Advertisement
E-Paper

আজব আইন কাতারে! ধর্ষণের অভিযোগ করে নিজেই জেলে ডাচ তরুণী

নেদারল্যান্ডস থেকে কাতারে চাকরি করতে গিয়েছিলেন লরা (নাম পরিবর্তিত)। ২২ বছরের তরুণী নাইট ক্লাবে গিয়ে ধর্ষকের খপ্পরে পড়েন। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর পর তাঁকেই গ্রেফতার করা হল। তিন মাস জেলও খাটা হয়ে গিয়েছে ডাচ তরুণীর। ধর্ষিতা এবং ধর্ষক দু’জনকেই কাতারের ইসলামি আদালত কারাদণ্ড দিয়েছে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৬ ০০:৩৮

নেদারল্যান্ডস থেকে কাতারে চাকরি করতে গিয়েছিলেন লরা (নাম পরিবর্তিত)। ২২ বছরের তরুণী নাইট ক্লাবে গিয়ে ধর্ষকের খপ্পরে পড়েন। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর পর তাঁকেই গ্রেফতার করা হল। তিন মাস জেলও খাটা হয়ে গিয়েছে ডাচ তরুণীর। ধর্ষিতা এবং ধর্ষক দু’জনকেই কাতারের ‘ইসলামি’ আদালত কারাদণ্ড দিয়েছে।

ডাচ তরুণীর কৌঁসুলি জানিয়েছেন, কর্মসূত্রে কাতারের রাজধানী দোহাতেই থাকতেন লরা। এক সন্ধ্যায় নাইট ক্লাবে মদ্যপানের পর তিনি হঠাৎ অসুস্থ বোধ করতে থাকেন। তার পর জ্ঞান হারান। যখন জ্ঞান ফেরে, তখন লরা আবিষ্কার করেন, তিনি কোনও এক অপরিচিত অ্যাপার্টমেন্টে রয়েছেন এবং তাঁর জামাকাপড় ছেঁড়া। লরা বুঝতে পারেন তিনি ধর্ষিতা হয়েছেন এবং পুলিশে অভিযোগ জানান।

এক সিরীয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে তিনি ধর্ষণের অভিযোগ জানান দোহারই একটি থানায়। নাইট ক্লাবে মদ্যপানের সময় অসতর্ক হওয়ার সুযোগ নিয়ে তাঁর পানীয়ের গ্লাসে ওই সিরীয় ব্যক্তি কিছু মিশিয়ে দিয়েছিল বলে অভিযোগ করেন লরা। তার পর অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে তাঁকে অ্যাপার্টমেন্টে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে লরা জানান। এই অভিযোগ পেয়ে দোহার পুলিশ ওই সিরীয় ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে ঠিকই। কিন্তু লরাকেও গ্রেফতার করে নেওয়া হয়। কারণ ইসলামি শাসনে থাকা কাতারে, বিবাহ বহির্ভূত যৌন সম্পর্ক শাস্তিযোগ্য অপরাধ। লরাকে সেই অভিযোগেই দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

যে স্থানে মদ খাওয়ার অনুমতি নেই, সেখানে মদ খাওয়ার অপরাধেও দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে লরাকে। তাঁর আইনজীবীর দাবি, তিনি নাইট ক্লাবে মদ্যপান করেছিলেন, অন্যত্র নয়। কিন্তু কাতারের আদালত গত তিন মাস লরাকে কারাবন্দি রেখে যে বিচার করেছে, তাতে সাব্যস্ত করা হয়েছে যে লরা নাইট ক্লাবের বাইরেও মদ্যপান করেছেন এবং সেচ্ছায় বিবাহ বহির্ভূত সহবাসে লিপ্ত হয়েছেন।

আরও পড়ুন:

লজ্জা, ভয়

যে সিরীয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, তার বিরুদ্ধেও ওই দুই অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে। সঙ্গে আরও একটি ধারা যোগ হয়েছে। ইসলামে মদ্যপান নিষিদ্ধ। মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও ওই সিরীয় ব্যক্তি মদ্যপান করেছে, এই অপরাধেও তার শাস্তি হচ্ছে।

লরা গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই দোহার ডাচ দূতাবাস তাঁর সঙ্গে এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ রাখছিল। লরার জন্য সব রকমের আইনি সহায়তার ব্যবস্থাও করে দূতাবাস। তবে ধর্ষিতা হওয়া সত্ত্বেও লরাকেই অপরাধী সাব্যস্ত করা লরার আইনজীবী রুখতে পারেননি। লরাকে অবশ্য কাতারে জেল খাটতে হবে না। সোমবার তাঁর কারাদণ্ড ঘোষিত হয়েছে। কিন্তু এক সপ্তাহের মধ্যেই কাতার থেকে লরাকে তাঁর নিজের দেশ নেদারল্যান্ডসে ফেরত পাঠানো হবে। কাতারের আদালত চায়, সেখানে গিয়ে লরা কারাদণ্ড ভোগ করুক। কিন্তু নেদারল্যান্ডসের আইনে লরার কোনও শাস্তিই হওয়ার কথা নয়। তাই দেশের ফেরার পর লরাকে কী করতে হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

Qatar Rape Allegation Dutch Woman Raped woman Imprisoned
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy