Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

হোয়াইট হাউস থেকে ঘাড়ধাক্কা অপছন্দের মিডিয়াকে

সাংবাদিক বৈঠকে ব্রাত্য সাংবাদিকরাই! সমালোচনা সইতে না পেরে ফের সংবাদমাধ্যমকেই নিশানা করে বসল ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। প্রেসিডেন্টের তরফে ‘গণশত্রু’ তকমা জুটেছিল আগেই। এ বার কার্যত ঘাড়ধাক্কা দিয়ে হোয়াইট হাউস থেকে বের করে দেওয়া হল সাংবাদিকদের।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:৪৩
Share: Save:

সাংবাদিক বৈঠকে ব্রাত্য সাংবাদিকরাই! সমালোচনা সইতে না পেরে ফের সংবাদমাধ্যমকেই নিশানা করে বসল ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। প্রেসিডেন্টের তরফে ‘গণশত্রু’ তকমা জুটেছিল আগেই। এ বার কার্যত ঘাড়ধাক্কা দিয়ে হোয়াইট হাউস থেকে বের করে দেওয়া হল সাংবাদিকদের।

গত কাল সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিলেন হোয়াইট হাউসের মিডিয়া সচিব শন স্পাইসার। ব্রিফিং রুমে ঢোকার অপেক্ষায় হোয়াইট হাউসে তখন দেশ-বিদেশের তাবড় মিডিয়া প্রতিনিধিদের ভিড়। হঠাৎ ফাটল বোমা। ব্রিফিং রুমের বদলে নিজের ঘরে বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেন স্পাইসার। এ বার পুরোটাই অফ-ক্যামেরা! আর তাতে ‘তালিকায় নাম নেই’ বলে ঢুকতেই দেওয়া হল না নিউ ইয়র্ক টাইমস, সিএনএন, লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস, পলিটিকো, গার্ডিয়ান, বিবিসি-র মতো সংবাদমাধ্যমকে।

কীসের তালিকা? হোয়াইট হাউস থেকে বেরিয়ে যাওয়ার মুখে ক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা জানালেন— প্রেসিডেন্ট নিজেই একটা অপছন্দের তালিকা বানিয়ে রেখেছেন! হোয়াইট হাউসের অবশ্য যুক্তি, অপ্রয়োজনীয় ভিড় আটকাতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রয়টার্স, ব্লুমবার্গ, ফক্স নিউজ, ব্রেইটবার্ট নিউজ, এনবিসি-র মতো দশটি বাছাই করা সংবাদমাধ্যমকে শুধু ঢুকতে দেওয়া হয়। অভিযোগ, এদের প্রত্যেকটিই নাকি ট্রাম্প-প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ। কিন্তু তাদেরও ছবি বা ভিডিও তুলতে দেওয়া হয়নি! খাতায়-কলমেই বৈঠক সেরে বেরিয়ে ওই দশটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা জানান, আবারও ঝেড়েবেছে তুলোধোনা করা হয়েছে সংবাদমাধ্যমেকেই।

আরও পড়ুন: অস্ত্র, আরও অস্ত্র, আরও আরও অস্ত্র চান ট্রাম্প!

যার জেরে আজ ফের চ়ড়েছে পারদ। নিউ ইয়র্ক টাইমসের কার্যনির্বাহী সম্পাদক ডিন ব্যাকেট বলেন, ‘‘আমাদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় এমন ঘটনা আগে কখনও দেখিনি।’’ ‘অপ্রিয় সত্যি’ খবরের জেরেই এমন প্রতিহিংসামূলক আচরণ বলে দাবি করেছে সিএনএন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের তীব্র নিন্দা করে প্রতিবাদে সামিল হয়েছে হোয়াইট হাউস করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনও।

বৈঠকের পরে শন স্পাইসার সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমরা আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছি কি না, সেটাই বিবেচ্য। তার মানে এই নয় যে, সব কথা অন-ক্যামেরা আর সবার সামনে বলতে হবে।’’ তাঁর দাবি, হোয়াইট হাউসের নিজস্ব মিডিয়া পুল রয়েছে। বাকিরা তথ্য পাবেন এই পুল থেকেই। একটি টেলিভিশন নেটওয়ার্ক এবং প্রিন্ট আউটলেট থেকে এক জন করে প্রতিনিধি নিয়ে এই মিডিয়া পুল। কিন্তু বৈঠকে তো দশটি সংবাদমাধ্যমকে ঢুকতে দেওয়া হয়েছিল! কীসের ভিত্তিতে এই আলাদা তালিকা? উত্তর মেলেনি হোয়াইট হাউসের তরফে।

ক্ষমতায় আসার দু’দিনের মাথায় এই হোয়াইট হাউস থেকেই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন প্রেসি়ডেন্ট ট্রাম্প। তবে স্পাইসারের বিতর্কিত সাংবাদিক বৈঠক নিয়ে এখনও সরাসরি মুখ খোলেননি ট্রাম্প। তবে তিনি যে সংবাদমাধ্যমের একাংশের উপর খাপ্পা, তা ফের বুঝিয়ে দিয়েছেন। গত কালই কনজারভেটিভ পলিটিক্যাল অ্যাকশন কনফারেন্সে তিনি বলেন, ‘‘মিডিয়াকে আমি আজও গণশত্রুই বলব। আমি সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে নই। আমার আপত্তি ভুয়ো খবরে। ‘সূত্রের খবর’ বলে যেন একটা গুজব ছড়িয়ে দিলেই হল!

বুকের পাটা থাকলে খবরের সত্যতা প্রমাণ করুন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

White house Media
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE