Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Volodymyr Zelenskyy

জ়েলেনস্কির ১০ শান্তিসূত্র চাপ বাড়াল দিল্লির

দশ দফা শান্তি-সূত্রের উল্লেখ করে জ়েলেনস্কি মোদীকে অনুরোধ করেছেন, জি-২০ মঞ্চকে ব্যবহার করে তা বাস্তবায়িত করার জন্য। মোদীও জানিয়েছেন, তিনি শান্তির পক্ষে।

 দশ দফা শান্তি-সূত্রের উল্লেখ করে জ়েলেনস্কি মোদীকে অনুরোধ করেছেন, জি-২০ মঞ্চকে ব্যবহার করে তা বাস্তবায়িত করার জন্য।

দশ দফা শান্তি-সূত্রের উল্লেখ করে জ়েলেনস্কি মোদীকে অনুরোধ করেছেন, জি-২০ মঞ্চকে ব্যবহার করে তা বাস্তবায়িত করার জন্য। —ফাইল ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:১৫
Share: Save:

শেষ হয়ে আসা বছরটি জুড়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে ভারসাম্যের কূটনীতি সফলভাবে ধরে রাখতে পেরেছে মোদী সরকার। এরপর তেইশে জি-২০-র বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত বিষয়গুলিতে সমন্বয়ে নেতৃত্ব দিতে হবে ভারতকে। সে ক্ষেত্রে গা-বাঁচানো কূটনীতির পথে হাঁটলে চলবে না। আর সেই নেতৃত্বের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বিষয় হয়ে দাঁড়াবে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে বড় ভূমিকা নেওয়া। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি গতকাল ভারতের কোর্টে বল ঠেলে এই কাজটিকে আরও কঠিন করে দিলেন বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।

সূত্রের খবর, দশ দফা শান্তি-সূত্রের উল্লেখ করে জ়েলেনস্কি মোদীকে অনুরোধ করেছেন, জি-২০ মঞ্চকে ব্যবহার করে তা বাস্তবায়িত করার জন্য। মোদীও জানিয়েছেন, তিনি শান্তির পক্ষে। কিন্তু মুখে পুতিনকে যুদ্ধবিরোধী বাক্য বলা (‘এ যুদ্ধের সময় নয়’) এক বিষয়। আর এই দশ দফায় রাশিয়াকে রাজি করানো সম্পূর্ণ অন্য বিষয়।

কী রয়েছে এই শান্তি-সুত্রে? পরমাণু অস্ত্র এবং বিকিরণের প্রশ্নে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা, খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা, যুদ্ধবন্দিদের মুক্তি, ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে মান্যতা দেওয়া, ইউক্রেনের জমি থেকে রাশিয়ার সেনার পূর্ণ প্রত্যাবর্তন, যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি, দু’দেশের মধ্যে শান্তি চুক্তি।

কূটনৈতিক মহলের মতে, প্রত্যেকটি বিষয়ই স্পর্শকাতর এবং জটিল। রাশিয়ার উপর নয়াদিল্লির কিছুটা প্রভাব এবং দরকষাকষির মতো পরিস্থিতি রয়েছে ঠিকই। ভারতের বিরাট বাজার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, অস্ত্র এবং জ্বালানি রফতানির জন্য আকর্ষণীয়। বিশেষত পশ্চিমের আর্থিক নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে ভারত যে ভাবে এখনও মস্কো থেকে অশোধিত তেল আমদানি করে চলেছে, তাতে রাশিয়ার নয়াদিল্লি–নির্ভরতা সম্প্রতি আরও বেড়েছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে প্রকাশ্যেই মোদীর প্রশংসা করতেও শোনা গিয়েছে। ডিসেম্বরেই দুই নেতার মধ্যে টেলিফোনে কথাহয়েছে ভূকৌশলগত পরিস্থিতি নিয়ে। তা সত্ত্বেও জ়েলেনস্কি যে সূত্র মোদীকে দিয়েছেন, তাতে মস্কোকে রাজি করানো নয়াদিল্লির পক্ষে একান্তই অসম্ভব। এমনকি এই নিয়ে জি-২০-কে একসুরে বাঁধতেও কতটা সক্ষম হবে ভারত, তা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ থেকে যাচ্ছে।

কূটনৈতিক শিবির বলছে, ঘরের মধ্যে একটি হাতি ঘুরলে তাকে যেমন অদৃশ্য ধরে নিয়ে অন্য কথা তোলা যায় না, তেমনই ইউক্রেন যুদ্ধকে বাদ দিয়ে জি-২০-র বহুপাক্ষিক আলোচনা অসম্ভব। জ্বালানি থেকে খাদ্য সঙ্কট—বিশ্বজোড়া বিভিন্ন সমস্যার মূলে রয়েছে এই দশ মাস ব্যাপী যুদ্ধ। নতুন বছরে ইউক্রেন প্রশ্নে ভারত কী ভাবে পদক্ষেপ করে, এখন সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE