সপ্তাহান্তের ব্যস্ত বিমানবন্দর। নিশ্চিন্তেই নিরাপত্তা বলয় টপকে ভিতরে ঢুকছিলেন যাত্রীরা। হঠাত্ই বদলে গেল চেনা ছবিটা। ছুটোছুটি, হুড়োহুড়ির চোটে কেউ ঢুকে পড়ছেন শৌচাগারে, তো কেউ আবার নিজেকে আড়াল করছেন আসবাবের পিছনে। সেই সঙ্গেই কানফাটানো চিত্কার আর গুলির শব্দ।
ঘটনাস্থল নিউ অর্লিয়েন্সের লুই আর্মস্ট্রং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। শুক্রবার রাত আটটার কিছু আগে যাত্রীদের ভিড়ে মিশে ঢুকে পড়েন এক ট্যাক্সিচালক। পকেট থেকে কীটনাশক স্প্রে বার করে সোজা ছিটিয়ে দেন এক নিরাপত্তা কর্মীর মুখে। আশপাশে যাঁরা ছিলেন, বাদ যাননি কেউই। কিছু ক্ষণ এই তাণ্ডবের পর বড় একটা ছুরি বার করে মাথার উপর তুলে ঘোরাতে শুরু করেন ওই ট্যাক্সিচালক।
হাতের সামনে পড়ে ছিল এক যাত্রীর স্যুটকেস। উপায় না দেখে নিজেকে বাঁচাতে সেটাই মুখের সামনে তুলে ধরেছিলেন এক রক্ষী। এই দেখে আক্রমণকারীর রাগ বেড়ে যায় আরও। ওই কর্মীকে ধাওয়া করে মেটাল ডিটেক্টরের দরজা পেরিয়ে বিমানবন্দরের একেবারে ভিতরে ঢুকে পড়েন তিনি।
অস্বাভাবিক কিছু যে একটা হয়েছে, তত ক্ষণে মালুম হয়েছে যাত্রীদেরও। জঙ্গি হামলার ভয়ে যে যে দিকে পারছেন, ছুটছেন উর্ধ্বশ্বাসে। শেষে ওই ট্যাক্সিচালককে হাতের নাগালে পেয়ে গুলি চালান বিমানবন্দরেরই এক কর্মী। তাঁর মুখে, বুকে আর পায়ে গুলি লেগেছে। অস্ত্রোপচারের পর অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। হুড়োহুড়ির মধ্যে গুলি লাগে বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক অফিসারের গায়েও। তবে তাঁর ক্ষত গুরুতর নয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, আক্রমণকারীর নাম রিচার্ড হোয়াইট। বছর তেষট্টির ওই ট্যাক্সিচালকের বাড়ি বিমানবন্দরের কাছেই। এর আগে বড়সড় কোনও অপরাধে তাঁর নাম জড়ায়নি। কাল রাতে তিনি কেন এমন কাণ্ড ঘটালেন, তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয়। রিচার্ডের পরিবারকে জেরা করছে পুলিশ।
চারিদিকে তুমুল হইহট্টগোল। কেউ চিত্কার করে কাঁদছেন। অনেকে আবার তড়িঘড়ি শুয়ে পড়ছেন মাটিতে। শৌচাগার থেকে বেরিয়ে প্রথমে চমকে গিয়েছিলেন এরা স্টকম্যান। পরে নজরে আসে, রক্তের স্রোতের মধ্যে শুয়ে আছেন এক ব্যক্তি। আর তার মাথার কাছে পড়ে বড় একটা ছুরি। পরে পুরো ঘটনার কথা তিনি শুনেছেন বাকিদের মুখ থেকে।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, অল্প সময়ের জন্য হুলস্থূল বেধে গেলেও যাত্রীদের ক্ষতি হয়নি। বিমান ওঠা-নামাও করেছে নির্দিষ্ট সময়মতো।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy