প্রতি ট্রাম্প সরকারের বিরাগভাজন হয়েছে তুরস্কের এর্ডোয়ান সরকার। একশো বছর ধরে আটকে থাকার পরে ‘আর্মেনীয় গণহত্যা’-র মার্কিন স্বীকৃতি তারই ফলশ্রুতি বলে মনে করা হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে, এই ভোটাভুটিকে হাতিয়ার করে তুরস্কের বিরুদ্ধে কি শাস্তিমূলক অর্থনৈতিক অবরোধ চাপানোর পথে হাঁটতে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট?

Armenian Genocide Turkey USA Recep Tayyip Erdoğan Donald Trump
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy