Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

শান্তির আর্জি নিয়ে যুদ্ধ-ডায়েরি কিশোরীর

‘গিভ পিস আ চান্স’! গাজার এক তনয়ার কলমে জন লেননের বিখ্যাত এই গান স্লোগান হয়েছে। পড়শি দেশের আগুনের গোলায় নিজের শহরটাকে ছিন্নভিন্ন হয়ে যেতে দেখেছে ১৬ বছরের ফারহা বেকার। জানলায় বসে তার শহরের মৃত্যু দেখতে দেখতেই ফারহা ঠিক করেছিল, তার চোখ দিয়ে বিশ্বের প্রতিটি মানুষকে দেখাবে এই যুদ্ধ। বোঝাবে অস্ত্রহীনের অসহায়তা। দেখাবে, সারি দিয়ে রাখা শিশুদের রক্তাক্ত মৃতদেহ!

সংবাদ সংস্থা
গাজ়া শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৪ ০৩:০৮
Share: Save:

‘গিভ পিস আ চান্স’! গাজার এক তনয়ার কলমে জন লেননের বিখ্যাত এই গান স্লোগান হয়েছে। পড়শি দেশের আগুনের গোলায় নিজের শহরটাকে ছিন্নভিন্ন হয়ে যেতে দেখেছে ১৬ বছরের ফারহা বেকার। জানলায় বসে তার শহরের মৃত্যু দেখতে দেখতেই ফারহা ঠিক করেছিল, তার চোখ দিয়ে বিশ্বের প্রতিটি মানুষকে দেখাবে এই যুদ্ধ। বোঝাবে অস্ত্রহীনের অসহায়তা। দেখাবে, সারি দিয়ে রাখা শিশুদের রক্তাক্ত মৃতদেহ!

কথা রেখেছে ফারহা। গত কয়েক দিন ধরে টুইটার অ্যাকাউন্টে যুদ্ধের ডায়েরি লিখছে সে। গত ১ অগস্ট তার টুইট, “অ্যাম্বুল্যান্সের শব্দ আর বোমাবর্ষণের সাইরেন কখন, কী ভাবে যে এক হয়ে যাচ্ছে কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছি না।” ফারহার এই উদ্যোগে তার পাশে দাঁড়িয়েছে তামাম বিশ্বের মানুষ। তার যুদ্ধের ডায়েরির পাঠক সংখ্যা ৮০০ থেকে এক লাফে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ৬৬ হাজার। ১৬ বছরের কিশোরীকে টুইটারে সংঘর্ষ শেষের আশ্বাসও দিচ্ছেন অনেকে। কেউ আবার বলছেন, সাবধানে থাকতে। তবে ফারহার আফশোস একটাই শান্তিকে কেউ সুযোগই দিচ্ছে না!

যদিও আজ মিশরের প্রস্তাব মেনে ক্ষণিকের শান্তি ফিরেছে গাজায়। দীর্ঘ টালবাহানার পর আজ সকাল থেকে গাজায় কার্যকর হল মিশরের প্রস্তাবিত ৭২ ঘণ্টার সংঘর্ষ-বিরতি। আপাতত তিন দিনের জন্য ধ্বংস শহরে বন্ধ হল বিস্ফোরণের শব্দ। বিরতি ঘোষণার পরেও গাজার রাস্তাঘাট আজও কার্যত ফাঁকাই ছিল। দোকানপাটও বিশেষ খোলেনি। রাফার একটি ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নেওয়া হামিদ আলজেই বলেন, “শান্তিতে আমাদের বিশ্বাস হারিয়ে গিয়েছে। ভরসা নেই, কখন যে আবার বোমা-গুলি চলতে শুরু করবে কেউ তা বলতে পারে না। বিশ্বাস করতে পারছি না, তিন দিন শহরে বোমা পড়বে না!” তবে বিরতির ঘোষণা শুনেই ত্রাণশিবির থেকে বেরিয়ে পড়েছেন ৫৮ বছরের হাকিমত আট্টা। তাঁর বাবার তৈরি করা বাড়িটা এখন কী অবস্থায় আছে এক বার গিয়ে চোখের দেখা দেখে আসতে চান তিনি। যদি বাড়ির আশপাশে গিয়ে পরিচিত কারও সঙ্গে দেখা হয়ে যাওয়ার লোভটাও ঝেড়ে ফেলতে পারছেন না। ত্রাণশিবিরের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “কাল সকালে বেঁচে থাকব কি না জানি না। আমার বাড়ি, আমার পরিজনেরা সবাইকে এক বার শেষ দেখা দেখতে চাই।”

গাজা সমস্যার স্থায়ী সমাধান খুঁজতে আজ কায়রো পৌঁছেছেন ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইনের প্রতিনিধিরা। আরব লিগের সদস্য এবং মিশর প্রশাসনের মধ্যস্থতায় বৈঠকে বসার কথা তাদের। দু’দেশের অনড় অবস্থান ভেঙে মধ্যপন্থা বের করার এই প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব বান কি মুন। তবে হামাসের নির্বাসিত প্রধান খালেদ মেশাল আজও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, গাজা সীমান্ত থেকে সেনা সরানোর শর্ত না মানলে পিছু হটবে না এই জঙ্গিগোষ্ঠী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE