Advertisement
E-Paper

আফ্রিকায় স্বার্থ নেই: চিনা প্রেসিডেন্ট

বেজিংয়ে শুরু হতে চলেছে আফ্রো-চিন শীর্ষ সম্মেলন। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের প্রধানেরা সেই উপলক্ষে এখন বেজিংয়ে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৫১
আফ্রিকায় তাঁদের অর্থনৈতিক ভূমিকা নিয়ে মুখ খুললেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। ছবি: রয়টার্স।

আফ্রিকায় তাঁদের অর্থনৈতিক ভূমিকা নিয়ে মুখ খুললেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। ছবি: রয়টার্স।

আফ্রিকার দেশগুলিকে ঋণের জালে জড়ানোর অভিযোগ বারবার উঠেছে তাঁর দেশের বিরুদ্ধে। ওই মহাদেশের বিভিন্ন অংশে তাঁরা আধুনিক যুগের উপনিবেশ তৈরি করতে চান, এমনটাও বলা হচ্ছে বিশ্বের নানা প্রান্তের সংবাদমাধ্যমে। অবশেষে আফ্রিকায় তাঁদের অর্থনৈতিক ভূমিকা নিয়ে মুখ খুললেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং। জানালেন, আফ্রিকায় কোনও ‘লোক দেখানো’ প্রকল্পের কাজে হাত দেননি তাঁরা। বেজিংয়ের কোনও ইচ্ছে আফ্রিকার উপর জোর করে চাপাতেও চান না তাঁরা। বরং ওই দেশগুলির আর্থিক-পরিকাঠামোগত উন্নয়নই বেজিংয়ের একমাত্র লক্ষ্য।

বেজিংয়ে শুরু হতে চলেছে আফ্রো-চিন শীর্ষ সম্মেলন। আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের প্রধানেরা সেই উপলক্ষে এখন বেজিংয়ে। দু’দিনের সম্মেলন উপলক্ষে বেজিং পৌঁছেছেন মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাতাহ আল-সিসি, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সাইরিল রামাফোসা, জ়াম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট এডগার লঙ্গুরা। রয়েছেন বিভিন্ন চিনা বাণিজ্যিক সংস্থার শীর্ষ কর্তারাও। সেখানেই আজ চিনফিং বলেছেন, আফ্রিকায় কোনও উপনিবেশ গড়ার ভাবনা তাঁদের নেই। সেখানকার দেশগুলির অভ্যন্তরীণ ও রাজনৈতিক বিষয়েও চিন নাক গলাতে চায় না। তবে দরিদ্রতম যে সব দেশে চিনের প্রকল্প রয়েছে, তার একমাত্র লক্ষ্য সেই দেশগুলির আর্থ-সামাজিক মানোন্নয়ন। এর বাইরে চিনের কোনও স্বার্থসিদ্ধি হচ্ছে না সেখানে।

চিনফিং আজ জানিয়েছেন, আফ্রিকাকে ছ’হাজার কোটি ডলার আর্থিক অনুদান দেবে বেজিং। ২০১৫ সালে আফ্রিকার দেশগুলিকে একই পরিমাণ ঋণের প্রস্তাব দিয়েছিল বেজিং। আর ২০০০ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত আফ্রিকাকে দেওয়া ঋণের পরিমাণ প্রায় বারো হাজার ছ’শো কোটি ডলার। চিনফিংয়ের আজকের অনুদান ঘোষণায় তাই ভ্রু কুঁচকেছে বিশ্বের অনেক শক্তিশালী দেশেরই। পশ্চিমী দেশগুলি তো বটেই, চিনের পড়শি ভারতেরও দীর্ঘদিনের অভিযোগ, অর্থের প্রলোভন দেখিয়েই আফ্রিকায় ধীরে ধীরে অন্য সব দেশের জমি কেড়ে নিচ্ছে চিন। চিনফিং‌ অবশ্য সে সব সমালোচনায় আমল দিতে রাজি নন। বরং তিনি চিনা বাণিজ্যিক সংস্থাগুলিকে বলেছেন, যাঁরা ওই সব দেশে নিজেদের প্রকল্প গড়ে তুলছেন, তাঁরা যেন সেখানকার স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস ও ভাবাবেগকে মর্যাদা দেন।

একই ভাবে প্রশ্ন উঠছে চিনের ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড (ওবর) প্রকল্প নিয়েও। বিশ্ব জুড়ে রেললাইন, রাস্তা, বন্দর তৈরির চিনা মহাপ্রকল্পে যে যে দেশ অংশ নিচ্ছে, তাদের অনেকেই ঋণের জালে জড়িয়ে পড়ছে বলে সম্প্রতি খবর মিলেছে। ঋণ মেটাতে না পেরে একটি কৌশলগত ভাবে গুরুত্বপূর্ণ বন্দর ৯৯ বছরের জন্য বেজিংকে লিজ দিয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকার। কপালে ভাঁজ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানেরও।

ঠিক এই কারণেই গত মাসে চিন সফরে এসে ২২০০ কোটি ডলারের চিনা প্রকল্প বাতিলের ঘোষণা করেছেন
মালয়েশীয় প্রেসিডেন্ট মহাথির মহম্মদ। সেই সঙ্গে নয়া ঔপনিবেশবাদ নিয়ে বেজিংকে সতর্কও করে গিয়েছেন তিনি। চিনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে সচেতন আফ্রিকার রাষ্ট্রপ্রধানেরাও। তবে তাঁদের মহাদেশে চিনা অর্থনৈতিক হস্তক্ষেপকে সমর্থনই করছেন বেশির ভাগ রাষ্ট্রনেতা। এই মুহূর্তে আফ্রিকান ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট রুয়ান্ডার রাষ্ট্রপ্রধান পল কাগামে-ও ঋণের প্রলোভনের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে আফ্রিকার দেশগুলির সংবাদমাধ্যম বিষয়টি নিয়ে সরব। কেনিয়ার এক প্রথম সারির দৈনিকে লেখা হয়েছে, ‘‘আফ্রিকার নেতাদের চিনের সঙ্গে এই বিশেষ সম্পর্কের আসল কারণ খতিয়ে দেখার সময় চলে এসেছে।’’

Xi Jinping China চিন শি চিনফিং
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy