সোমবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্দেশিকায় সই করেন। ওই নির্দেশিকায় বলা আছে, বিদেশি ব্যক্তি ও সংস্থাকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্তদের উপর বিচারপ্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ দেওয়া হবে। কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, এই সব বিধি-নিষেধের জন্য আমেরিকার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলি প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে অসুবিধায় পড়ছে। এর ফলে আমেরিকার আদালতে ভারতের কয়েক জন নেতা-মন্ত্রীকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় অভিযুক্ত ব্যবসায়ী গৌতম আদানি স্বস্তি পাবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই নির্দেশে প্রায় অর্ধশতাব্দী পুরনো ‘ফরেন করপোরেট প্র্যাকটিসেস অ্যাক্ট’ (এফসিপিএ)-এর প্রয়োগ থমকে গিয়েছে। তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী, ১৮০ দিনের মধ্যে এফসিপিএ-এর অধীনে থাকা মামলা পর্যালোচনা করবেন অ্যাটর্নি জেনারেল। তবে এখনই করা যাবে না পদক্ষেপ।
আমেরিকা থেকে ‘উপার্জিত’ টাকায় ভারতের বিভিন্ন জায়গায় আধিকারিকদের ‘ঘুষ’ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল গৌতম, সাগর আদানি ও তাঁদের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এফসিপিএ আইনে আমেরিকায় দায়ের হয়েছিল মামলা। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন আদানি কর্তা। তাই ট্রাম্পের নয়া নির্দেশে হয়তো স্বস্তি পেতে চলেছেন আদানি-কর্তা।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত ঘুষকাণ্ডে অভিযুক্ত শিল্পপতি গৌতম আদানির বিরুদ্ধে একই সঙ্গে দেওয়ানি এবং ফৌজদারি মামলা চলছে আমেরিকায়। এ সংক্রান্ত তিনটি মামলার বিচারের দায়িত্ব পেয়েছেন ডিস্ট্রিক্ট জজ নিকোলাস জি গারাফিস।
অভিযোগ, বাজারের চেয়ে বেশি দামে সৌরবিদ্যুৎ বিক্রির বরাত পেতে অন্ধ্রপ্রদেশ-সহ ভারতের কয়েকটি রাজ্যের সরকারি আধিকারিকদের (যার মধ্যে মন্ত্রী, জনপ্রতিনিধিরাও রয়েছেন) ঘুষ দিয়েছিল গৌতমের মালিকানাধীন ‘আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেড’ (এজিএল)। ঘুষের অঙ্ক ২৬.৫ কোটি ডলার (২০২৯ কোটি টাকা)। তিনটি অভিযোগের ভিত্তিতে আমেরিকার ন্যায়বিচার দফতর এবং বাজার নিয়ন্ত্রক এসইসি সংস্থা এসইসি (সিকিউরিটিজ় অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন) যথাক্রমে ফৌজদারি ও দেওয়ানি আইনে অভিযোগপত্র পেশ করেছিল।
ফৌজদারি অভিযোগগুলির মধ্যে রয়েছে ১৯৭৭ সালে চালু হওয়া আমেরিকার ঘুষ-বিরোধী আইন ‘ফরেন কোরাপ্ট প্র্যাক্টিসেস আ্যাক্ট’ (এফসিপিএ) লঙ্ঘনের পাশাপাশি সিকিয়োরিটিজ় (শেয়ার এবং ঋণপত্র) সংক্রান্ত এবং ওয়্যার (টেলিফোন-সহ বৈদ্যুতিন যোগাযোগ মাধ্যম) ব্যবহার করে প্রতারণার ষড়যন্ত্র। দেওয়ানি আইনেও অভিযোগ আনা হয়েছে শেয়ার এবং ঋণপত্রের বাজারের নিয়ম লঙ্ঘন সংক্রান্ত প্রতারণার।