Advertisement
E-Paper

ইমরানের পাশে পাক সেনা, চিন্তা গণতন্ত্র নিয়েই

পাকিস্তানের অধিকাংশ নির্বাচনী সংস্থা, এমনকি ‘ডন’ পত্রিকাও বলছে ইমরান এগিয়ে! তবে পাক পঞ্জাব প্রদেশে আসন সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ইমরান নিজে পঞ্জাবের হলেও বুথ স্তরে এখনও সেখানে নওয়াজ়ের জনপ্রিয়তা বেশি বলে মনে করছে নির্বাচনী সমীক্ষক সংস্থাগুলি|

জয়ন্ত ঘোষাল

শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৮ ০২:৩৫
ইমরানের দল কি পাকিস্তানের গদি দখল করতে পারবে? ছবি: এএফপি।

ইমরানের দল কি পাকিস্তানের গদি দখল করতে পারবে? ছবি: এএফপি।

ইমরান খান ক্যাপ্টেন হিসেবে তাঁর দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে পারবেন কি? পাকিস্তানের ২১ কোটি মানুষ বুধবার সেটাই স্থির করবেন।

দ্বিতীয় এই ইনিংস রাজনীতির| এত দিন ছিল নওয়াজ় শরিফের দল পিএমএল-এন আর অন্য দিকে বেনজির ভুট্টোর পিপিপি! কাল তৃতীয় শক্তি হিসেবে ইমরানের পিটিআই (পাকিস্তান তেহরিক-এ-ইনসাফ) প্রধান শক্তি হয়ে গদি দখল করবে কি না সেটাই দেখার|

পাকিস্তানের অধিকাংশ নির্বাচনী সংস্থা, এমনকি ‘ডন’ পত্রিকাও বলছে ইমরান এগিয়ে! তবে পাক পঞ্জাব প্রদেশে আসন সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ইমরান নিজে পঞ্জাবের হলেও বুথ স্তরে এখনও সেখানে নওয়াজ়ের জনপ্রিয়তা বেশি বলে মনে করছে নির্বাচনী সমীক্ষক সংস্থাগুলি|

ইমরান ইতিমধ্যে উগ্র ভারত-বিরোধী লাইন নিয়েছেন। তিনি বলছেন, ‘‘মোদী আপনি স্পষ্ট শুনে নিন, সব পাকিস্তানি কিন্তু নওয়াজ় শরিফ নয়। আমরা একত্রিত হয়ে সেনার পাশে দাঁড়াই|’’

ইমরানের প্রাক্তন স্ত্রী রেহাম খানের বইতে যৌন ব্যভিচার শুধু নয়, ইমরানকে মাদকাসক্ত বলেও দাবি করা হয়েছে। শেষ বেলার নির্বাচনী প্রচারে নওয়াজ়ের দল বলছে, এক জন মাদকাসক্তকে গদিতে বসিয়ে পাকিস্তানের গণতন্ত্রকে হত্যা করবেন না! নওয়াজ় কন্যাকে নিয়ে জেলে থাকলেও তাঁর ভাই শাহবাজ় শরিফ ভোটে লড়ছেন। তিনি পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। তিনিই ইমরানের প্রধান প্রতিপক্ষ। বেনজ়িরের স্বামী আসিফ আলি জ়ারদারি আর পুত্র বিলাবলও প্রার্থী হয়েছেন। তবে এখন তাঁদের দলের পক্ষে সমর্থনের হাওয়া অতীত মাত্র।

পাকিস্তানে ১৯৭০ সাল থেকে সাধারণ নির্বাচন শুরু হলেও আজও সেখানে গণতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করে সেনাবাহিনী। মোদী সরকার মনে করছে, এ বার ইমরান সেনার হাতের পুতুল। পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে আমেরিকা যতটা সময় দেয়, চিন সময় দেয় তার চেয়ে অনেক বেশি। পাক সেনাবাহিনীর সঙ্গে চিন ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখে। দু’দিন আগেই চিনা বিদেশমন্ত্রী পাকিস্তানে গিয়ে চিন-পাক আর্থিক করিডর নিয়ে কথা বলে এলেন।

ইমরান ক্ষমতায় এলে আরও ভারত-বিরোধী হবেন কি না, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তু চিন-পাক সখ্য ভারতের উদ্বেগের কারণ বরাবরই। প্রাক্তন ভারতীয় গোয়েন্দা প্রধান শ্যামল দত্ত বলেন, ‘‘ভারত আন্তরিক ভাবে আশা করছে, ভোটে আর যা-ই হোক, পাকিস্তানের সচেতন মানুষ গণতন্ত্রকে যেন আইসিইউ-এ পাঠিয়ে না দেন।’’ পাকিস্তানে মধ্যবিত্ত জনসংখ্যা শতকরা ছ’ভাগ। নওয়াজ়কে জেলে পাঠানো থেকে দরকারে নির্বাচন রদ করা, সবটাই সেনার নিয়ন্ত্রণে।

ভোটের হাওয়া সন্ধের মধ্যে জানা গেলেও পাক সরকার ফল ঘোষণা করবে বৃহস্পতিবার সকালে। কেন? ভারতীয় গোয়েন্দাদের সন্দেহ, সেনা-আইএসআই-মোল্লাতন্ত্র কারচুপি করবে না তো? বোমা বিস্ফোরণের শঙ্কায় প্রায় চার লাখ সেনা মোতায়েন হচ্ছে। সেটাও চিন্তার কারণ। কোনও ভারতীয় সাংবাদিককে নির্বাচন কভার করার জন্য ভিসাও দেওয়া হল না!

কূটনীতিক বিবেক কাটজু বলছেন, হাফিজ় সইদ নিজে না লড়লেও তাঁর ‘আল্লাহু আকবর’ পার্টির হয়ে লড়ছেন ছেলে তালহা। আরও ৭৯ প্রার্থীকে দাঁড় করিয়েছেন জাতীয় পরিষদের জন্য। ১৮১ জনকে চারটি প্রদেশের নির্বাচনের জন্য। এমনকি রাষ্ট্রপুঞ্জ-চিহ্নিত সন্ত্রাসবাদী ওয়ালিদও প্রার্থী। এর পর আর কী বলার থাকে! তবে বিবেক মনে করেন, ইমরান ক্ষমতায় এলেও মারাত্মক ভারত-বিরোধী লাইন নিতে পারবেন না। প্রাক্তন ‘র’-কর্তা রানা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও মত, সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ ভারতের জন্য ভালও হতে পারে। কারণ সেনাকে অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে ভূমিকা নিতে হলে জেহাদিদের ডানা ছাঁটতে হবে।

Pak Polls Imran Khan Nawaz Sharif PTI Democracy Narendra Modi Pak Army
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy